ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় আজ ‘হ্যামলেট’

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১০ অক্টোবর ২০১৭

শিল্পকলায় আজ ‘হ্যামলেট’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবে আজ মঞ্চস্থ হবে শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা ‘হ্যামলেট’। সৈয়দ শামসুল হক অনূদিত শেক্সপিয়ারের ‘হ্যামলেট’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিন করেন মাস্উদ সুমন, শফিকুল ইসলাম (শাফিক), শামীম সাগর, শরীফ সিরাজ, সঙ্গীতা চৌধুরী, মেরিনা মিতু, আমিনুর রহমান মুকুল, শাহারিয়ার খান, যোজন মাহমুদ, মোঃ সোহেল রানা, সাঈদ রহমান, কান্তা জামান, মেহেজাবীন মুমু, শরীফ সিরাজ, বাপ্পি আমীন, তৃপ্তি রানী মন্ডল, শামীম শেখ, ফোকরুজ্জামান চৌধুরী। ডেনমার্কের রাজার মৃত্যুর মাধ্যমে সূচনা হয় নাটকটির। নাটকের গল্পে দেখা যায় রাজার মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লাউডিয়াস অর্থাৎ যুবরাজ হ্যামলেটের চাচা সিংহাসনে আরোহণ করবেন। এরপরই সূত্রপাত ঘটবে তার অগ্রজের স্ত্রী, যুবরাজ হ্যামলেটের জননী গারট্রুডের সঙ্গে পরিণয়ের। জনককে হারানোর ব্যথা, জননীর সঙ্গে চাচার পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হওয়া এবং সর্বোপরি চাচার সিংহাসনে আসীন হওয়া নাড়া দেয় যুবরাজ হ্যামলেটকে। তিনি এই দুর্বিষহ অন্যায় ঘটনাগুলো কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না। ফলে যুবরাজ শোকে অনেকটা পাগল প্রায় হয়ে পড়েন। জীবনের এই দুঃসহ লগ্নে যুবরাজের সামনে আবির্ভূত হয় তার বাবার প্রেতাত্মা। হ্যামলেটকে তিনি জানিয়ে দেন, সর্প দংশনে নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও তা আসলে মিথ্যা। সত্য হলো তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লাউডিয়াস তাকে বিষ ঢেলে হত্যা করেছে। এরই মাঝে মন্ত্রী পলোনিয়াস গারট্রুডের ঘরে মাতা-পুত্রের কথোপকথন শোনার জন্য আড়ি পাতলে হ্যামলেটের তরবারির আঘাতে তিনি নিহত হন। হ্যামলেট তাকে রাজা ক্লাউডিয়াস ভেবে ভ্রম বশত হত্যা করে। অপরদিকে পলোনিয়াসের কন্যা ও যুবরাজ হ্যামলেটের প্রেমিকা ওফেলিয়া বাবার মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেন না। মনোবেদনায় ভেঙে পড়া ওফেলিয়া জীবনের জ্বালা মেটান জলে ডুবে আত্মহত্যা করে। এমন নানা ঘটনার মধ্য দিয়েই নাটকটির কাহিনী এগোয়। ‘হ্যামলেট’ নাটকে পিতৃহত্যার প্রতিশোধের নেশায় মত্ত ডেনিশ যুবরাজ হ্যামলেট। অভিযুক্ত চাচাকে হত্যার সুযোগ পেয়েও সে হত্যা করে না। কেন? ক্লডিয়াস ওই সময়টায় প্রার্থনারত ছিল বলে? এ রকম অনেক প্রশ্নেই দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভিড় করে হ্যামলেটের মনে। উইলিয়াম শেক্সপিয়ার রচিত হ্যামলেট বিশ্ববাসীর অতিপরিচিত এবং অতি চর্চিত একটি বিয়োগান্ত নাটক। এই নাটকে ডেনমার্কের যুবরাজ হ্যামলেটের জীবনযুদ্ধের দ্বন্দ্ব ও সঙ্কটময় রূপ চিত্রিত হয়েছে, যা কাহিনীবিন্যাস ও মর্মকথায় হয়ে উঠেছে সর্বজনীন। চার শ’ বছর ধরে এই নাটকটি বিশ্বের অগণিত দেশে বিরতিহীনভাবে মঞ্চে অভিনীত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও এর আগে অনেকবার হয়েছে। নতুন করে অনুবাদ করা হলেও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক কাহিনীবিন্যাস ও মূল গল্পের মর্মকথায় কোন ব্যত্যয় ঘটাননি। কাহিনীর কোন পরিবর্তন না ঘটিয়ে সৈয়দ হক গ্রথিত করেছেন বাঙালী কবিদের কাব্যাংশ ও গান। পাশাপাশি এসেছে বাংলার নিজস্ব লোকজ পালাগানেরও নানা আঙ্গিক। এদেশীয় নৃত্য আঙ্গিক ও ভাবনা সচেতনভাবে ব্যবহৃত হয়েছে নাটকে।
×