ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

এবার মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুত গ্রিড নির্মাণের প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১৬ আগস্ট ২০১৭

এবার মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুত গ্রিড নির্মাণের প্রস্তাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারতের পর এবার মিয়ানমারের সঙ্গে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুত গ্রিড নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এ সময় প্রতিবেশী দেশটি থেকে গ্যাস কেনার প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে। সোমবার মিয়ানমার সফররত বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী ইউ উইং খাইং এর সঙ্গে বৈঠকে ওই প্রস্তাব দেয়। বিদ্যুত বিভাগের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার বিকেলে জানানো হয়, মিয়ানমার আলোচনার পর বাংলাদেশে বিদ্যুত বিক্রি করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এজন্য দেশটির পক্ষ থেকে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনের বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি গ্যাস সেক্টর মাস্টার প্ল্যানের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ভবিষ্যত জ্বালানি সরবরাহ নির্বিঘœ করতে মিয়ানমারের কাছ থেকে গ্যাস ক্রয়ের সুপারিশ করা হয়েছে। মিয়ানমার বাংলাদেশের চেয়ে সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে এগিয়ে রয়েছে। সাগরে বেশ কয়েকটি ব্লকে গ্যাস পাওয়ায় দেশটি জ্বালানি সরবরাহর দিক দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। চীন ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে গ্যাস আমদানি করছে ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপ লাইনের প্রস্তাব বাংলাদেশ গ্রহণ করলে এ সুবিধা আগে থেকেই পাওয়া যেত। গত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় মিয়ানমার-বাংলাদেশ-ভারত ত্রিদেশীয় গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে ওই সময় এই পাইপ লাইন দিয়ে ভারত বাংলাদেশের গ্যাস নিয়ে যাবে এমন ভ্রান্ত ধারণায় বাংলাদেশ প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এতে করে আর পাইপ লাইন নির্মাণের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডতে বিদ্যুত ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সোমবার বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। অপরদিকে বৈঠকে মিয়ানমারের জ্বালানিমন্ত্রী ইউ উইং খাইংসহ সাতজন প্রতিনিধি অংশ নেন। মিয়ানমারের বিদ্যুত ও জ্বালানি উপমন্ত্রী ড. তুন লাইং এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নসরুল হামিদ বলেন, বিদ্যুতও জ্বালানি সহযোগিতা বৃদ্ধি সম্ভব হলে উভয় দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি আরও মজবুত হবে। সমুদ্র সীমানার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য মিয়ানমারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেতু-বন্ধন হতে পারে। পাওয়ার শেয়ারিং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে। বৈঠকে মিয়ানমারকে বাংলাদেশে বিদ্যুত ও গ্যাস রফতানি করার প্রস্তাব দেয়া হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমার-বাংলাদেশ আন্তঃদেশীয় সংযোগ নির্মাণ করা সম্ভব। ইতোমধ্যে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুত আমদানি করছে। যা এ অঞ্চলের বিদ্যুত জ্বালানি সরবরাহের একটি বড় উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়। মিয়ানমারে জলবিদ্যুত উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরে মিয়ানমার চাইলে গ্যাস চালিত বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে পারে। বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তে অবশ্য সারকারখানা নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে অনেক দিন থেকে আলোচনা হচ্ছে। এ প্রকল্পতে গ্যাস সরবরাহ করার কথা মিয়ানমারের। আর উৎপাদিত সার ব্যবহার করার কথা দুই দেশের। বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার একটি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে এ ধরনের কমিটি রয়েছে। ওই কমিটি আলোচনা করে দুই দেশের সম্ভাবনাময় খাত নির্ধারণ করার পাশাপাশি কর্মপন্থা নির্ধারণ করে। পরে দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয় চূড়ান্ত করা হয়।
×