ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নারীর হৃদয়যাত্রার আখ্যান রুধির রঙ্গিণীর মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৬ মে ২০১৮

নারীর হৃদয়যাত্রার আখ্যান রুধির রঙ্গিণীর মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যে নারী বাঁচতে চায় আপন স্বাধীনতায়, সেই নারীর হৃদয়যাত্রার গল্পময় নাটক রুধিররঙ্গিণী। এই নারী ইতিহাস, বাস্তবতা, পরিপার্শ্ব, ভবিতব্য কিংবা নিয়তির বেষ্টনীকে অস্বীকার করে মনে-প্রাণে ও শরীরে দুর্নিবারভাবে অনুভব করতে চায় নিজের প্রেমকে। শুভাশিষ সিনহা রচিত ও নির্দেশিত প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে নতুন রেপার্টরি নাট্যদল হৃৎমঞ্চ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সেপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে রুধিররঙ্গিণী নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। বাংলা মঞ্চনাটকের তিন প্রজন্মের তিন গুণী অভিনয়শিল্পী রোকেয়া রফিক বেবী, আবুল কালাম আজাদ ও জ্যোতি সিনহা অভিনীত নাটকটি আগামী ১৯ মে পর্যন্ত প্রতিদিন একই মিলনায়তনে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মঞ্চস্থ হবে। সে সঙ্গে ১৮ ও ১৯ মে বিকেল পাঁচটায় নাট্যকর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ মূল্যছাড়ে দুটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। নাটকটি মঞ্চায়নে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি। ঢাকার নাট্যমঞ্চে মঞ্চায়নের আগেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় রুধিররঙ্গিণী। সেই সুবাদে উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে দারুণভাবে দর্শক টেনেছে নতুন নাটকটি। মিলনায়তন পরিপূর্ণ দর্শক নিয়ে যাত্রা শুরু হয় নাটকটির। সেই দর্শককে সঙ্গী করে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। মঞ্চে আবির্ভূত হয় এমন এক নারী, যার জীবনে প্রেম ও পুরুষ উভয়ই ক্ষণস্থায়ী। বিয়ের কয়েকদিন পরেই অপঘাতে মারা যায় তার স্বামী। একবার নয় দু’বার মায়ের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সে ধাবিত হয় নতুন প্রেমের পথে। এ পুরুষ থাকে শঙ্খনদী তীরে, বাঁশি বাজায়। মা মেয়েকে সর্বনাশের কথা বলে ফেরাতেও চায়; কিন্তু নারী এগিয়ে চলে। নিয়তির পরিহাসকে শেষবারের মতো মোকাবেলা করাই তার অভিপ্রায়। জীবনে সে যে কোন পুরুষকেই পুরোটা পায়নি তার শিরায়। পুরুষ তার কাছে যেন প্রাপ্তাতীত কিছু। মায়ের আপ্রাণ বাধা অগ্রাহ্য করে ঘর ছেড়ে বের হয় সে। কিন্তু হায়! ভাগ্যের কি নির্মম খেলা। যার জন্য সবকিছু ছেড়ে আসে মেয়েটি, সে পুরুষ তার চেয়েও ভাগ্যবিড়ম্বিত এবং ওই পুরুষের মাথায় মরণ সমন। অন্তিমে এই নারীকে নতুন করে দুঃসহ এক পরিণামের মুখোমুখি হতে হয়। প্রযোজনাটির রচয়িতা ও নির্দেশক শুভাশিষ সিনহা বলেন, প্রায়শই বলা হয়ে থাকে, আমাদের সমকালীন নাট্যসাহিত্য দুর্বল। রুধিররঙ্গিণী সেই মতকে খারিজ করবে বলেই আশা করা যায়। প্রাচ্যের নারীর মন ও শরীরের স্বাধীনে”চ্ছাকে নানা উছিলায় সমাজ যেভাবে দমন করে তার বিরুদ্ধে এটি একটি উল্টো ব্যাখ্যা বা এন্টিথিসিস। তিনি জানান, ভবিষ্যতেও নাটকটির আরও প্রদর্শনী করার ইচ্ছা রয়েছে। তবে একসঙ্গে একধিক প্রদর্শনী করা হবে। নাটকটির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করল নতুন রেপার্টরি নাট্যদল হৃৎমঞ্চ। দলটির সমন্বয়ক পাভেল রহমান জানান, হৃৎমঞ্চ মূলত হৃদয়ের মঞ্চ। নিজস্ব মাটি ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে আন্তর্জাতিক মানের নাটক মঞ্চে আনবে হৃৎমঞ্চ। নাট্যসাহিত্যের উচ্চমানের দিকটিও আগামী প্রযোজনাগুলো খেয়াল রাখা হবে বলে জানান তিনি। রচনা ও নির্দেশনার পাশাপাশি রুধিররঙ্গিণী নাটকের মঞ্চ-আলো ও সঙ্গীত পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন শুভাশিষ সিনহা। সঙ্গীত আয়োজনে রয়েছেন নির্ঝর চৌধুরী। গীতকণ্ঠে রয়েছেন শর্মিলা সিনহা, নির্ঝর চৌধুরী ও হুমায়ূন আজম রেওয়াজ। মঞ্চ নির্মাণ করেছেন শাহনাজ জাহান, হাসান আলী, সাকিল সিদ্ধার্থ, আসফিকুর রহমান। দৃশ্যসজ্জায় আছেন শাহজাদা স¤্রাট, সউদ, শাহনাজ, হাসান, পারভেজ ও ইমরান। আলোক প্রক্ষেপণে রয়েছেন শাহজাহান মিয়া ও সাকিল সিদ্ধার্থ এবং পোশাক পরিকল্পনা করেছেন জ্যোতি সিনহা ও শাহনাজ জাহান। ঘুড়ি প্রদর্শনীর সমাপ্তি ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারির দেয়ালজুড়ে ঝুলছে রং-বেরংয়ের ঘুড়ি। বাংলাদেশ তো বটেই রয়েছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বর্ণিল সব ঘুড়ি। বিচিত্র রং ও গড়নের এসব ঘুড়ি নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি ও ঢাকাবাসীর আয়োজনে চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীর সূচনা হয় ১২ মে। মঙ্গলবার ছিল এ প্রদর্শনীর শেষ দিন। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে বাংলাদেশ, চায়না, মালয়েশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ঘুড়ি। সেই সঙ্গে ছিল অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পরিচিতিমূলক পোস্টারও।
×