ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছি ॥ তুষার রায়

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছি ॥ তুষার রায়

বাংলাদেশের অন্যতম তরুণ নাট্যকর্মী ও নাট্য সংগঠক তুষার রায়। নাট্যসংগঠন নাট্যপুরাণের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে তার সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের বিষয়টি। বেশকিছু দিন ধরেই ইউনাইটেডনেশন অর্গানাইজেশন জাপান এশিয়া কালচারাল এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশের হয়ে কাজ করছেন তিনি। এই প্রতিষ্ঠানের চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে এই অঞ্চলের বিশেষ শ্রেণীর মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সাংস্কৃতিক চর্চা বাড়াতে কাজ করছেন। নানাবিধ কর্মকা-ের ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার রাংটিয়ায় বিশেষ ‘কোচ সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক উৎসব-২০১৭ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই উৎসবে প্রধান অতিথি তুষার রায়। এ উৎসব এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার রাংটিয়ায় আজকের কোচ সমাবেশ ও সংস্কৃতি উৎসব প্রসঙ্গে জানতে চাই। তুষার রায় : আপনি ইতোমধ্যে জেনে গেছেন যে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার রাংটিয়ায় বিশেষ কোচ সমাবেশ ও সংস্কৃতি উৎসব আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের উৎসবের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের অহংকার কোচ সমাবেশ ও সংস্কৃতি উৎসব-২০১৭’। স্থানীয় কোচ কালচারাল এন্ড ডেভেলপমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন এই আয়োজন করেছে। এ কর্মসূচীতে রয়েছে কোচ সমাবেশ, আলোচনা সভা এবং কোচ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন ঝিনাইগাতী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা করিম। ইউনাইটেডনেশন অর্গানাইজেশন জাপান এশিয়া কালচার এক্সচেঞ্জ, বাংলাদেশের সিইও হিসেবে আমি প্রধান অতিথি থাকছি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মুক্তিযোদ্ধা নবীন চন্দ্র কোচ। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন গুরুচরণ দুধনই আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক যুগলকিশোর কোচ। সব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে কোচ কালচারাল এন্ড ডেভেলপমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন (কেসিডিএ) রাংটিয়া, খলচান্দা কোচ সাংস্কৃতিক দল, নলিতা বাড়ি, নওকুচি সাংস্কৃতিক দল ও শালচুড়া কোচ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, ঝিনাইগাতি, রঙ্গ দেকা ক্লাব, রাংটিয়া। এ আয়োজনের সহায়তার মূল উদ্দেশ্য কী? তুষার রায় : দেখুন আমরা ইউনাইটেডনেশন অর্গানাইজেশন জাপান এশিয়া কালচারাল এক্সচেঞ্জ জাতিসংঘের একটি উন্নয়নমূলনক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ৪৫টি উপজাতীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। বিশেষ করে তাদের অধিকার রক্ষায় সচেতনতা তৈরি এবং এই সব উপজাতীর পিছিয়ে পড়া সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা মনে করি সচেতনতার অভাবে নিয়মিত চর্চা না হলে এই সব জনগোষ্ঠী ও তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবন সংস্কৃতি হারিয়ে যাবে। তাতে বিশ্ব সংস্কৃতির অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করছি। এছাড়া আর কী কী কাজ করছেন? তুষার রায় : সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পিছিয়ে পড়া জনগণের অধিকার সচেতনতা তৈরির কাজ করছি। এরই ধারাবাহিকতায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা ও পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও আমরা এই অঞ্চলের জলবায়ু উন্নয়ন, নারী ও শিশুর অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং ভবিষ্যত লক্ষ্য স্থির করতে তাদের বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিচ্ছি। ভবিষ্যতে আমাদের কর্মকান্ডের ব্যাপ্তি আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। ভবিষ্যতে মূলধারার সংস্কৃতিতে পৃষ্ঠপোষকতার কোন পরিকল্পনা আছে? তুষার রায় : অবশ্যই। আমরা সে দিকেই এগোচ্ছি। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। আশা করছি অচিরেই এ বিষয়ে একটি খবর আমরা দিতে পারব। তবে আপাতত আমরা অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সহায়তার বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আশা করছি সামগ্রিকভাবে কিছুটা ফলাফল আমরা পাব। আপনি তো একজন থিয়েটার কর্মী, থিয়েটারের বাইরে এসব কাজে সমন্বয় করেন কিভাবে? তুষার রায় : দেখুন আসলে থিয়েটার কর্মীদের অনেক ধরনের কাজই করতে হয়। আমি নাট্যপুরাণ নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বর্তমানে এই নাট্যদলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন কাজী জিলানী। থিয়েটারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের জড়িত হওয়াটা আমাদের জন্য সামর্থক বিষয়। সামাজিক কর্মকা-ের পাশাপাশি আমি দলের বিভিন্ন প্রযোজনা নিয়মিত অভিনয় করছি। সম্প্রতি দলের অন্যতম নন্দিত প্রযোজনা ‘অমাবস্যা’ নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছি। এছাড়া অচিরেই নতুন একাধিক প্রযোজনা আমরা মঞ্চে আনতে যাচ্ছি। এসব প্রযোজনায় আমি কাজ করব। -সাজু আহমেদ
×