ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

বিশিষ্টজনদের অভিমত ;###;দলমত নির্বিশেষে জাতীয় এই সমস্যা মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ

বিকল্প নেই ॥ দেশকে বাঁচাতে মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করতেই হবে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১০ জুন ২০১৮

বিকল্প নেই ॥ দেশকে বাঁচাতে মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করতেই হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশকে বাঁচাতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ছাড়া কোন উপায় নেই। তাই সরকারের মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা প্রয়োজন। খানিকটা দেরিতে হলেও সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য সাঁড়াশি অভিযান চালানোর সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। দেশ আরেকটি বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাবে। মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে দেশ মেধাশূন্য হবে না। উপরন্তু ভবিষ্যতে দেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ সব বিষয়ে আরও উন্নতি লাভ করবে। তাই সরকারের উচিত মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা। আর তাতে দলমত নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা করা। অন্যথায় দেশের জন্য ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে। সেই বিপদের হাত থেকে সমাজের উঁচু শ্রেণী থেকে শুরু করে নিম্ন শ্রেণী; কেউ রেহাই পাবে না। পাশাপাশি যুবসমাজ যাতে মাদকের দিকে না ঝুঁকে এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন, আইনের শাসন নিশ্চিত করা, ধারাবাহিক অভিযান অব্যাহত রাখা, মাদক মামলার জন্য বিশেষ আদালত গঠন করে দ্রুত বিচার কার্য সম্পাদন করা, পারিবারিক বন্ধন আরও সুদৃঢ় করা, প্রচার চালানো, মাদকের বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদের মতো সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা, আনন্দ বিনোদনের ব্যবস্থা রাখা, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা, মাদকাসক্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা, আরও নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন করা, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, যেসব সীমান্ত দিয়ে মাদক আসে সেসব সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার, সব রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় এই সমস্যাকে মোকাবেলা করাসহ নানা উদ্যোগ নিতে হবে। শনিবার রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের বিআইআইবিএস (বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ) মিলনায়তনে প্রমিসেস মেডিক্যাল লিমিটেড আয়োজিত ‘মাদকবিরোধী অভিযান ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সরকারী দল, বিরোধী দল, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ এমন মতই প্রকাশ করেছেন। টিভি উপস্থাপক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। তার সার্বিক নির্দেশনায় অভিযান চলছে। পাঁচটি সংস্থার গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক অভিযান চলছে। সামনে অভিযানের তীব্রতা আরও বাড়বে। তারপরও মাদক পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর অন্যতম কারণ, মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাব। মিয়ানমারের নেত্রী আউং সান সুচিও ইয়াবার বিষয়ে তার অপারগতার কথা তার সঙ্গে সাক্ষাতে স্বীকার করেছেন। তাদের দেশেও ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি নানা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলেও সুচির বরাত দিয়ে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকবে তারা সরকারী দলের হলেও ছাড় পাবে না। কক্সবাজারের একরাম হত্যার বিষয়ে তদন্ত চলছে। যারা জড়িত তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে। মাদকবিরোধী অভিযানে আমরা সফলতার দ্বারপ্রান্তে আছি। রোহিঙ্গাদের আসা বন্ধ হওয়ার পর থেকে ইয়াবা আসা অনেক কমে গেছে। নাফ নদীসহ সীমান্তের যেসব পয়েন্ট দিয়ে মাদক আসে সেসব পয়েন্ট সিল করে দেয়া হবে। এক কথায় মাদকবিরোধী সর্বাত্মক অভিযান চলবে। যেখানে মাদক সেখানেই অবৈধ অস্ত্র আর টাকা আর সেখানেই অভিযান চালাতে গেলে বন্দুকযুদ্ধ চলতেই থাকবে। এটিই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হবে না। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযানের নামে কাউকে হত্যা করছে না। এমনকি বিএনপির তরফ থেকে সরকার মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিরোধী দলের ওপর দমনপীড়ন চালানোর যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা একেবারেই ভিত্তিহীন। একদিন তারাও বুঝতে পারবেন, মাদক নামের সর্বগ্রাসী দানব দেশ ও জাতিকে কিভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, সারাদেশের ৬৮টি কারাগারের মধ্যে তিনটি জেলে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে। পর্যায়ক্রমে আরও স্থাপন করা হবে। এসব জেলে ধারণ ক্ষমতা ৩৫ হাজার। অথচ ৮৬ হাজারের বেশি বন্দী রয়েছে। বন্দীদের মধ্যে শতকরা ৪৪ ভাগেরও বেশি বন্দী মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়েছে। অনুষ্ঠানের সভাপতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, মাদক সমাজের সর্বস্তরে পৌঁছে গেছে। গত বছর ৪ কোটি ইয়াবা উদ্ধার হয়। এক লাখ লোককে অভিযুক্ত করে মাদক মামলার চার্জশীট দেয়া হয়। ইনজেকশনের মাধ্যমে নেয়া মাদকের কারণে দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে দেশের ৮৭ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। সারাদেশে মাদকের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে পোস্টার ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ৫০ শয্যার মাদক নিরাময় কেন্দ্রটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। সারাদেশে বেসরকারীভাবে ২৯৯টি মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। আর সরকারীভাবে থাকা দেড় শতাধিক নিরাময় কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবার মান আরও উন্নত করা হচ্ছে। মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ৭০ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। মাদকবিরোধী অভিযান সারাবছর চলবে। বিএনপির সাবেক এমপি মেজর (অব) মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের সময় গোলাগুলিতে মারা যাওয়াটা বেআইনী নয়। অভিযান আরও জোরদার করতে হবে। এক্ষেত্রে গোলাগুলি আরও বেশি হলেও কোন অসুবিধা নেই। কারণ, যারা মাদক ব্যবসায়ী তারা দেশ, সমাজ, পরিবার, জীবন, দেশের মেধা খুন করছে। তারা নিঃসন্দেহে খুনী। এসব খুনী দেশের লাখ লাখ মানুষকে নীরবে হত্যা করছে। এ ধরনের খুনীর বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তারা বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো আবার দেশের মেধাকে খুন করছে। বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বলেন, আমি সরকারের মাদকবিরোধী চলমান অভিযানকে সাধুবাদ জানাই। সরকার দেরিতে হলেও মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযান চালানোর ভাল উদ্যোগ নিয়েছেন। মাদক দেশের বর্তমান জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এই সমস্যা মোকাবেলা করতে সব রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসা উচিত। এতে কারো মান-অভিমান করে বসে থাকার সময় নেই। যারা বসে থাকবেন তারা লোকসান করবেন। সব রাজনৈতিক দলের উচিত মাদকের বিরুদ্ধে সরকারকে সহযোগিতা করা এবং কথা বলা। তিনি সাবধানতার সঙ্গে অভিযান চালানোর পরামর্শ দেন; যাতে কোন নিরপরাধ ব্যক্তির প্রাণ না যায় বা নির্যাতিত না হন। তিনি কক্সবাজারের একরামের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলতেই থাকবে। কে কি বলল, তা না দেখার অনুরোধ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে। সরকারদলীয় সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি নুরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, একজন মাদকাসক্ত বছরে আড়াই লাখ টাকা মাদকের পেছনে ব্যয় করে। প্রতিবছর দেশ থেকে শুধু মিয়ানমারেই মাদক কেনার জন্য পাচার হয়ে যায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১৮ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর তালিকা করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৫০ জনপ্রতিনিধিও রয়েছেন। মাদকাসক্তদের মধ্যে শতকরা ৮৪ ভাগ পুরুষ বাকিরা নারী ও শিশু। আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, মাদকের মামলার সঙ্গে সুপ্রীমকোর্টের মতো উচ্চ আদালতকেও অন্তর্ভুক্ত হতে হয়েছে; যা সত্যিই দুঃখজনক। কারণ, মাদকের সঙ্গে জড়িত অনেক রাঘববোয়াল উচ্চ আদালতে আসছেন জামিন নিতে। ফলে স্বাভাবিক কারণেই উচ্চ আদালতকে এতে সম্পৃক্ত হতে হচ্ছে। সুপ্রীমকোর্ট বর্তমানে মাদক মামলার আসামিদের জামিন বন্ধ করে দিয়েছে। মাদক মামলার আসামিদের জামিনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে থানা পুলিশ থেকে শুরু করে, আইনজীবী, সংশ্লিষ্ট বিচারক সবাই কোন না কোনভাবে জড়িত। দেখা যায়, অনেকে ৫ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হয়। অথচ পুলিশ তাকে ৫০ পিস ইয়াবা নিয়ে গ্রেফতার হয়েছে বলে আদালতে চালান করে দেয়। এরপর কোন কোন আইনজীবী বিচারকের সঙ্গে দফারফা করেন। শেষ পর্যন্ত জামিন হয়ে যায়। বর্তমানে সাড়ে চার হাজার মাদকের স্পর্শকাতর মামলা চলমান আছে। অথচ এত মামলা পরিচালনার জন্য মাদকের কোন আলাদা আদালত নেই। তিনি দ্রুত মাদক মামলার বিচারের জন্য বিশেষ দ্রুত আদালতের দাবি জানান। বেসরকারী নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম ইমদাদুল হক বলেন, অনেক মানবাধিকারকর্মী মাদকবিরোধী চলমান অভিযানের বিষয়ে নেতিবাচক ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তাদের বক্তব্য শুনলে মনে হয়, তারা বিদেশের মদদে এমন বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের বক্তব্য দেয়ার পেছনে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি আছে। তারা অনুমানই করতে পারছেন না, মাদক নামের ভয়াবহ দানব কিভাবে পুরো দেশ, জাতি ও অর্থনীতিকে গিলে খাচ্ছে। যারা মাদক ব্যবসা করে তারা লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করছে। অথচ অভিযানের সময় তারা গোলাগুলিতে মারা গেলে, তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে কিছু কিছু মানবাধিকারকর্মী বিবৃতি দিচ্ছেন। অথচ এই মাদক ব্যবসায়ীরা নীরবে লাখ লাখ মানুষকে, দেশ, জাতিকে, পরিবারকে তিলে তিলে হত্যা করলেও তাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছেন না। তার অর্থ হচ্ছে, এখানে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় আছে। বিবৃতিদাতারা মাদক ব্যবসায়ীদের পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছেন; যা সত্যিই দুঃখজনক। তিনি বলেন, গত বছর মেক্সিকোতে চালানো অভিযানে ১৩ হাজার মাদক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে সেদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাদক ব্যবসায়ীদের গুলি চালিয়ে হত্যা করতে সেদেশের সংসদে আইন পাস হয়েছে। অথচ সে তুলনায় আমাদের দেশে তেমন কিছুই হচ্ছে না। এতেই আমাদের দেশের মানবাধিকারকর্মীরা হতাহত মাদক ব্যবসায়ীদের পক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এমন বিবৃতি মাদক ব্যবসায়ীদের পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসা করার জন্য মদদ যোগাচ্ছে। মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মেহতাব খানম বলেন, পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কি করছে, রাত জাগছে কিনা তা খেয়াল রাখতে হবে। এমন সমস্যা নিয়ে পরিবারের বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। খোলামেলা আলোচনা করতে হবে। মানুষকে হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সাল নাগাদ দেশে ইন্টারনেটে পর্নো ছবি থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে আশঙ্কাজনকহারে মানুষ আসক্ত হয়ে পড়বে। একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি আট মিনিট পর পর একজন মানুষ তার মোবাইল ফোনটি বের করে চেক করেন। অথবা অযথাই টিপেন; যা পুরোপুরি আসক্তির লক্ষণ। প্রাথমিক শিক্ষকদের আরও উচ্চশিক্ষিত এবং স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। মাদক যে একটি ভয়ানক জিনিস, তা ছোটকাল থেকেই শিশুদের মনে গেঁথে দিতে হবে। সাবেক আইজিপি ড. এম এনামুল হক বলেন, মাদক মামলার সংক্ষিপ্ত বিচার ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যবসায়ী নেতা লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, যুব সমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, খেলাধুলা করার মাঠ, সাংস্কৃতিক কর্মকা- বাড়াতে হবে। অন্যথায় যুবসমাজ মাদকের পথে যাবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী বলেন, একদিকে মাদকের চালান আসা বন্ধ করতে হবে। আর দেশের ভেতরে চালাতে হবে অভিযান। তবেই মাদক নিয়ন্ত্রণে আসবে। যেহেতু চাহিদা বেশি, এজন্য মাদক নির্মূল করা কঠিন হবে। তিনি এনার্জি ড্রিংকের বিষয়েও কড়াকড়ি আরোপ করার কথা বলেন। কারণ, এনার্জি ড্রিংকসে প্রায় আট মাত্রার এ্যালকোহল থাকে। অনুষ্ঠানে প্রমিসেস মেডিক্যাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহেদুল ইসলাম হেলাল বলেন, তার দুই ছেলে মাদকাসক্ত হয়েছিল। তিনি তার দুই ছেলেকে দেশে-বিদেশে চিকিৎসা করে ভাল করেন। মাদকসক্ত হওয়ার বিষয়টি মানসিক। পিতামাতার কাছে সময় না পেলে, হাতে টাকাপয়সা থাকলে, অঢেল সময় থাকার কারণে এক সময় সন্তানরা সময় কাটানোর জন্য মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ এ্যান্ড হসপিটালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ী বলা হলে, যারা প্রকৃতপক্ষে ব্যবসায়ী তাদের অপমান করা হয়। এজন্য তিনি মাদকব্যবসায়ীদের পশু বলার অনুরোধ করেন সবাইকে। তিনি বলেন, মাদকের কারবারিরা সরাসরি খুনী। অনুষ্ঠানে সিনিয়র সাংবাদিক ও আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, প্রমিসেস মেডিক্যাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল খাঁন ও মাদকাসক্তি থেকে ফিরে এসে বর্তমানে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া সাদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
×