ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ডোমারে গৃহকর্তাকে হত্যা করে ডাকাতি

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ডোমারে গৃহকর্তাকে  হত্যা করে ডাকাতি

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ অতুল চন্দ্র রায় (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ওই বৃদ্ধের বাড়িতে ডাকাতি করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার দুপুর হতে সন্ধ্যার মধ্যে নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নয়ানী বাগডোগড়া গ্রামে এই ঘটনাটি ঘটলেও এটি প্রকাশ পায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে। নিহত বৃদ্ধ ওই গ্রামের মৃত বিষ্টুরাম রায়ের ছেলে। দুর্বৃত্তরা ওই বাড়ির আসবাবপত্র তছনছ করে ৬৪ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যায়। ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশসহ শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পুলিশ রাতেই মরদেহ উদ্ধার এবং শুক্রবার জেলার মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করেছে। জানা যায়, অতুল চন্দ্র রায়ের ছেলে বিপুল চন্দ্র রায় দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকে। গত এক বছর আগে সে দেশে ফিরে ডিমলা উপজেলার ডালিয়া গ্রামে সুমতিরানী রায়ের সঙ্গে বিয়ে হয়। তার আগে বিপুল চন্দ্র রায় নিজ গ্রামে সীমানা প্রাচীর ঘেরা পাকা বিল্ডিংবাড়ি নির্মাণ করে। গ্রামের এক কোনে নির্জন স্থানে এই বাড়ি। বিপুল পুনরায় দক্ষিণ কোরিয়া ফিরে গেলে বাড়িতে তার নববিবাহিত স্ত্রী, বাবা ও মা থাকত। এলাকাবাসী জানায়, ভাদর কাটানী উৎসবে বিপুল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী সুমতি রানী রায় বাবার বাড়ি যায়। নিয়ম অনুযায়ী পুত্রবধূকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে বৃহস্পতিবার সকালে ডিমলার ডালিয়া যায় বিপুলের মা দেবো রানী রায়। এই দিন বিকেলে পুত্রবধূ নিয়ে তার বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল। এ সময় বাড়িতে একাই ছিল বিপুলের বৃদ্ধ বাবা অতুল চন্দ্র রায়। কিন্তু ওইদিন সন্ধ্যায় পুত্রবধূর বাড়ি হতে মোবাইলে বিপুলের মা দেবো রানী রায় একই গ্রামের অদূরে মাষ্টারপাড়া গ্রামের তার মেয়ে দিপালী রানীর ছেলে অর্থাৎ নাতী সুমন চন্দ্র রায়কে (১৫) জানায় তিনি আজ বাড়ি ফিরবে না। তাই সুমন যেন রাতে তার নানার সঙ্গে যেন থাকে। এ ব্যাপারে সুমন চন্দ্র রায় বলেন, নানীর মোবাইল পেয়ে সে রাত আটটার দিকে নানার সঙ্গে ঘুমানোর জন্য সেখানে যায়। নানা বাড়ির বাইরের দরজা বন্ধ দেখে সে নানাকে চিৎকার করে ডাকাডাকি করতে থাকে। কিন্তু নানার কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে সে বাড়ির সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে। এরপর সে দেখতে পায় বাড়ির সব দরজা জানাজা খোলা, ঘরের আসবাবপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। ঘরের ভেতরে গিয়ে দেখে তার নানা অতুল চন্দ্র রায় মুখে টেপ ও হাত পা শাড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। এরপর সে বাড়ির প্রধান দরজা খুলে গ্রামবাসীকে হাকডাক দিয়ে নিয়ে আসে। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় তার নানার মুখের টেপ ও হাত পায়ের বাঁধন খুলে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে দেখে তার নানা আগেই মারা গেছে।
×