ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কুড়িগ্রামে সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ কুড়িগ্রামে শ্রদ্ধা ও গাম্ভীর্য্যপূর্ণ পরিবেশে দেশবরেণ্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ মাঠে কবির সমাধিতে জেলা প্রশাসন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ফুলেল শ্রদ্ধা জানায়। পরে কবির সমাধিস্থল থেকে একটি শোক র‌্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালি শেষে কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজ অডিটরিয়ামে কবির আত্মজীবনী নিয়ে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়। কুড়িগ্রাম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ সাবিহা খাতুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেনÑ জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেনÑ পুলিশ সুপার মেহেদুল করিম, সিভিল সার্জন ডাঃ এসএম আমিনুল ইসলাম, জেলা আইনজীবী সমিতিরি সভাপতি এ্যাডভোকেট এসএম আব্রামহাম লিংকন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু, সিনিয়র সাংবাদিক সফি খান, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান কাজিউল ইসলাম প্রমুখ। সৈয়দ হকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের জন্য কুড়িগ্রামে সর্বস্তরের মানুষ তার সমাধিতে ভিড় জমিয়েছেন। সারাদিন দূর-দূরান্ত থেকে কবিপ্রিয় মানুষ সমাধিতে এসে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। কবির আত্মজীবনী নিয়ে আলোচনা সভায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাশেদুজ্জামান বাবু জানান, দেশবরেণ্য এই সব্যসাচী লেখকের স্মৃতি ধরে রাখতে সংস্কৃৃতি মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগের কথা আমরা জেনেছি। এ জন্য নক্সা তৈরির কাজ চলছে। জেলা আইনজীবী সমিতিরি সভাপতি এ্যাডভোকেট এসএম আব্রামহাম লিংকন জানান, বহুমাত্রিক লেখক সৈয়দ হক নাড়ির টানেই ফিরেছিলেন জন্মভূমির মাটিতে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ^াসী এই মানুষটির লেখায় বারবার ফিরে এসেছে কুড়িগ্রামের কথা। জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, দেশবরেণ্য সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক আজ কুড়িগ্রামে তার প্রিয় জন্মভূমিতে শায়িত রয়েছেন। লেখার জগতে ছিল তার অবাধ বিচরণ। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি লিখে গেছেন অসংখ্য লেখা। তাকে জানতে হলে, বুঝতে হলে তার লেখাগুলো পড়তে হবে। কুড়িগ্রামে কবিকে ঘিরে রচনা করতে হবে এক সংস্কৃতির জগত। প্রসঙ্গত, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান। তার অকাল প্রয়াণে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে হয়েছে অপূরণীয় ক্ষতি। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের জন্ম কুড়িগ্রাম পৌর শহরের থানাপাড়ায়। তার বাবা প্রয়াত সিদ্দিক হক ছিলেন একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। বাবার ছিল একটি হোমিওপ্যাথিক দোকানের ব্যবসা। শহরের ঐতিহ্যবাহী জাহাজ মোড়ে তার মায়ের নামে ছিল নুরজাহান মেডিকেল হল। সব্যসাচী লেখক ৫ ভাই আর ৩ বোনের মধ্যে সবার বড়। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন চঞ্চল আর দুরন্ত। মেধাবী শামসূল হককে এলাকার মানুষ বাদশা নামে ডাকতেন। তিনি অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত রিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে ঢাকায় পাড়ি জমান। কুড়িগ্রামে তার ছোট ভাই এ্যাডভোকেট আজিজুল হক পরিবার নিয়ে এখানেই থেকে যান। সব্যসাচী লেখককে ঘিরে একটি কমপ্লেক্স নির্মাণের কথা থাকলেও আজও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশ কুড়িগ্রামবাসী।
×