ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মানহানিকর বক্তব্য প্রত্যাহার ॥ ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য না করার অঙ্গীকার

করবিনের কাছে ক্ষমা চাইলেন সরকার দলীয় এমপি

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

করবিনের কাছে ক্ষমা চাইলেন সরকার দলীয় এমপি

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি বেন ব্রাডলি জেরেমি করবিনের বিরুদ্ধে মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর আগে তিনি বিরোধী দল লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিনকে বিদেশী গুপ্তচর দাবি করে টুইট করেছিলেন। আইনী ব্যবস্থা নেয়ার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে নিজের দাবি মিথ্যা ও লেবার নেতার প্রতি মানহানিকর বলে মুচলেকা দিয়েছেন এই এমপি। দেশটির ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। গার্ডিয়ান। ভবিষ্যতে এমন মন্তব্য আর না করারও অঙ্গীকার আছে ওই মুচলেকায়। সেই সঙ্গে জেরেমি করবিনের পছন্দের দুটি দাতব্য সংস্থায় বড় অঙ্কের অর্থদানে সম্মত হয়েছেন ব্রাডলি। অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বাম ঘরানার নীতিনিষ্ঠ রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত জেরেমি করবিনের বিরুদ্ধে ডানপন্থী গণমাধ্যম এবং সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের অব্যাহত অপপ্রচার বড় ধরনের ধাক্কা খেল। কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি এমন গুরুতর অভিযোগ তোলার কারণে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নৈতিকতা। আইনী ব্যবস্থার প্রাথমিক ধাপেই ক্ষমতাসীন-দলীয় এমপির মুচলেকা পেয়ে আত্মবিশ্বাসী লেবার পার্টি। তারা অন্যদেরও আইনীভাবে মোকাবেলা করে অপপ্রচারকারীদের সমুচিত শিক্ষা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ১৯৮০-র দশকের উত্তাল স্নায়ুযুদ্ধের সময় জেরেমি করবিন কমিউনিস্ট গুপ্তচরদের কাছে যুক্তরাজ্যের গোপন তথ্য পাচার করতেন এমন দাবি করে সংবাদ প্রচার করে দেশটির কয়েকটি ডানপন্থী পত্রিকা। যার ধারাবাহিকতায় মেন্সফিল্ড থেকে নির্বাচিত এমপি বেন ব্রাডলি গত সোমবার এক টুইট বার্তায় দাবি করেন, ‘করবিন রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য বিক্রি করেছেন’। অবশ্য প্রমাণবিহীন এমন দাবির পরিণতির কথা আঁচ করতে পেরে পরক্ষণেই তিনি তা মুছে দেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। করবিনের আইনজীবীর নোটিশের জেরে শনিবার মুচলেকা দিতে বাধ্য হন ব্রাডলি। করবিনের প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা এবং নিজের ভুল শিকারের পাশাপাশি করবিনের পছন্দের দুটি দাতব্য সংস্থায় অর্থ দেয়ার মুচলেকা তিনি নিজের টুইটে প্রচার করতে বাধ্য হন। যুক্তরাজ্যের ডানপন্থী সংবাদপত্র ডেইলি মেইল, দ্য সান, টেলিগ্রাফ ও দ্য এক্সপ্রেস লেবার নেতা করবিনের বিরুদ্ধে বরাবরই নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করে। রক্ষণশীল দলের সমর্থক হিসেবে পরিচিত এসব সংবাদপত্র সপ্তাহ দুয়েক ধরে লেবার নেতা করবিন ‘চেকোস্লোভাকিয়ার গুপ্তচর’ ছিলেন দাবি করে সংবাদ প্রচার করছে। এসব সংবাদে দাবি করা হয়, ১৯৮৬ ও ১৯৮৭ সালে করবিন তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার রাষ্ট্রদূত জেন সারকোজির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে ব্রিটিশ সরকার পরবর্তী সময়ে সারকোজিকে বহিষ্কার করেছিল। বহিষ্কৃত ওই রাষ্ট্রদূতের বরাত দিয়ে পত্রিকাগুলো বলছে, তথ্যের বিনিময়ে করবিন ও লেবার পার্টির কয়েকজন এমপিকে ১০ হাজার পাউন্ড দেয়া হয়েছিল।
×