ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গারা বলছে ওরা নরঘাতক, বিশ্বাসঘাতক

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গারা বলছে ওরা নরঘাতক, বিশ্বাসঘাতক

চট্টগ্রাম অফিস/ কক্সবাজার প্রতিনিধি ॥ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাবিরোধী চলমান জ্বালাও পোড়াও ও গণহত্যার ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে তখন ২৫ দিনের মাথায় অর্থাৎ গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন সে দেশের ক্ষমতাসীন এনএলডি নেত্রী আউং সান সুচি। তার এ বক্তব্য একযোগে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মাঝেও ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বুধবার টেকনাফ থেকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে এবং বিভিন্ন ক্যাম্প ও শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে একযোগে দাবি করা হয়েছে মিয়ানমারের সেনা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং নরঘাতক এবং আউং সান সুচি বিশ্বাসঘাতক। কেননা, রাখাইন রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ সুচি বিশ্বকে যে বার্তা দিলেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। শুধু তাই নয়, তিনি তার বক্তব্যের কোথাও একবারও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি, বলেছেন রাখাইন মুসলমান। এতেই বুঝা যায়, সুচি কতটা রোহিঙ্গাবিদ্বেষী। অথচ সুচির পিতা আউং সানকে রোহিঙ্গারা সর্বোতভাবে সমর্থন দিয়েছিল। পরবর্তীতে সুচির মুক্তি এবং নির্বাচনে জয়ী হতে রোহিঙ্গাদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। কিন্তু রোহিঙ্গাদের নিধনে সে দেশের সামরিক জান্তা প্রধান যখন গণহত্যার উৎসবে মেতে উঠেছেন, তখন জান্তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি কথা বলছেন। সঙ্গত কারণে তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাই করেছেন। এক কথায় আশ্রিত রোহিঙ্গা নেতা ও সাধারণ রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, জান্তা বাহিনীর প্রধান গণহত্যার নায়ক এবং সুচি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে সর্বশেষ নজির স্থাপন করেছেন। রোহিঙ্গাদের পক্ষে আরও বলা হচ্ছে, সুচির বক্তব্যকে যেসব দেশ ইতোমধ্যে ইতিবাচক বলে বর্ণনা করেছেন সেসব দেশের ভূমিকা বরাবরই শুরু থেকে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের প্রতি সমর্থন যোগাতে লক্ষণীয় ছিল। অসহায় রোহিঙ্গাদের নিধন ও তাদের ওপর বর্বরতম সেনা আচরণের ঘটনা সারাবিশ্বে এখন প্রতিষ্ঠিত একটি সত্য হলেও মিয়ানমার সরকার ও জান্তা বাহিনী এ নিয়ে ভাওতাভাজি করে যাচ্ছে বলেও রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে বুধবার দাবি করা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পক্ষে সুচির সর্বশেষ বক্তব্যের প্রতিবাদে তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্তকারীদের মধ্যে রয়েছেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক উখিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ সিকদার। উখিয়া উপজেলা মানবাধিকার কর্মী ও কৃষক লীগ নেতা মোসলেহ উদ্দিন, মানবপাচার প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও এনজিও হেল্প কক্সবাজারের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা : আশিক উল্লাহ, মোঃ আতাউল্লাহ, নুর কামাল, আমির হোছন, কলিম উল্লাহ, মোঃ রফিক টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের রোহিঙ্গা আমান উল্লাহ, মোঃ আমিন, কামাল হোছন, আলী জোহার, সানা উল্লাহ, মোঃ আরিফ, মজিদ আহমদ, আরফান উল্লাহ, মোঃ ঈশাহ, ইকতার মিয়া, মোঃ আজিজ, মমতাজ আহমদ ও উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা মোঃ ইব্রাহিম, আলী আকবর, রফিক উল্লাহ, মোঃ ওসমান, করিম উল্লাহ, জাহেদ আলম, জহির উল্লøাহ, আরেফ আহমদ, মোঃ ছফি ও মোঃ জুবাইর।
×