ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া-নওগাঁ সড়ক বেহাল ॥ চরম ভোগান্তি

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ৫ জুন ২০১৮

বগুড়া-নওগাঁ সড়ক বেহাল ॥ চরম ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ এক শ’ মিটার রাস্তায় খানাখন্দকের জন্য সড়কে দীর্ঘ এক মাইল যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বগুড়া নওগাঁ সড়কে। কখনও বা তা কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে যাচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীসহ সাধারণ মানুষদের। ঈদের আগে ব্যস্ততম এই সড়কে দিন-রাত যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ে ভোগান্তির কারণে লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কটি আঞ্চলিক মহসড়ক হিসেবে চিহ্নিত। যান চলাচলের অধিক্য ও গুরুত্ব বিবেচনায় এটি আঞ্চলিক মহাসড়কের মান উন্নয়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় এনে সংস্কার ও প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। বগুড়া থেকে সান্তাহার পর্যন্ত প্রায় ৪৩ কিলোমিটার রাস্তা দু পাশে ৩ ফুট করে মোট ৬ ফুট প্রশস্ত করা হবে। তবে ব্যস্ততম এই সড়কে বগুড়া সদরের গোদারপাড়া বাজার এলাকায় প্রায় ১ শ’ মিটার রাস্তা গর্তের কারণে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। স্থানীয়রা বলেছেন কয়েক মাস ধরে রাস্তার ওই স্থানে এমন অবস্থার কারণে দুর্ভোগ চললেও গত এক সপ্তাহ অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। বৃষ্টি ও চলাচল উপযোগী করতে ফেলা আবর্জনার কারণে রাস্তার ওই স্থানের অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর সেখানে সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক যানজট। যা ছড়িয়ে পড়ছে রাস্তার দু’পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। মাটি বালু ইটের আবর্জনা ফেলা স্থানে বেকায়দাভাবে মালবাহী ট্রাক আটকে পড়ছে। দিন-রাত মিলিয়ে প্রতিদিন ১৫/২০টি মালবাহী ট্রাক ও অন্য যানবাহন সেখানে আটক পড়ায় সেগুলো সেখান থেকে তুলতে রেকার ব্যবহার করতে হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে সেখানে সার্বক্ষণিক রেকার রাখা হয়েছে রাস্তায় ফেঁসে যাওয়া ট্রাক তোলার জন্য। একবার একটি ট্রাক বা অন্য কোন বাহন সেখানে ফেঁসে গেলে যে জানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তা থাকছে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা। ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। গোদারপাড়া এলাকার মুদি দোকানি শফিকুল ও অটোরিক্সাচালক শাহিনুর ইসলাম জালালেন তারা অত্যন্ত দুরবস্থার ও দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। বাজারের সামনের রাস্তা চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় সৃষ্ট যানজটের কারণে ব্যবসা যেমন হচ্ছে না। তেমনি পথচারীরা কেউ স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারছে না। গত ২/৩ দিনে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ১৫ নং ওয়ার্ডের কমিশনার আমিনুল ইসলাম জানালেন, যানজট কমাতে পুলিশের পাশাপাশি এলাকার লোকজন কাজ করছেন। তিনি জানালেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগকে কয়েক দফা বলা সত্ত্বেও সময়মতো রাস্তাটি মেরামত না করায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারের লোকজন আবর্জনা ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করায় রাস্তার অবস্থা আরও চরম আকার ধারণ করছে। ইট বালুর খোয়া ফেলা হলে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলতে পারতো। রাস্তার ওই স্থানে দায়িত্ব পালনরত সার্জেন্ট গোপাল চন্দ্র ম-ল জানালেন, তিনি সহ ট্রাফিক বিভাগের কয়েকজন যানজট চলাচল ঠিক রাখতে দিন রাতে সেখানে কাজ করছেন। শনিবার ১৫/২০টি যানবাহন খারাপ হয়ে যাওয়া রাস্তার ওপর ফেঁসে গিয়ে আটকা পড়ে। স্থানীয় লোকজন, রেকারসহ সড়ক বিভাগের যন্ত্র দিয়ে সেগুলো সরানো হয়। বগুড়া-নওগাঁ সড়কে রাস্তার বেহাল দশার বিষয়ে সওজ বগুড়া সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম জানান, ওই সড়কে কাজ চলছে। যে স্থানে রাস্তাটি অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে তার বেইজ লেবেলের মাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, সেখানে বালু ও ইট ফেলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এখন সেখানে সোলিং করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কারে ওই মোট ৩টি গ্রুপের কাজ চলছে। খারাপ হয়ে যাওয়া রাস্তার অংশে কাজ করছে এমবিইএল নামে একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানী নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছেন। ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার জানালেন, গত দু’দিন ধরে বৃষ্টির কারণে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় যানজটসহ খারাপ হয়ে যাওয়া রাস্তা জুড়ে যানবাহন আটকা পড়ছে।
×