ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কিম জং উন বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৮ আগস্ট ২০১৭

কিম জং উন বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা স্থগিত করার পরিকল্পনাকে বিচক্ষণ ও যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত বলে প্রশংসা করেছেন। এবিসি নিউজ। এ মাসের শুরু থেকে উত্তর কোরিয়া প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত দ্বীপ গুয়ামে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরিকল্পনার কথা জানানোর পর হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করেছেন নেতা কিম জং উন। পরিকল্পনাটি তিনি পর্যবেক্ষণও করেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হয় তা আরও কিছু সময় নিয়ে দেখার পরই তিনি নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। কিমের এ সিদ্ধান্তে খুব খুশি হয়েই তার পদক্ষেপের জন্য এই প্রশংসা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন খুবই বিচক্ষণ এবং অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যথায় তার সিদ্ধান্ত বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনত আর তা মেনেও নেয়া যেত না। উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোসহ চীনের অনুরোধ উপেক্ষা করে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আসছে। জুলাইয়ে দুইটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে দেশটির ওপর নতুন করে কঠোর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ। এতে ক্ষুব্ধ উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটনকে ‘চূড়ান্ত সতর্ক বার্তা’ দিতে আগস্টের শুরুতে গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। গুয়াম যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘাঁটি। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর যৌথ ঘাঁটি এটি। উত্তর কোরিয়া সেখানে হামলার হুমকি দিয়ে বলেছে, কোন যুদ্ধ শুরু হলে সেটি হবে পারমাণবিক যুদ্ধ। উত্তর কোরিয়ার গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র মাত্র ১৪ মিনিটেই আঘাত হানতে পারবে বলেই জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার হুমকি দেয়ার পরপরই এর জবাবে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গুলিভরা বন্দুক তাক করে আছে। গুয়ামের কিছু হলে উত্তর কোরিয়াকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে। তারপরই উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম তার সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে আসার কথা জানানোয় তার প্রশংসা করলেন ট্রাম্প। এর আগে নিউজার্সিতে অবকাশ যাপনকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি তার আগের বক্তব্যে অটল রয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। আমি আশা করছি তারা আমার কথার মাধ্যমে পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পূর্ণরূপে অনুধাবন করতে পেরেছে। আমাকে বিশ্বাস করুন, এই লোক (উন) যা করছে, তাতে সে পার পাবে না। দুই দেশের এই কথার লড়াইয়ে এরই মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলোর নেতারা। রাশিয়া মনে করে, এর ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ার মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সম্প্রতি বলেছেন, পরিস্থিতি যখন এমন দাঁড়ায় যে যে কোন সময় বিস্ফোরণ ঘটবে তখন আমি মনে করি পরিস্থিতি শান্ত করবার প্রথম উদ্যোগটা নিতে হয় তাকে যিনি শক্তিশালী এবং চটপটে। লাভরভ স্পষ্টতই এখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করছেন শান্তি স্থাপনের প্রথম পদক্ষেপ নেয়ার জন্য। জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেছেন, তিনি মনে করেন তীব্র কথার লড়াই চলছে সেটি তার দৃষ্টিতে ভুল জবাব। চীন উভয়পক্ষকে শব্দ চয়নের বিষয়ে সতর্ক হবার আহ্বান জানিয়েছে ।
×