ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

রেকর্ড অর্থ ছাড়ে বছর শুরু

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ২৫ আগস্ট ২০১৭

রেকর্ড অর্থ ছাড়ে বছর শুরু

আনোয়ার রোজেন ॥ বিদেশী সহায়তার অর্থ ছাড়ের রেকর্ড দিয়ে শুরু হয়েছে চলতি অর্থবছর। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ৩৭ কোটি মার্কিন ডলার অর্থ ছাড় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশী ঋণ সহায়তার অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ছিল মাত্র ১২ কোটি ২৩ লাখ ডলার। এ হিসেবে তিন গুণ বেশি অর্থ ছাড় হয়েছে। বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে হালনাগাদ এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাইয়ে ঋণ ও অনুদান মিলে মোট ছাড় হয়েছে ৩৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার। এ অর্থ ছাড়ের পরিমাণ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ কোটি ৫৯ লাখ ডলার বেশি। ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের ১ জুলাই গুলশান হামলার পর বিদেশী সহায়তা ছাড়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় গত এক বছরে সেই অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। দেশে এখন অনেকগুলো মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে এবার সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। অর্থ ছাড়ের এ হার অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত থাকবে বলে আশা করছেন তারা। গত অর্থবছরের শেষ সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে বিদেশী সহায়তার পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় বাড়বে। কারণ, গুলশান হামলার কারণে বিদেশীদের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাপুষ্ট সব প্রকল্পের কাজ থমকে গিয়েছিল। সরকারের নানামুখী প্রচেষ্টায় আশ্বস্ত হয়ে বিদেশীরা ফিরে এসেছেন। চলতি অর্থবছরে এসব প্রকল্পের কাজে গতি বাড়বে। ফলে বিদেশী সহায়তার ছাড়ের পরিমাণও বাড়বে। সূত্র জানায়, জুলাই মাসে মোট বৈদেশিক অর্থ ছাড়ের মধ্যে ঋণ হিসাবে ছাড় হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। এ সময়ে অনুদান ছাড়ের পরিমাণ ১৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১২ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, আর অনুদান ছাড় হয় ১৫ লাখ ডলারের। তবে জুলাই মাসে দাতাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি আদায় করা সম্ভব হয়নি বলে জানান ইআরডি কর্মকর্তারা। এ সময়ে মাত্র ৩ কোটি ২৭ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দাতারা। আর এ প্রতিশ্রুতি মিলেছে অনুদান হিসাবে। যদিও গত অর্থবছরের প্রথম মাসেই ১ হাজার ১৬৭ কোটি ৯১ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল ইআরডি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে ১ হাজার ১৩৩ কোটি ডলারের চুক্তি সই হওয়ায় প্রতিশ্রতির পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। ইআরডির কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে মোট ৫৫৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে দাতাদের কাছ থেকে ৪১৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের লক্ষ্য ছিল সরকারের। কিন্তু প্রাথমিক হিসাবে এখন পর্যন্ত দাতাদের অর্থ ছাড় হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৬১ লাখ ডলার। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দাতাদের অর্থ ছাড় হয় ৩৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
×