ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনা থেকে প্রত্যাহার

তুরিন আফরোজের গোপন বৈঠকের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১০ মে ২০১৮

তুরিন আফরোজের গোপন বৈঠকের বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ মানবতাবিরোধী এক অপরাধীর সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেছেন বলে যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল সুত্রে এ খবর জানা গেছে। এদিকে এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, তা যদি সত্য হয়, তাহলে আইন মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেছেন এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোন মন্তব্য করব না। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। এদিকে ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, আসামি মেজর (অব) মোহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের ফলে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে সব মামলা পরিচালনা থেকে বিরত রাখার প্রত্যাহারের আদেশ দেয়া হয়েছে। এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বুধবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘অভিযোগ সত্য হলে মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে। আমি তো আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যাই না বা তাদের মামলাও পরিচালনা করি না। এ ব্যাপারে আমার পক্ষে কোন কিছু বলা সম্ভব না।’ ‘প্রসিকিউশন টিম ঢেলে সাজানোর কথা আমি সবসময় বলি। আইনজীবীদের দক্ষতা প্রতিদিনই পরীক্ষার ব্যাপার। আমাকেও প্রতিদিন পরীক্ষা দিতে হয়। এদিকে প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বক্তব্য তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বলেন, আমাকে নিয়ে একটি অতি উৎসাহী দৈনিক পত্রিকায় একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশিত করা হলে সোশ্যাল মিডিয়াতে তা ভাইরাল করে আমাকে নিয়ে নানা কুৎসা রটনা করা হচ্ছে। এটাও বলা হচ্ছে যে আমাকে প্রসিকিউটর পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য : (১) আমি এখনও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদে বহাল আছি। আমাকে কেউ বরখাস্ত করেনি। (২) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে ৮ (২) ধারা অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের একজন প্রসিকিউটরের একজন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেব কাজ করার এখতিয়ার রয়েছে। সুতরাং যে কোন মামলাতে তদন্ত করার এখতিয়ার আমার আছে। আর তদন্ত করতে গেলে নানা রকম কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সুতরাং আমি তদন্তের স্বার্থে যে কোন প্রয়োজনীয় কৌশল গ্রহণ করতে পারি। (৩) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আমি এই পর্যন্ত প্রসিকিউটর হিসেবে যা কিছুই করেছি তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিলেন। (৪) আমাকে নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সত্য নয়। যেহেতু বিষয়টি এখন উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখছেন তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। তদন্ত শেষ হলে আমি আমার বক্তব্য সর্ব সম্মুখে প্রকাশ করব। আশা করি সেই পর্যন্ত আমার শুভাকাক্সক্ষী ও সমালোচকগণ ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন। প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বলেন, ‘গত ৭ মে চীফ প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজকে ওয়াহিদুল হকের সংশ্লিষ্ট মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। তারপর ৮ মে তাকে প্রসিকিউশনের সব দায়-দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। এ বিষয়ে চীফ প্রসিকিউটরের দুটি চিঠি এবং ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা তার যাবতীয় নথি বুধবার সকালে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হককে গত ২৪ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠান। ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান।
×