ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

এবার পেসারদের পালা

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এবার পেসারদের পালা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ উপমহাদেশে খেলা মানেই স্পিন জাদু দেখা। তাতে করে স্পিননির্ভর দলই হয়। স্পিনারদের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু উপমহাদেশের বাইরে খেলা মানেই গতির ঝড় ওঠে। তখন পেসনির্ভর দলই হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের আসন্ন সিরিজেও যেমন তাই হচ্ছে। পাঁচ পেসার থাকছে দলে। বোঝাই যাচ্ছে এবার পেসারদের পালা। পেসারদেরই যা করার করতে হবে। তাদের দিকেই আসল নজর থাকবে। এই মাসের ১৬ অথবা ১৭ তারিখেই দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সেখানে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট, তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলবে। এই মাসের ২৮ তারিখেই সিরিজ শুরু হবে। সেদিন পোচেফস্ট্রমে প্রথম টেস্ট দিয়ে সিরিজ শুরু হবে। এরপর ৬ অক্টোবর ব্লুমফন্টেইনে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে। টেস্ট সিরিজ শেষে ১৫ অক্টোবর প্রথম, ১৮ অক্টোবর দ্বিতীয়, ২২ অক্টোবর তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২৬ অক্টোবর প্রথম ও ২৯ অক্টোবর দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচটি দিয়েই মূলত পূর্ণাঙ্গ সিরিজের মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ দল। এরপর ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগেও ১২ অক্টোবর একদিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন মাশরাফি, সাকিব, মুশফিক, তামিমরা। দুই ম্যাচেরই প্রতিপক্ষ দলটি হচ্ছে সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) আমন্ত্রিত একাদশ। বাংলাদেশ সময় দুপুর দুইটা থেকে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজের ম্যাচগুলো শুরু হবে। প্রথম টি২০ ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়। আর দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। ২০০৮ সালের পর প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকায় পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট মানেই গতির ঝড় উঠবে। সেখানে স্পিনাররা উইকেট থেকে সুবিধা কমই পাবেন। পেসারদেরই আসল পরীক্ষা হবে। আর তাইতো মুস্তাফিজুুুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলামের সঙ্গে রুবেল হোসেন ও কামরুল ইসলাম রাব্বিকে দেখা যেতে পারে। তিন পেসার নিয়ে যে একাদশ গড়া হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটই যে পেসনির্ভর থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দেশের মাটিতে হওয়া সিরিজে দলে তিন পেসার ছিল। স্পিনারনির্ভর দলই ছিল। উইকেট যে স্পিনারদের পক্ষেই ছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে পাঁচ পেসার থাকবে। পেসারদের দিকেই যে সব নজর থাকবে তা বুঝিয়ে দেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুই। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেশে থাকলে একরকম ক্রিকেট খেলি। আবার বাইরে গেলে আরেক রকম ক্রিকেট খেলতে হয়। সেভাবেই চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য দলে পাঁচজন পেসার রাখা হবে। সঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার এবং বাকি আটজন ব্যাটসম্যান।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার পর বিশ্রাম না নিয়েই পেসারদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন পেস বোলিং কোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার কোর্টনি ওয়ালশ। পেস বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে চলছে অনুশীলন। ওয়ালশের নিবিড় তত্ত্বাবধানে বোলিং অনুশীলন করছেন বাংলাদেশের পেসাররা। এক এক করে সবার ভুল শুধরে দিচ্ছেন পেস বোলিং কোচ। দেখছেন মনোযোগ দিয়ে বোলিং ডেলিভারি। তার আনুকূল্যেই বেশ কয়েক ঘণ্টা নেটে ঘাম ঝরাচ্ছেন পেসাররা। পেস বোলিং কোচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি পেসার কোর্টনি ওয়ালশও পেসারদের দিকেই তাকিয়ে আছেন। বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পেসাররা ভাল করবে। কারণ ওখানকার উইকেটগুলো ভিন্ন।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় বোলারদের ভাল করাটা চ্যালেঞ্জ হবে। বোলারদের সিমিং কন্ডিশনের জন্য গড়ে তোলার মতো সময় এখন নেই। টেস্ট শেষে তাই আগেভাগেই তাদের নিয়ে নেমে পড়েছি। আশা করব অসিদের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের বিপর্যয় ভুলে ব্যাটসম্যানরাও আফ্রিকা সফরে ভাল করবে। কেননা এই সফরটা ব্যাটসম্যানদের জন্যও অনেক কঠিন।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে এক ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া মুস্তাফিজ যে ছন্দে ফিরেছেন তাও জানিয়ে দিয়েছেন ওয়ালশ। বলেছেন, ‘পরপর দুই ইনিংসে ওয়ার্নারের মতো ব্যাটসম্যানকে আউট করে মুস্তাফিজ প্রমাণ করেছে সে এখনও বিশেষ প্রতিভা। সবচেয়ে বড় কথা ওর মুখে হাসি ফুটেছে। এটা অনেক স্বস্তির। মুস্তাফিজ ধারাবাহিক হতে শুরু করেছে।’ সেই ধারাবাহিকতা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও থাকবে সেই আশা করাই যায়। পেসারদের জন্য যে সহায়ক উইকেট মিলবে।
×