ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রার্থীদের হলফনামা দাখিলের বিধান বাতিলের পরামর্শে টিআইবির উদ্বেগ

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১৪ অক্টোবর ২০১৭

প্রার্থীদের হলফনামা দাখিলের বিধান বাতিলের পরামর্শে টিআইবির উদ্বেগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রার্থীদের হলফনামা দাখিলের বিধান বাতিলে একটি রাজনৈতিক দলের পরামর্শে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে সংস্থাটির পক্ষ থেকে দলটিকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা পরিপন্থী পশ্চাৎমুখী অবস্থান পরিহারের আহ্বান জানানো হয়েছে। টিআইবি উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও একটি রাজনৈতিক দল গত ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনায় হলফনামার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধান বাতিল চেয়ে যে অভিমত প্রকাশ করেছে, তা সত্যিই হতাশাজনক ও অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেন। সংস্থাটির পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে বলা হয়, উচ্চ আদালতের নির্দেশ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) আইন ২০০৯ এ সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। এরপরও সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দল কর্তৃক নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীদের হলফনামা দাখিলের বিধান বাতিল চেয়ে অভিমত প্রকাশ করায় আমরা গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে আগামী সংসদ নির্বাচনে আইনানুগভাবে প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য যাচাই-বাছাই করে জনসম্মুখে তা প্রকাশ করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে টিআইবি। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে দেশের আপামর জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন অনুযায়ী সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের অংশগ্রহণে প্রণীত। একইসঙ্গে সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) আইন ২০০৯- এ জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অন্যতম উপায় হিসেবে বিধানটি প্রতিষ্ঠা হয়। উক্ত রাজনৈতিক দল কর্তৃক উত্থাপিত দাবিকে গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকতার অন্তরায় ও দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সম্ভাবনার জন্য অশনিসংকেত। উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ২৪ মে হাইকোর্ট প্রার্থীদের আট ধরনের তথ্য সরবরাহের নির্দেশ দিলে উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর আপীল বিভাগ হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন। এরপর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধন) আইন ২০০৯ অনুযায়ী মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার মাধ্যমে আট ধরনের তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আট ধরনের তথ্যের মধ্যে রয়েছে ১. শিক্ষাগত যোগ্যতা ২. বর্তমানে প্রার্থীর বিরুদ্ধে রুজুকৃত ফৌজদারি অপরাধের তালিকা ৩. অতীতের ফৌজদারি মামলার তালিকা ও ফলাফল ৪. প্রার্থীর পেশা ৫. প্রার্থীর আয়ের উৎস (সমূহ) ৬. অতীতে সংসদ সদস্য হয়ে থাকলে জনগণের প্রতি প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণে তার ভূমিকা ৭. প্রার্থী ও তার ওপর নির্ভরশীলদের সম্পদ ও দায়-দেনার বর্ণনা এবং ৮. ব্যাংক বা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তিগত বা যৌথভাবে এবং এমন কোম্পানি থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ ও বর্ণনা যে কোম্পানির তিনি সভাপতি বা নির্বাহী পরিচালক বা পরিচালক।
×