ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাবনায় ভাসমান মাছ চাষে স্বাবলম্বী

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

পাবনায় ভাসমান মাছ চাষে স্বাবলম্বী

বড়াল ও গুমানী নদীতে ভাসমান মৎস্য খামারে মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। ভাসমান মৎস্য খামারে তুলনামূলক কম খরচে মাছ চাষ করে লাভজনক হওয়ায় নদী এলাকার মৎস্যজীবীরা এখন এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠায় এলাকার মৎস্য চাহিদা পূরণেও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ভাসমান মৎস্য খামারে মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল জেলার ফরিদপুর উপজেলার পুঙ্গলী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান, উন্মুক্ত নদীতে স্থানীয় বাঁশ, জাল ও প্লাষ্টিকের ড্রাম দিয়ে তৈরি ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থ এবং ৬ ফুট গভীর ভাসমান মৎস্য খাচায় এক হাজার থেকে বার শত মনোসেক্স মাছের পোনা চাষ করা হয়। প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর স্থানীয় বাজারে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় এসব মাছ। প্রতি কেজি মাছ উৎপাদন করতে খরচ হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকা। তিনি জানান, চাঁদপুর জেলার ডাকাতিয়া নদীতে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে ২০১০ সাল থেকে নিজ এলাকার বড়াল নদীতে ভাসমান মৎস্য খামারে মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি অর্জন করে তিনি এখন অনেকটাই সচ্ছল। তিনি রাজশাহী বিভাগের শ্রেষ্ঠ মৎস্যজীবী হয়ে ২০১৪ সালে জাতীয় কৃষি পুরস্কার ও ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কার লাভ করেছেন। এই সাফল্য দেখে ফরিদপুর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার নাজিমুদ্দিন এবং আব্দুর রাজ্জাকসহ অনেকেই এখন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভবান হয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। এলাকার মৎস্যজীবীরা জানান, নদী সংশ্লিষ্ট এলাকার মৎস্যজীবীদের সরকারীভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করে সহজ শর্তে আর্থিক ঋণ সুবিধা প্রদান করলে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষের আরও অধিক সুফল পাওয়া যাবে এবং এলাকার দরিদ্র মৎস্যজীবীদের দরিদ্রতা দূরীকরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে পারে। ভাসমান মৎস্য খামারি হাফিজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন এবং আব্দুর রাজ্জাক দরিদ্রতা দূরীকরণে সরকারের পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকদের নদীতে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে নিজের এবং দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। পাবনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, জেলার ফরিদপুর ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বড়াল ও গুমানী নদীতে ভাসমান মৎস্য খামারে মাছ চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে স্থানীয় মৎস্য চাষীরা। বিষয়টির ব্যাপক প্রচার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ সহযোগিতায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধাও দেয়া হচ্ছে। -কৃষ্ণ ভৌমিক, পাবনা থেকে
×