ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় চোরাই পথে আসা গরু-মহিষে পদদলিত হয়ে ক্ষেত নষ্ট

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭

নওগাঁয় চোরাই পথে আসা গরু-মহিষে পদদলিত হয়ে ক্ষেত নষ্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ২৯ ডিসেম্বর ॥ সাপাহার উপজেলার কলমুডাঙ্গা সীমান্তে চোরাই পথে আনা ভারতীয় গরু-মহিষের পদদলিত হয়ে শতাধিক কৃষকের কয়েকশ’ বিঘা জমির সরিষা ফসল নষ্ট হয়ে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এমন ঘটনায় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর নীরব ভূমিকায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। জানা গেছে, এবারের বর্ষায় সর্বগ্রাসী বন্যায় ওই এলাকার কৃষকের ক্ষেতের আমন ধান সমুলে ক্ষতি সাধন হয়েছে। কৃষকরা তাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে সর্বস্ব খুইয়ে একচেটিয়াভাবে সমস্ত জমিতে সরিষার আবাদ করে। বর্তমানে চোরাই পথে ভারত থেকে গরু আনা অব্যাহত থাকায় প্রতি রাতে তাদের সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রতি রাতেই চোরাকারবারিরা ওই সীমান্ত দিয়ে শত শত গরু-মহিষ কৃষকের ফসলের ওপর দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে আনছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই এলাকার কৃষক তাদের ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কলমুডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ জানালে, বিজিবি সদস্যরা তাদের নিজের ফসল নিজেকে রক্ষা করতে বলে। সেই মোতাবেক কৃষকরা চোরাই পথে আনা ভারতীয় গরুর হাত থেকে তাদের ফসল রক্ষার জন্য রাতে মাঠে পাহারা দিতে গেলে, টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে চোরাকারবারি বলে ধমক দিয়ে মাঠ থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় কৃষক মাঠের ফসল রক্ষায় তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, তা ভেবে না পেয়ে চরম হতাশায় ভুগছে। মঙ্গলবার ভারতীয় গরুর পদচারণায় কৃষকের ক্ষতির চিহ্ন দেখতে কয়েকজন সাংবাদিক ওই এলাকায় গেলে কলমুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক, শাহিন আলম, ফারুক হোসেন, সোলাইমান আলী, সাইদুর রহমান, ইয়াছিন আলী ও আলমসহ শত শত কৃষক সাংবাদিকদের সামনে তাদের ফসলের ক্ষতির কথা বলতে গিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। তারা সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার নুরুল আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে, তিনি কৃষকের বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন, আমার বিজিবি সংখ্যায় অনেক কম। চোরাকারবারিদের কবল থেকে কৃষকের ফসল রক্ষার জন্য আমরা সবসময় কৃষকের সহযোগিতা চেয়েছি। কিন্তু কৃষক আমাদের কোন সহযোগিতা না করে উল্টো আমাদেরকে দুষছে। কৃষকের সহযোগিতা পেলে প্রয়োজনে আমরা চোরাকারবারিকে গুলি করব। একটি পাখিও ভারত থেকে আসতে দিব না। তবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনার কথা স্বীকার করে কৃষকের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনিও বিজিবির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। চোরাকারবারিদের কবল থেকে সীমান্তবর্তী কৃষক তাদের মাঠের ফসল রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
×