ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবন্ধীর প্রতি অবিচার

কাজ করেন ফুল টাইম বেতন দেয়া হয় অর্ধেকেরও কম

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৭

কাজ করেন ফুল টাইম বেতন দেয়া হয় অর্ধেকেরও কম

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোর খয়েরতলা আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে সূর্যমুখী বিদ্যানিকেতনের সহকারী শিক্ষিকা প্রতিবন্ধী হুমায়রা আফসানাকে হয়রানি ও তার বেতনের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। আফসানা নিয়ম মেনে অর্পিত দায়িত্ব সম্পন্ন করলেও তার পারিশ্রমিক দেয়া হয় অর্ধেকেরও কম। গত পাচ বছর ধরে তাকে এভাবে ঠকানো হচ্ছে। সূর্যমুখী বিদ্যানিকেতনটি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত। ওই প্রতিষ্ঠনে হুমায়রা আফসানাকে সহকারী শিক্ষিকা পদে নিয়োগ দেয়া হয় ২০১৩ সালে ১৬ জানুয়ারি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৎকালীন মহাপরিচালক রফিকুল ইসলাম ম-ল প্রতিবন্ধী কোটা অনুসরণ করে তাকে নিয়োগ দেন। হুমায়রা আফসানা জানান, তাকে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলেও তিনি আর্থিকভাবে সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নীতিমালা অনুযায়ী একজন নিয়মিত ওয়ার্কারের সমপরিমাণ বেতন সুবিধা পাবেন তিনি। অর্থাৎ নিয়োগ পত্রের শর্তানুযায়ী বর্তমানে তার বেতন পাওয়ার কথা ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু তাকে দেয়া হয় মাত্র ৫ হাজার টাকা। এর প্রতিবাদ করায় তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। তার পিতা আব্দুর রাজ্জাক খয়েরতলা আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে মেকানিক্যাল পোস্টে কর্মরত ছিলেন। আর দেড় বছর পর তিনি অবসরে যাবেন। এই অবস্থায় তাকে গত সাপ্তাহে মাগুরায় বদলি করা হয়েছে। এর আগে তাকে ৪ বার সেকশন বদল এমনকি জুনিয়রের আন্ডারেও নিযুক্ত করা হয়েছিল। পিতাকে সরানোর পর এখন আফসানাকে হয়রানি এবং সরানোর জাল বুনছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সিরাজুল ইসলাম। তার একজন সহকর্মী জামাল উদ্দিন (সহকারী বৈজ্ঞানিক) বিদ্যালয়ে গিয়ে বলেন, ওসব (প্রতিবন্ধী) ল্যাংড়া খোড়া এখানে চলবে না। রাজ্জাক মেকানিক্যালকে সরিয়েছি এবার হুমায়রা আফসানাকে তাড়ানো হবে। এভাবে তার ওপর বিভিন্নভাবে মানুষিক নির্যাতন করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক জানান, অব্যাহত মানুষিক নির্যাতনের একপর্যায় তার মেয়ে হুমায়রা ১৩ ডিসেম্বর ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে সঙ্গে সঙ্গে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা সেবা দেয়ার পর গত সোমবার তাকে রিলিজ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হুমায়রা আফসানার বেতনের অবশিষ্ট অংশ (১০ হাজার টাকা) অন্য শিক্ষকদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। এর রেজুলেশনও আছে। তবে কোন বিধি বলে তার বেতন কাটা হয় এমন প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।
×