ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাইয়ে জমির উর্বর মাটি বিক্রির হিড়িক

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ১২ এপ্রিল ২০১৮

মীরসরাইয়ে জমির উর্বর মাটি বিক্রির হিড়িক

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ১১ এপ্রিল ॥ মীরসরাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এমনিতেই ইটের ভাঁটিতে অনেকেই অন্যায়ভাবে কিনে নিয়ে যাচ্ছে জমির টপসয়েল। আবার সম্প্রতি অর্থনৈতিক জোন এলাকায় ব্যাপক আকারে মাটির চাহিদাকে পুঁজি করে সেখানে মাটি সরবরাহের চাহিদাকে কেন্দ্র করে একজনের জমির মাটি অন্যজনে কেটে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি কিছু ভুক্তভোগী উপায়ন্ত না পেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থও হচ্ছে বলে জানা যায়। উপকূলের অর্থনৈতিক জোন সংলগ্ন এলাকা উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের হিরালালনাথ (৫৫) জানায়, স্থানীয় প্রভাবশালী ফারুক ও মনজু সিন্ডিকেট পূর্ব ইছাখালী মৌজায় তার ৪ একর জমিতে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে খবর পেয়ে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে পাল্টা হুমকি দেয়। অতঃপর হিরালাল জোরারগঞ্জ থানায় গত ৬ এপ্রিল অভিযোগ প্রদান করলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই বিষয়ে ঘটনাস্থলের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী পরিদর্শক আমজাদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ করা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে আইনী উদ্যোগ নেয়া হবে। এদিকে শুধু হিরালাল নয় অর্থনৈতিক জোন এলাকায় জমির দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং মাটির চাহিদা ব্যাপক হওয়ায় সেখানে এভাবে আরও অনেকে ভুক্তভোগীও রয়েছে বলে জানা যায়। এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আতাউর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক জোন এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রমে অনেক মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে কোন প্রকার অন্যায় কার্যক্রম আমরা মেনে নেব না। তিনি এই বিষয়ে সকলের আইনানুগ সহযোগিতা প্রার্থনা করেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, জমির টপসয়েল কৃষিজমির প্রাণ। এমনিতেই দিনে দিনে নানান জৈবিক বিক্রিয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। কমছে ফসলের আবাদ। দিনে দিনে হাইব্রিডের দিকে ধাবিত হয়ে মানুষের নতুন নতুন রোগ ব্যাধি সৃষ্টি হচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের ওপর পড়ছে বিরূপ প্রভাব। প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা যায় উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের অন্তত আটটি ইউনিয়ন যথাক্রমে করেরহাট, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, দুর্গাপুর, ওয়াহেদপুর, ইছাখালী, মঘাদিয়া, সাহেরখালি ইউনিয়নে অধিক পরিমাণে টপসয়েল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। একশ্রেণীর ভূমি মালিক ভাটা মালিকদের কাছে নামমাত্র অর্থের বিনিময়ে মাটির উপরিভাগ বিক্রি করে দিচ্ছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রায়পুর, পূর্ব দুর্গাপুর ও করেরহাট এলাকায় বিভিন্ন মাঠে ট্রাক্টর মাটি কেটে ভাটায় পৌঁছে দেয়ার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। জনৈক ট্রাক্টর ও মাটি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন জায়গায় কৃষকের কাছ থেকে ৭ ফুট গর্ত করে একবিঘা জমিতে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে মাটি কেটে ইটভাঁটিতে সরবরাহ করা হয়। প্রতি গাড়ি মাটি ৭০০ টাকা দরে ভাঁটির মালিকদের কাছে বিক্রি করা হয়।
×