ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান

সংসদে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস ॥ রোহিঙ্গা ফেরাতে চাপ দিন

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সংসদে সর্বসম্মত প্রস্তাব পাস ॥ রোহিঙ্গা ফেরাতে চাপ দিন

সংসদ রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব অধিকার ও নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণে মিয়ানমার সরকারের ওপর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে আনীত সাধারণ প্রস্তাব সোমবার জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে। সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা অভিন্ন কণ্ঠে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কোফি আনান কমিশনের রিপোর্ট পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন। মিয়ানমারকে বর্বর রাষ্ট্র আখ্যায়িত করে জাতিসংঘ শান্তি বাহিনীর মাধ্যমে দেশটিতে সেফ জোন তৈরি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ গণহত্যার শামিল। তারা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। তাই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের অধিকার দিয়ে নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের ওপর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োজন। যাতে তাদের নাগরিক ফেরত নিতে মিয়ানমার সরকার বাধ্য হয়। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলমান বলে জায়গা দেননি, মানুষ হিসেবে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে দেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তাই এই ইস্যুতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের দেশের জঙ্গী গোষ্ঠীরা এসব রোহিঙ্গাকে তাদের ফায়দা হাসিলে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্যও সরকারকে তাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় সাধারণ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সরকারী দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, এ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, ড. হাছান মাহমুদ, মেজর জেনারেল (অব) এটিএম আবদুল ওয়াহহাব, সাইমুন সারোয়ার কমল, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল, শিরীন আক্তার, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভা-ারী ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম। সরকার ও বিরোধী দলের সরব অংশগ্রহণে দীর্ঘ আলোচনা শেষে স্পীকার প্রস্তাবটি ভোটে দিলে তা সংসদে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতক্রমে গৃহীত হয়। নেতারা যা বলেন ॥ আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর বর্বরতা সারাবিশ্বকে স্তম্ভিত করেছে। অবিলম্বে এই অমানবিক অত্যাচার বন্ধ করতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। রোহিঙ্গাদের ¯স্রোতে অনেক সন্ত্রাসী, অস্ত্র ও মাদক চলে আসতে পারে। এ বিষয়ে সরকারকে কঠোর নজরদারি করতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে সারাদেশে ছড়িয়ে না পড়তে পারে, তাদের এক জায়গায় রাখা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যতদিন রোহিঙ্গারা থাকবে ততদিন সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, অনেকেই এটা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। সেই সুযোগ দেয়া যাবে না। দেশের স্বার্থেই ঐক্যবদ্ধভাবে এ সঙ্কট মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে। আর জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কোফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এগিয়ে আসতে হবে। রোহিঙ্গাদের মুসলমান হিসেবে নয়, আমরা মানুষ হিসেবে তাদের জায়গা দিয়েছি। মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। তবে আমরা কাউকে ভয় পাই না। শান্তির জন্য নোবেল পাওয়া নেত্রী আউং সান সুচি কীভাবে এত অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে? ভারত ও চীনকেও এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট নির্যাতন-হত্যার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। স্বার্থান্বেষী এ অঞ্চলে শান্তি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই এশিয়ার দেশগুলোকে এ অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগে এগিয়ে আসতে হবে। মিয়ানমার ইসলামের জুজুর ভয় দেখালেও প্রতিবেশীদের প্রকৃত অবস্থা জেনেই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাখ লাখ শরণার্থীকে সাময়িক আশ্রয় দিয়ে ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছেন। বাংলাদেশ আশা করে কোফি আনানের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন করে এ অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত এবং গণহত্যার দায়ে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি করা হোক। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব কোফি আনান রিপোর্ট জমা দেয়ার পর থেকেই মিয়ানমারে এথনিক ক্লিনজিং শুরু হয়। একাত্তরের মতোই মিয়ামনার থেকে স্রোতের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বঙ্গবন্ধুর মতোই তাঁর কন্যা শেখ হাসিনারও কমল হৃদয়। কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে আমরা এ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ মিয়ানমারে গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। যিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনি কীভাবে এমন সহিংসতা চালান। বিএনপি এটি নিয়ে রাজনীতি করতে চায়, দলটির একজন নেতাও দুর্গত এলাকায় যাননি। জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় গত তিন সপ্তাহে তিন লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এই অমানবিক ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানে মিয়ানমারের সঙ্গে জোর কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বহুমুখী কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছি। কোফি আনানের রিপোর্ট সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনেও এ ইস্যুটি জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হবে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে নিয়মিতভাবে বিষয়গুলো তুলে ধরা হচ্ছে। গোটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং মিয়ানমার সরকারের সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, একাত্তরের মতোই মিয়ানমারে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। শান্তিতে নোবেল নিয়ে আউং সান সুচি দেশটিতে অশান্তির তা-ব চালাচ্ছেন। আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করে মিয়ানমার সরকারকে সব রোহিঙ্গাকে ফেরত নিতে বাধ্য করতে হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক পদক্ষেপে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করছেন। আর রোহিঙ্গাদের যাতে কেউ রাজনৈতিক কর্মকা-ে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকেও সচেতন থাকতে হবে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বন্যার পর বাংলাদেশের ওপর নতুন দুর্যোগ নেমে এসেছে। সেই দুর্যোগটি হচ্ছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ। মিয়ানমারে সহিংসতা নয়, পরিকল্পিত এথনিক ক্লিনজিং চলছে। একাত্তর সালেও পাকিস্তানের গণহত্যা থেকে বাঁচতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আমাদের কোটি কোটি মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। বর্তমানে মিয়ানমারের অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ। শান্তিতে নোবেল নিলেও আউং সান সুচিও এ বিষয়ে মিথ্যাচার করছেন। রোহিঙ্গাদের এই আশ্রয় হবে সাময়িক, মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিতেই হবে। প্রস্তাব উত্থাপন করে ডাঃ দীপু মনি বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়ন চরম আকার ধারণ করায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আশ্রয় নিয়েছে। বাঙালী অজুহাতে এদের কেবল বিতাড়িত করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তাদের প্রতিটি বাড়ি-ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিচ্ছে যাতে তারা আর কখনই নিজ ভূমিতে ফিরতে না পারে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই নৃশংস, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্মূল অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের অধিকার দিয়ে নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী। এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকরের ওপর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োজন। ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর মিয়ানমারের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি থেকে উচ্ছেদ করতেই সেখানে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। চরম মানবাধিকার লংঘন করে চলেছে রাষ্ট্রটি। আনানের তদন্ত রিপোর্টেও তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কষ্টকর হলেও মানবিকতার কারণেই প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। বিশ্ববিবেককে জাগ্রত করে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি রাখাইনে নিরাপদ আশ্রয়স্থলের জন্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু বলেন, বিশ্ব বিবেককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে এ ইস্যুতে দ্বিচারিতা বন্ধ করতে হবে। মিয়ানমারে যে নৃশংসতা চলছে তা অন্ধকার যুগেও হয়নি। সেখানে নির্বিচারে জেনোসাইড চলছে। প্রধানমন্ত্রী মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে শরণার্থীদের আশ্রয় দিলেও বিএনপি এটা নিয়েও রাজনীতি করছে। জাসদের মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, সারাবিশ্ব অবাক বিস্ময়ে দুই নারীর পরস্পরবিরোধী অবস্থান দেখছেন। এক নারী (আউং সান সুচি) শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নিষ্ঠুর বর্বরতার কর্মকান্ড- দেখছেন, আরেক নারী (শেখ হাসিনা) মানবিক বিবেচনায় ৫ লাখ লোক নেয়ার জন্য বুক পেতে দিয়েছেন। মুসলমান বলে আমরা জায়গা দিইনি, মানুষ হিসেবে জায়গা দিয়েছি। সারাবিশ্বকে জানাতে হবে, আমাদের জাতি গোষ্ঠী হিসেবে নয়, রোহিঙ্গারা ভিন্ন জাতি গোষ্ঠী। এ ধরনের ইস্যুতে গোটা বিশ্বকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিজ মাতৃভূমিতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জন্য সেফ জোন করা হোক। তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অমানবিক। সম্পূর্ণ মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাময়িক আশ্রয় দেয়ায় বিশ্ববাসী তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বঙ্গবন্ধুর কন্যা কত বড় মনের অধিকারী তা আবারও প্রমাণ হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই শান্তিতে নোবেল পাবেন এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আর রোহিঙ্গাদের নামে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছে সে পাকিস্তানের নাগরিক। জঙ্গী গোষ্ঠীরা আরাকান থেকে আসা অনেককে দলে ভেড়াচ্ছেন। তাই শরণার্থীদের কঠোর নজরদারিতে রাখতে হবে। ডাঃ হাছান মাহমুদ বলেন, আরাকানে রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর নৃশংসতা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। মিথ্যাচারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বলা হচ্ছে বাঙালী সন্ত্রাসী। অথচ ঐতিহাসিকভাবেই রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক, অধিবাসী। বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এরপরও প্রধানমন্ত্রী লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। সারা পৃথিবী শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেও বিএনপি নোংরা রাজনীতি করছে। জাসদের শিরীন আক্তার বলেন, বিএনপি এ ইস্যুতে অপরাজনীতি করার চেষ্টা করছে। জঙ্গী, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আর বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারকেই ফেরত নিতে হবে। আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, জাতিসংঘ দ্রুতই এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করবে। কক্সবাজারের সংসদ সদস্য সাইমুন সারোয়ার কমল বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকায় মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের বীভৎস্য-অমানবিক অবস্থা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। গোটা নাফ নদী রোহিঙ্গাদের রক্তে লাল হয়ে গেছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের কোন বাড়িঘর নেই, সব জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশেও তো জঙ্গীরা বারবার হামলা করেছে, কিন্তু আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তো জঙ্গীদের নামে সাধারণ মানুষকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করেনি। আউং সান সুচির আর শান্তির নোবেল কাছে রাখার কোন অধিকার নেই। গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমার সরকারের বিচার হওয়া উচিত।
×