ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনায় ঐক্যের পক্ষে বিশাল সমাবেশ

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১০ অক্টোবর ২০১৭

বার্সিলোনায় ঐক্যের পক্ষে বিশাল সমাবেশ

লাখো বিক্ষোভকারী স্পেনের ঐক্যের পক্ষে সমাবেশ করার পর স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য কাতালোনিয়ার নেতাদের পরিকল্পনা ব্যাপক চাপের মুখে পড়েছে। গত ১ অক্টোবর কাতালান আঞ্চলিক সরকারের অবৈধ গণভোট ঠেকাতে পুলিশ হস্তক্ষেপ করায় সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনা বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের স্পেন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় কাতালোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমনের পার্লামেন্টে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। গণভোটে স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার রায় পাওয়ায় কাতালান পার্লামেন্ট এই অধিবেশন থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর এএফপি ও ইয়াহু নিউজের। আঞ্চলিক সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্পেনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ রাজনৈতিক সঙ্কট আরও ঘনীভূত হওয়ারই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শুক্রবার কাতালান সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান রাউল রোমেভা বলেন, পার্লামেন্ট আলোচনা করবে, অধিবেশন করবে। বিতর্ক হবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ। কাতালান পার্লামেন্টে স্বাধীনতা ঘোষণার উদ্যোগ নিতে সোমবার আয়োজিত ওই পার্লামেন্ট অধিবেশনের ওপর স্পেনের সাংবিধানিক আদালতের স্থগিতাদেশের পর স্বাধীনতাপন্থী কাতালোনিয়া আঞ্চলিক সরকার এই প্রথম স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া জানাল। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী কাতালোনিয়ার আরও স্বায়ত্তশাসন নিয়ে চুক্তির দ্বার খোলার মধ্য দিয়ে একটি সমাধান খোঁজার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা এবং সঙ্কট সমাধানে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের আহ্বান নাকচ করেছেন। কাতালোনিয়ার রাজধানী বার্সিলোনায় রবিবার স্পেন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার বিরোধিতা করে দেশের ঐক্যের পক্ষে সমাবেশ করেছে অন্তত তিন লাখ ৫০ হাজার মানুষ। তারা স্পেন ও কাতালোনিয়ার পতাকা উড়িয়েছে। অনেকের হাতে ছিল ব্যানার, তাতে লেখা, ‘একসঙ্গে আমরা অনেক বেশি শক্তিশালী’ আর ‘কাতালোনিয়াই হচ্ছে স্পেন।’ কাতালান নেতারা আগামী সপ্তাহেই স্পেন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন এমন জল্পনার মধ্যে কাতালোনিয়ায় এটিই সবচেয়ে বড় সমাবেশ। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয় সতর্ক করে বলেছেন, আইনগতভাবে কাতালোনিয়ার স্বাধীনতা রুখতে কোন পদক্ষেপই তিনি নাকচ করবেন না। শনিবার রাখয় বলেন, কাতালোনিয়া স্বাধীনতা দাবি করলে স্পেন কাতালান সরকারকে অপসারণ করে নতুন করে নির্বাচন ডাকতে পারে এমনকি ওই অঞ্চলের বিদ্যমান স্বায়ত্তশাসনও স্থগিত করতে পারে। কাতালান নেতা কার্লেস পুজদেমন মঙ্গলবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনে একতরফাভাবে স্বাধীনতার ঘোষণার ইঙ্গিত দেয়ার পর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী এ হুঁশিয়ারি দেন। এ পরিস্থিতিতেই কাতালানরা বড় ধরনের এ সমাবেশ করল। বার্সিলোনার পুলিশ রবিবারের সমাবেশে যোগ দেয়া মানুষের সংখ্যা তিন লাখ ৫০ হাজার বলে জানিয়েছে। তবে সমাবেশের আয়োজকরা এ সংখ্যা নয় লাখ ৫০ হাজার বলছেন। সমাবেশে আসা একজন বলেন, আমরা কাতালান ও স্প্যানিশ দুটোই অনুভব করতে পারি। আমরা এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ সপ্তাহে কি ঘটে আমরা দেখব। কিন্তু আমরা কি চাই সেটা তাদের জানানোর জন্যও আমাদের জোর গলায় আওয়াজ তুলতে হবে। বার্সিলোনার আগে শনিবারও স্পেনজুড়ে দেশের ঐক্যের পক্ষে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। গণভোটের চূড়ান্ত ফলে দেখা গেছে, এতে ৪৩ শতাংশ ভোটার অংশগ্রহণ করেছেন এবং ২৩ লাখ ভোটদাতার মধ্যে ৯০ শতাংশই কাতালোনিয়াকে স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন ‘স্বাধীন রাষ্ট্র’ হিসেবে দেখতে চেয়েছেন। ভোট ঠেকাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল মাদ্রিদ সরকার। পুলিশ অসংখ্য ভোট কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়ে নির্বাচনী সামগ্রী জব্দ করেছিল। স্পেনিশ সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় পার্লামেন্ট কোন অঞ্চলের স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে।
×