ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

শফিকুর রহমান

ত্বকের সমস্যা, সমাধান শসায়

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২ এপ্রিল ২০১৮

ত্বকের সমস্যা, সমাধান শসায়

সারা দিনের ক্লান্তি বয়ে বাড়ি ফিরে ত্বকের যতেœ এটা সেটা করা একটু কঠিনই। সব আশা-ভরসা বিউটি পার্লারের ওপর ছেড়ে দিয়েও নিশ্চিন্ত হওয়া যায় কি? পার্লারের ফেসিয়াল, ব্লিচ ও ফেয়ার পলিশে থাকে নানাবিধ রাসায়নিক উপাদান। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব উপাদানের নেতিবাচক ফলাফল ধরা দিতে থাকে। ব্যস্ততার ফাঁকে নিজের জন্য একটুখানি সময় বরাদ্দ রাখুন। আর বেছে নিন সর্বগুণসমৃদ্ধ যে কোন প্রাকৃতিক উপাদান। তবে সেই প্রাকৃতিক উপাদানটি পেতে ঢুঁ মারতে হবে রেফ্রিজারেটরে। ভিটামিন সি, কে ও বিটা ক্যারোটিনযুক্ত শসা আপনার ত্বকের সব সমস্যার সমাধান করতে একাই ১০০! তেল, দাগ দূরে থাক শসার এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের প্রদাহ নাশ করে। ত্বকের রং হাল্কা করার পাশাপাশি রোমকূপে জমে যাওয়া তেল পরিষ্কার করে। ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে কঁাঁচা হলুদ বাটা, শসার রস ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। স্ক্রাব হিসেবে শসা বাটা, কাঁচা হলুদ বাটা ও মসুর ডাল বাটা একসঙ্গে পেস্ট করে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট পর হাল্কা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। ক্লান্তিহীন চোখ ব্যস্ততা, দুশ্চিন্তা ও পর্যাপ্ত না ঘুমালে চোখের নিচে কালি পড়ে। অনেকের চোখে দেখা দেয় ফোলাভাব। শসায় ঠা া উপাদান তো রয়েছেই, এতে উপস্থিত এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সিলিকা ত্বকের নবযৌবন এনে দেয়। চোখের নিচে কালি ও ফোলাভাব দূর করেতে দুই স্লাইস শসা চোখের ওপর ২০ মিনিট রেখে দিন। এ উপায়ে অল্প দিনের মধ্যে সুফল পাওয়া যাবে। তাছাড়া চোখের ক্লান্তি দূর করতে শসা রস করে ফ্রিজে রেখে দিন। ঠা া হলে তাতে তুলা ভিজিয়ে চোখের ওপর রেখে বিশ্রাম নিন। বাড়বে জেল্লা সুস্থ ও তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের জন্য শুধু শসাই যথেষ্ট। শসার কুলিং প্রপার্টি প্রাকৃতিক টোনার ও এস্ট্রিনজেন্ট হয়ে ত্বকের যতœ নেয়। তৈলাক্ত ত্বকের বাড়তি তেল শুষে নিয়ে বাড়ায় ত্বকের জেল্লা। শসার রস ব্রণের দাগ মুছে দেয়। যেহেতু শসার ৯৫ শতাংশই পানি। তাই ময়েশ্চারাইজিংয়ের কাজটাও সেরে নিতে পারেন শসা দিয়ে। ত্বকের জেল্লা বাড়াতে ও মুখ পরিষ্কার করতে রাসায়নিক উপাদানযুক্ত ফেসওয়াশ বদলে শসার রস লাগান। ৩০ মিনিট রেখে ঠা া পানির ঝাঁপটায় মুখ ধুয়ে ফেলুন। শসার রসের প্রলেপ রোমকূপ পরিষ্কার রাখে। তাই ত্বক আর বেশি অক্সিজেন ধরে রাখতে পারে। হাইড্রেশন চাই-ই শসার প্রায় পুরোটা পানি। তাই এটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে। শুষ্ক নিষ্প্রাণ ও নির্জীব ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম না লাগিয়ে শসার রসই বেছে নিন! সরাসরি ব্যবহার ছাড়াও প্রতিদিনকার ফেস মাস্কে পানির পরিবর্তে শসার রস ব্যবহার করতেই পারেন। হাইড্রেটিং ফেস মাস্ক তৈরির জন্য সমপরিমাণ শসার রস ও টক দই দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ এ দুটো উপাদানই ঠা া। টক দই না থাকলে কাঁচা দুধ ও শসার রস দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে মুখে, গলায় ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে নিন। গুডবাই সানট্যান পার্লারে ব্লিচ করে ত্বক পোড়াচ্ছেন কেন? সমাধান তো আপনার রেফ্রিজারেটরে! শসায় রয়েছে প্রাকৃতিক ব্লিচিং এজেন্ট। রোদে পোড়া দাগ ঘোচতে, ত্বকের দাগ মুছে দিতে ও রং ফর্সা করতে কেবল শসাই যথেষ্ট। প্রাকৃতিক ব্লিচের জন্য সমপরিমাণ শসার রস ও লেবুর রস একসঙ্গে করে সারা শরীরে লাগান। শুকাতে শুরু করলে আলতো ম্যাসাজ করে গোসল সেরে নিন। রোদে পোড়া দাগ তুলতে দুই টেবিল চামচ শসা বাটার সঙ্গে এক চা চামচ এ্যালোভেরা জেল দিয়ে পেস্ট তৈরি করে পুড়ে যাওয়া স্থানে লাগান। সানট্যান হাল্কা হবে, সঙ্গে ত্বকের জ্বালাভাব ও র‌্যাব থেকে মুক্তি পাবেন। বয়সের ছাপকে না শসার স্কিন টাইটনিং উপাদান ত্বকের বলিরেখা রোধ করে। বয়স ২৫-এর পর থেকে নিয়মিত ত্বকে শসা ব্যবহার করে সময়ের কাঁটাকে আটকে দিন। ম্যাঙ্গানিজ ও পটাসিয়াম রয়েছে বলে এটি ত্বকের শুষ্কতা কমায়, বলিরেখা পড়তে দেয় না ও বয়সের ছাপ দূরে রাখে। এ্যান্টিএজিং স্কিন ট্রিটমেন্টের জন্য শসা ও ডিমের সাদা অংশ উপকারী। একটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক টেবিল চামচ শসার রস ও এক টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। সারা মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
×