ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংলাপে থাউং তুন

সব রোহিঙ্গা ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ৩ জুন ২০১৮

সব রোহিঙ্গা ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার

নাজিম মাহমুদ ॥ বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সকল রোহিঙ্গা শরণার্থীকে মিয়ানমার ফিরিয়ে নিতে রাজি। শনিবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক সাংগ্রিলা সংলাপে যোগ দিয়ে মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় ফিরতে চাইলে আমরা তাদের গ্রহণ করতে চাই। খবর ফার্স্ট পোস্ট, স্ক্রল ইন ও ওয়েবসাইটের। জাতিসংঘ কাঠামোর আওতায় রাখাইন রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে দায়িত্বশীলতা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে থাউং তুন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৭ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আমরা ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। ২০০৫ সালে জাতিসংঘে তথাকথিত আরটুপি ফ্রেমওয়ার্ক গ্রহণ করা হয়। ওই বিশ্ব সম্মেলনে গণগত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও জাতিগত নিধন থেকে নিজ নিজ দেশের জনগণকে সুরক্ষা দিতে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। রাখাইন রাজ্যে জাতিগত নিধন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে থাউং তুন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৭ লাখ রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ফিরলে আমরা তাদের গ্রহণ করব। তিনি বলেন, রাখাইনে কোন প্রকার যুদ্ধ হচ্ছে না। ওই রাজ্যে (রাখাইনে) যুদ্ধাপরাধের ঘটনাও ঘটেনি। তাই রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। এ ক্ষেত্রে আমরা সুস্পষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখতে চাই। রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন বিষয়ে তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন বিষয়ে যে সকল খবর পাওয়া যাচ্ছে তা অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর। রাখাইনে মানবিক সঙ্কটের বিষয়ে থাউং তুন বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে মানবিক সঙ্কটের বিষয়টি মিয়ানমার অস্বীকার করছে না। তিনি বলেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে রাখাইনে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তবে রাখাইনে বসবাসরত বৌদ্ধ, হিন্দু ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীও দুর্ভোগে রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, দেশকে রক্ষা করা সেনা সদস্যদের কর্তব্য। তবে তদন্তে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে থাউং তুন উল্লেখ করেন। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর সেখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার। এ অভিযানে সেনাবাহিনীর সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দফায় দফায় মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রত্যাবাসন চুক্তিও। তবে রোহিঙ্গারা কবে ফিরতে পারবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এতদিন মিয়ানমার বলে আসছিল, যেসব রোহিঙ্গা নিজেদের দেশটির বাসিন্দা হিসেবে প্রমাণ দিতে পারবে কেবল তাদেরই ফিরিয়ে নেয়া হবে।
×