ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ

দুর্ধর্ষ গডফাদারসহ ১১ জেলায় ১১ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ২৮ মে ২০১৮

 দুর্ধর্ষ গডফাদারসহ ১১ জেলায় ১১ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে শনিবার রাতে র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১১ জেলায় মোট ১১ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। এরমধ্যে দুর্ধর্ষ গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত টেকনাফ পৌরসভার এক কাউন্সিলর রয়েছে। পুলিশের ভাষ্যমতে, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরে ‘গোলাগুলিতে’ দুই এবং পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, খুলনা, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর ও নোয়াখালীতে একজন করে আট জন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। দৈনিক জনকণ্ঠের জেলা স্টাফ রিপোর্টারদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে এসব উল্লেখ করা হয়েছে। কক্সবাজার ॥ কক্সবাজারের টেকনাফ থানার নোয়াখালীপাড়া এলাকায় র‌্যাব ৭-এর একটি দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তালিকাভুক্ত শীর্ষ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ ও টেকনাফ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাব-৭ কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-২) মেজর রুহুল আমিন বলেন, রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফের নোয়াখালীপাড়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে র‌্যাবের গুলি বিনিময় হয়। পরে সেখান থেকে তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও টেকনাফের ওয়ার্ড কাউন্সিলর একরামুল হকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের একটি দল একরামুলের অবস্থান জানতে পারে। অভিযান শুরু করলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে একদল মাদক ব্যবসায়ী র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তখন র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে র‌্যাব ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়রা মৃতদেহটি টেকনাফ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হকের বলে শনাক্ত করেন। মৃতদেহটি টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ওয়ান শূটারগান, ছয় রাউন্ড গুলি ও গুলির পাঁচটি খালি খোসা উদ্ধার করেছে র‌্যাব। একরামুলের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে ধরার জন্য র‌্যাব শুরু থেকেই খুঁজছিল। চট্টগ্রাম ॥ সীতাকুন্ডে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রায়হান উদ্দিন (২৮) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। শনিবার রাত পৌনে ১টার দিকে উপজেলার নড়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সীতাকুন্ড থানার পরিদর্শক মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানিয়েছেন। একই অভিযানে পুলিশ আরও তিন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান। নিহত রায়হানের গ্রামের বাড়ি একই উপজেলা গোলাবাড়িয়া এলাকায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টহল টিম নড়ালিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযানে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। পরে সেখান থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রায়হানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ হাজার পিস ইয়াবা ও দুটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানে আমাদের তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। নোয়াখালী ॥ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি পৌরসভায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মোঃ হাছান প্রকাশ ওরফে ইয়াবা হাছান (৩৫) নিহত হয়েছে। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র, গুলি ও ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বগাদিয়া ইজতেমা মাঠে এই ঘটনা ঘটে। হাছানের বাড়ি সোনাইমুড়ি পৌরসভার বগাদিয়া এলাকায়। এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন, পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ, জহির মজুমদার ও গোলাম সামদানি। সোনাইমুড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে সোনাইমুড়ি বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াবা হাছানকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী রাতে তাকে নিয়ে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধারের জন্য বগাদিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা হাছানের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়। এতে ইয়াবা হাছান গুলিবিদ্ধ ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাছানকে উদ্ধার করে সোনাইমুড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, ৭ রাউন্ড গুলি, একটি রামদা, তিনটি লম্বা ছেনি, একটি দা ও ১২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, সে একজন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী। তার মৃতদেহ সোনাইমুড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। হাছানের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তিনটিসহ মোট ২১টি মামলা রয়েছে। কুষ্টিয়া ॥ কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে হালিম ম-ল (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে শহরের হাউজিং ‘ডি’ ব্লক মাঠে এ ঘটনা ঘটে। মাদকদ্রব্য বেচাকেনার উদ্দেশে একদল মাদক ব্যবসায়ী শহরের হাউজিং ‘ডি’ ব্লক মাঠে অবস্থান করছে, এমন গোপন সংবাদ পেয়ে মডেল থানা পুলিশের একটি টহল দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে একজন গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় চার পুলিশ সদস্য আহত হন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধে নিহত হালিম শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। ঘটনাস্থল থেকে একটি শূটারগান, একটি পাইপগান, তিন রাউন্ড গুলি ও ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। খুলনা ॥ যশোরের মাদক ব্যবসায়ী আবুল কালাম (৪০) খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর সিদ্দিকপাশা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আনিসুর রহমান বলেন, কালামের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা রয়েছে। অভিযানকালে ১০০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। খুলনা জেলার পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, কালাম মাদকের পাইকারি বিক্রেতা ছিলেন। তার বাড়ি যশোরের অভয়নগর থানার ইছামতি গ্রামে। কালাম বারাকপুর গ্রামে তার ভগ্নিপতি আজাদের বাড়িতে আত্মগোপন করে ছিল। ১০০ পিস ইয়াবাসহ শনিবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাত পৌনে ৩টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নদীর খেয়াঘাট সংলগ্ন শ্মশানঘাটে মাদক উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ পর্যায়ে কালাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি শর্টগান, চারটি ককটেল, এক রাউন্ড রাইফেলের গুলি ও নম্বর প্লেটবিহীন একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার রাত দেড়টার দিকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের বড়দাহ জামতলা রাস্তার পাশে অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ীর লাশটি পড়েছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে গোলাগুলির খবর পেয়ে টহল পুলিশ সেখানে পৌঁছে দেখে রাস্তার পাশে অজ্ঞাত এক মাদক ব্যবসায়ীর লাশ পড়ে আছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শূটারগান, দুই রাউন্ড পিস্তলের গুলি, তিন রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ১০ বোতল ফেন্সিডিল, ৪০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। নিহত মাদক ব্যবসায়ীর নাম-ঠিকানা এখনও পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান। প্রসঙ্গত, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ঝিনাইদহে এ নিয়ে মোট তিনজন নিহত হয়েছে। মেহেরপুর ॥ মেহেরপুরের গাংনীতে দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর গোলাগুলিতে হাফিজুল ইসলাম হাফি (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাত ২টার দিকে উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাথানগাড়ী মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। তার বাড়ি গাংনী ডিগ্রী কলেজ পাড়ায়। গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার জানান, দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর গোলাগুলি চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বাথানগাড়ী মাঠে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় হাফিকে গাংনী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এম কে রেজা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি ওয়ান শূটারগান ও ১১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। হাফির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মাদকের মামলা রয়েছে। সে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিত। সে ভারত থেকে মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে এনে বিক্রি করত। ময়মনসিংহ ॥ ময়মনসিংহ মহানগরীর কেওয়াটখালি মরাখোলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২৫/২৬ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি একজন মাদক ব্যবসায়ী। শনিবার রাত দেড়টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ওই ব্যক্তি নিহত হয়। এ সময় পুলিশের কনস্টেবল হুমায়ুন ও আমির হামজা আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন, ১০০ পিস ইয়াবা, গুলির চারটি খোসা, দুটি রামদা উদ্ধার করা হয়েছে। জানা যায়, শনিবার রাত দেড়টার দিকে মহানগরীর কেওয়াটখালির মরাখোলা এলাকায় কয়েকজন মাদক বিক্রেতা মাদক ভাগাভাগি করছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও কোতোয়ালি থানার পুলিশ যৌথভাবে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীচক্রের সদস্যরা প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পরে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় অজ্ঞাত মাদক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বাগেরহাট ॥ বাগেরহাটের চিতলমারীতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মিতুন বিশ্বাস (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে চিতলমারী উপজেলার চিংগুরি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মিতুনের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে জানিয়েছে পুলিশ। মিতুনের বাড়ি চিতলমারী উপজেলার চিংগুরি গ্রামে। চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুকূল বিশ্বাস জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে মাদক সম্রাট মিতুনকে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের একটি দল মাদক উদ্ধারের জন্য তার বাড়ির দিকে রওনা হয়। এ সময় লুৎফর মিলিটারির বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গায় পৌঁছলে তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে পুলিশের হাত থেকে মিতুন পালিয়ে যায়। গুলি বিনিময়ের একপর্যায়ে মাদক সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে মিতুনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ, একটি শাটারগান, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ছুরি, দুই কেজি গাঁজা ও ১০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২২টি মামলা রয়েছে বলে ওসি জানান। ঠাকুরগাঁও ॥ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রফিকুল ইসলাম তালেবান (৫৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জেলা পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানিয়েছেন। তিনি জানান- রাণীংশকৈল উপজেলার ভৌরনিয়া মীরডাঙ্গী এলাকায় পুলিশ মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম তালেবানের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। তখন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রফিকুল নিহত হয়। রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান জানান, পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানে ওই এলাকায় গেলে একদল মাদক ব্যবসায়ী পুলিশের ওপরে হামলা চালায়। এ সময় বন্দুকযুদ্ধে পুলিশের গুলিতে মাদক ব্যবসায়ী রফিকুল নিহত হয়। এই মাদক ব্যবসায়ীর নামে মাদকদ্রব্য আইনে ২০টির ওপরে মামলা রয়েছে। চাঁদপুর ॥ চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সেলিম (৩৭) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। মতলব পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ঢাকিরগাঁও এলাকায় শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। সেলিমের বাড়ি উপজেলার উপাদী উত্তর ইউনিয়নের উপাদী গ্রামে। পুলিশ জানায়, শনিবার রাত পৌনে ৩টার দিকে মতলব দক্ষিণ থানা ও ডিবি পুলিশের একটি যৌথ দল চাঁদপুরের মতলব সড়কের হাজীর ডোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত মাদক মামলার আসামি সেলিমকে আটক করে। এ সময় সেলিমের সহযোগীরা তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের ওপর গুলি ও হামলা চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে সেলিম গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে মতলব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কুতুবউদ্দিন জানায়, এই ঘটনায় ৪ পুলিশ আহত হয়েছেন। এছাড়া ৪ রাউন্ড গুলি, ৬ রাউন্ড কার্তুজ, ১১০ পিস ইয়াবা, দুটি দেশী অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
×