ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্গোৎসবের খরচ বাঁচিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেবে পূজা উদযাপন পরিষদ

প্রকাশিত: ০৮:২২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭

দুর্গোৎসবের খরচ বাঁচিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেবে পূজা উদযাপন পরিষদ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ শারদীয় দুর্গোৎসবের খরচ বাঁচিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করা হবে। সারাদেশের পূজা কমিটিগুলোকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। শুক্রবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত সেন দীপু, স্বপন কুমার সাহা, কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, সাবিত্রী ভট্টাচার্য, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, বাবুল দেবনাথ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি ডিএন চ্যাটার্জি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট শ্যামল কুমার রায় প্রমূখ। সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এক ভয়াবহ অমানবিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দুর্গাপূজায় উৎসবের খরচ বাঁচিয়ে শরণার্থীদের সহায়তা করা হবে। সারাদেশে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়া হয়েছে পূজা কমিটিগুলোকে। সংবাদ সম্মেলন থেকে দেশের সার্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশের সব পূজাম-পকে অধিকতর সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রদান করেছে পূজা উদযাপন পরিষদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দের। তারা পূজায় পূর্ণনিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন। তারা বলেন, ‘আমরা মনে করি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ যদি অসুরের বিরুদ্ধে এক হয়ে দাঁড়ান, অসুরশক্তি নির্মূল কঠিন কিছু নয়। দুর্গাপূজা এই বার্তাই বহন করে। বিজয়া দশমীর পরদিন আশুরা উদযাপিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে বক্তব্যে বলা হয়, পরিষদ যথানিয়মে বিজয়া দশমীর দিন শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা বিসর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চট্টগ্রামে ২৩৩ পূজামন্ডপে পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তা স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২৩৩ মন্ডপে নিরাপত্তা জোরদারের পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের বিভিন্ন টিম শুধু পূজামন্ডপেই নয় নগরীর সড়কগুলোতে এমনকি অলিগলিতেও নিরাপত্তা জোরদারের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এ বিষয়ে পূজামন্ডপগুলোতে সতর্কতা অবলম্বনের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার। সিএমপি’র মুখপাত্র সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি পূজামন্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন, মেটাল ডিটেক্টর যন্ত্র, ফায়ার ফাইটিং যন্ত্র ও জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে সিএমপি’র পক্ষ থেকে। এছাড়াও আজানের সময় মন্ডপে পূজাকেন্দ্রিক সাউন্ড সিস্টেম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। মহানগরীতে মন্ডপকেন্দ্রিক মাদক, ছিনতাই এবং ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশী অভিযান অব্যাহত থাকার ঘোষণা দেয়া হয়েছে সিএমপির পক্ষ থেকে। এছাড়াও পুলিশী নিরাপত্তা জোরদার, টহল বৃদ্ধি, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি এবং উর্ধতন কর্মকর্তা মনিটরিং করে প্রতিটি পূজামন্ডপে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ। সিএমপি কমিশনার কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছেন- যেন পূজা উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিটি পূজাম-পকেন্দ্রিক স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন ও টিমের সদস্যদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। মন্ডপে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় নিয়োজিতদের আইডি কার্ড অথবা নির্দিষ্ট টি-শার্ট পরিধান করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও পূজামন্ডপে দর্শনার্থী প্রবেশের সুবিধার্থে নারী ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা প্রবেশ ও বহির্গমন পথের ব্যবস্থা করা। এদিকে, পূজা উপলক্ষে পুলিশের পক্ষ থেকে ২৩৩টি পূজামন্ডপ কমিটির প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- প্রত্যেকটি প্রতিমা তৈরির সময় সেখানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে অবহিত করা। প্রতিটি পূজাম-পে পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক নিজস্ব নারী ও পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতে হবে কমিটিকে। পূজা কমিটি স্ব-স্ব উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে তাদের স্বাক্ষরিত নামের তালিকা ও মোবাইল নম্বর থানায় জমা দিতে হবে। প্রতি ৮ ঘণ্টা পরপর স্বেচ্ছাসেবক টিম পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়াও, স্বেচ্ছাসেবকদের চেনার সুবিধার্থে গেঞ্জি, ক্যাপ ও আর্মডব্যান্ড ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। অচেনাদের কাছ থেকে কোন কিছু না খেলে অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টি থেকে নিরাপদে থাকা যাবে। নির্দিষ্ট পার্কিং ব্যতীত যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কোন কিছু খাওয়া বা পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পূজা না শুরু হওয়া পর্যন্ত মার্কেটসমূহে নারী বান্ধব কেনাকাটার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে ব্যবসায়ী সমিতিকে। আবার পূজামন্ডপে আগত নারীরা যেন কোনভাবে লাঞ্ছিত না হয় সেদিকে পূজা কমিটিকে সজাগ থাকতে হবে। নারী দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও বাহিঃপথের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নামাজ ও আজানের সময় সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে। পূজা কমিটি নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব থাকলে নিজেরা অথবা মহানগর পূজা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে মীমাংসা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার সাহায্য নিতে হবে। পূজামন্ডপসমূহে পূজা কমিটির ব্যয়ে পর্যাপ্ত হ্যান্ড হেল্ড মেটাল ডিটেক্টর এবং বড় পূজামন্ডপে সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে। মন্ডপে বা আশপাশ এলাকায় নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ কিংবা মদ পান থেকে বিরত থাকতে হবে। আরও জানা গেছে, পূজামন্ডপ কমিটি কর্তৃক পূজাম-পসমূহে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। পূজামন্ডপে ফায়ার ইস্টিংগুশারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। পূজামন্ডপ ও এর আশপাশ এলাকায় এবং বিসর্জনস্থলে নিরাপত্তার স্বার্থে কোন প্রকার ব্যাগ, ব্যাগ সদৃশ্য বস্তু, টিফিন বক্স, প্রেসার কুকার ও দাহ্য পদার্থ নিয়ে প্রবেশ এবং অবস্থান করা যাবে না। প্রতিমা বিসর্জনের দিন থানা ভিত্তিক ১৫/২০টি পূজামন্ডপের প্রতিমা একত্রিত করে বিসর্জনের জন্য যেতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে হবে।
×