ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মালদ্বীপ সঙ্কট॥ ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

মালদ্বীপ সঙ্কট॥ ট্রাম্প-মোদি ফোনালাপ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে টেলিফোনে মালদ্বীপ, আফগান যুদ্ধ ও মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা করেন বলে হোয়াইট হাউস সূত্র জানিয়েছে। খবর- ইয়াহু নিউজ। পুরো এশিয়া জুড়ে চীনের কর্তৃত্ববাদী ভূমিকা মোকাবেলায় ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সামরিক যোগাযোগ আরও জোরদার করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি বিলাসবহুল পর্যটন স্থল হিসেবে পরিচিত মালদ্বীপকে নিয়ে দক্ষিণ এশিয়া ও প্রতিবেশীদের মধ্যে নতুন উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। দেশটি কিছুদিন আগে নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতিকল্পে চীনের সঙ্গে ‘ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এতে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারতের উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। সম্প্রতি ভারত মহাসাগরের এই দেশটিতে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অবস্থা এতটাই নাজুক হয়ে পড়েছে যে, সে দেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গাইয়ুম ও প্রধান বিচারপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার দরুন শ্রীলঙ্কায় আশ্রয় গ্রহণকারী সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ মালদ্বীপের পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে মালদ্বীপের রাজনৈতিক সঙ্কটে মোদি ও ট্রাম্পের উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এই দুই নেতা সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের এই দুই নেতার কথোপকথনে মালদ্বীপ ছাড়াও আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গ উঠে আসে। তারা আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভারতের চির বৈরী দেশ পারমাণবিক ক্ষমতাধর পাকিস্তানে সামরিক সাহায্য হিসেবে বরাদ্দকৃত অর্থ ও অস্ত্রের চালান স্থগিত করেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ এই যে, দেশটি তালেবান জঙ্গী ও হাক্কানি নেটওয়ার্কের মূলোৎপাটন করতে ব্যর্থ হয়েছে বিধায় আফগান যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। বিগত কয়েক বছর যাবত ভারত আফগানিস্তানে তাদের সাহায্য সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছে এবং ২০১৬ সালে তারা সেখানে আরও অস্ত্র সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানে এক ধরনের উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। টেলিফোন সংলাপে মোদি ও ট্রাম্প মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ৬ লাখ ৮০ হাজারের মতো রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে ও কথা বলেন। মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনের উত্তরাঞ্চলের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর যে ভয়াবহ নির্যাতন চালায় তা বিশ্ব গণমাধ্যমে উঠে এসেছেÑ এসব নির্যাতনের মধ্যে গণহত্যা, গণধর্ষণ, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের কথা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দেয়। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচী নিয়েও ট্রাম্প ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেন। এসব কর্মসূচী ব্যাপকভাবে অনুসরণ করলে শেষ পর্যন্ত তাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হয়ে দেখা দিবে বলে ট্রাম্পের আশঙ্কা। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে ভারতের কুটনৈতিক সম্পর্ক আছে এবং উভয় দেশের রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দূতাবাসও আছে। নয়া দিল্লী জাতিসংঘ ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা অনুসরণ করে খাদ্য ও ওষুধপত্র ছাড়া উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের পণ্যের আমদানি রফতানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
×