ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

হোয়াইট হাউসের বিবৃতি

জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহারে অনড় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহারে অনড় যুক্তরাষ্ট্র

নিজেদের অবস্থান নমনীয় করতে পারে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়া সত্ত্বেও প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার কানাডার মন্ট্রিয়লে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ৩০টিরও বেশি দেশের মন্ত্রীদের এক বৈঠকে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু একই দিন হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জানিয়ে দেয়, তারা চুক্তিটি থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। খবর বিসিসি ও সিএনএনের। এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্লাইমেট এ্যাকশন ও এনার্জি কমিশনার মিগুয়েল আরিয়াস কানেতির উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্র্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে সরে আসবে না এবং চুক্তিটিতে আবার যুক্ত হতে প্রস্তুত। কিন্তু মন্ট্র্রিয়লে কমিশনের এক মুখপাত্র জানান, জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছে এমন কোন কথা কানেতি বলেননি। অপরদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রতিবেদনটি ভুল ছিল। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র লিন্ডসে ওয়াল্টার বলেছেন, ‘প্যারিস চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, চুক্তির শর্তগুলো যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অনুকূল না হওয়া পর্যন্ত এ থেকে দূরে থাকবে আমাদের দেশ।’ জুনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্রাম্প ঘোষণা করেন, ২০১৫ সালের ওই বিশ্ব জলবায়ু চুক্তি থেকে তার দেশকে সরিয়ে নেবেন তিনি। এই চুক্তি মানলে যুক্তরাষ্ট্র্রের অর্থনীতি ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব ক্ষতিগস্ত হবে বলে যুক্তি দেখান তিনি। ট্র্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং বিশ্বনেতারা তার এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান। মন্ট্রিয়েলের বৈঠকে যোগ দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের প্রধান এভার্ট এইসেনস্টাট বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। শনিবার সকালে কানেতি বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলেছে, তারা প্যারিস চুক্তি পুনর্বিবেচনা করতে চাপ দেবে না, কিন্তু এর সঙ্গে কিভাবে পুনর্যুক্ত হওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করবে।’ আগস্টে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে জাতিসংঘে পেশ করা চিঠিতেও একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বলেছিল, চুক্তির শর্তগুলো অনুকূল হলে তারা এতে যোগ দেয়ার জন্য তৈরি থাকবে। চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২০২০ সালের নবেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ট্রিয়েলের বৈঠকে যোগ দেয়া বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, এই সময়ের মধ্যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র যোগদান অব্যাহত রাখবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বৈশ্বিক উষ্ণতার বৃদ্ধি ২ ডিগ্রীর নিচে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং প্রস্তাবে সম্মত প্রায় দুইশ’ দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে। মন্ট্র্রিয়েলের বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরাও চুক্তির শর্তের প্রতি নিজেদের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
×