ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনীদের বিজয়, স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

জাতিসংঘে ফিলিস্তিনীদের বিজয়, স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকার

জাতিসংঘে ট্রাম্পের জেরুজালেম নীতি বাতিল ঘোষিত হওয়ায় ফিলিস্তিনী নেতৃবৃন্দ জাতিসংঘের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে পদক্ষেপ নিয়েছে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তা বিপুল ভোটে প্রত্যাখ্যাত হয়। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ১২৮ দেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলসহ ৯ দেশ বিপক্ষে এবং ৩৫ দেশ ভোট দানে বিরত থাকে। -ইন্ডিপেনডেন্ট ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবুহ রাদাইনা বলেন, এই ভোট গ্রহণের মাধ্যমে ফিলিস্তিনের বিজয় হয়েছে। এই অর্জনের মাধ্যমে আমরা জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে আমাদের উপর ইসরাইলী দখলদারিত্ব অবসান এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সত্যিকার স্বাধীন ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষে কাজ করে যাব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনা পুরোপুরি নস্যাত করে দিয়েছেন। এই ভোট গ্রহণের দু’দিন আগেই জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছিলেন, যারা আমাদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিবে তাদের প্রত্যেকের নাম টুকে প্রেসিডেন্টের (্ট্রাম্পের) কাছে জমা দেয়া হবে। যাতে তাদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। নিকি হ্যালির এই হুমকি সত্ত্বেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এই পরাজয় ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুকে দারুণ ক্ষুব্ধ করেছে। ট্রাম্প যে সব দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে তাদের এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় দেয়া আর্থিক সহায়তা ব্যাপকভাবে হ্রাসের চিন্তাভাবনা করছেন। উল্লেখ্য, আগামী বছর (২০১৮) বৈদেশিক ত্রাণ সাহায্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার অবমুক্ত করার কথা রয়েছে। বিবিসি জানায়, জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই হুমকির প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিশেষ অধিবেশনে ৩৫ সদস্য দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। যদিও সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। খবর বিবিসির। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতির বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১২৮দেশ। প্রস্তাবের পক্ষে মাত্র ৯ দেশ ভোট দেয়। ৩৫ দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। প্রস্তাবের পক্ষে যারা ভোট দিয়েছে তারা হল যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস, মার্শাল আইল্যান্ডস, নাউরু, পালাউ ও টোগো। অনুপস্থিত থাকা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। যদিও এই প্রস্তাব মানার কোন বাধ্যবাধকতা নেই যুক্তরাষ্ট্রের। তবে এটা স্পষ্ট যে, ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ল। এই ভোটাভুটির আগেই সাধারণ পরিষদের সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দিলে সেই দেশগুলোকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সাধারণ পরিষদে আমাদের বিরুদ্ধে ভোট দেয়া দেশগুলোর বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিবেদন দিতে বলেছেন। প্রেসিডেন্ট এই ভোটাভুটিকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন। তিনি একে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভোট দেবে আমার ওপর নির্দেশ আছে যাতে ওই দেশগুলোর নাম সংগ্রহ করে প্রেসিডেন্টের কাছে একটা প্রতিবেদন দিই। আমরা জেরুজালেম প্রশ্নে প্রত্যেকটা ভোটের হিসাব রাখব। শুধু তাই নয়, যে দেশগুলো সাধারণ পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভোট দেবে তাদের অর্থনৈতিক সহায়তা বন্ধেরও হুমকি দেয় মার্কিন প্রশাসন।
×