স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে তিস্তা, ধরলা, পুনর্ভবা, ব্রহ্মপুত্রসহ দেশের বেশ কয়েকটি নদী ফুলে ফেঁপে ওঠে ভয়াবহ বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে উল্লেখ করে এ জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি এখন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। এর উপর তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের গেটগুলো খুলে দেয়ার ফলে তিস্তা নদীর পানি এখন বিপদসীমার সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
খালেদা জিয়া বলেন, বন্যার কারণে বাংলাদেশের সীমানার ভেতরে তিস্তাসহ উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি নদীর দুই তীরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল, বসতবাড়ি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং মানুষের জীবন-জীবিকা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া অন্যান্য নদীর উজানের দিক থেকে ধেয়ে আসা প্রবল পানির স্রোতে দেশের ব্যাপক এলাকা এখন পানির নিচে। হু হু করে বয়ে আসা বন্যার পানিতে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটের নদীসংলগ্ন এলাকাগুলোই শুধু নয়, জেলা শহরগুলোও তলিয়ে যাচ্ছে। শহরের পাকা রাস্তাতেও কোমর পানি ডিঙ্গিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, বন্যা উপদ্রুত মানুষ ঘর-বাড়ি- জোত-জমি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। অথচ বন্যার ভয়াবহ পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। নেই কোন জরুরী ত্রাণ তৎপরতা। বন্যাদুর্গত মানুষকে নিরাপদে উঁচু জায়গায় সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়নি। রংপুর বিভাগের অনেক এলাকার অসহায় মানুষ বন্যার তা-বে সর্বস্ব খুইয়ে হাহাকার করছে।
খালেদা জিয়া বলেন, সরকারের লিপ সার্ভিস ছাড়া এই ভয়াবহ বন্যা মোকাবেলায় বাস্তব কোন সার্ভিস নেই। জনগণকে উপেক্ষা করে ক্ষমতায় থাকাটাই বর্তমান সরকারের যেহেতু উদ্দেশ্য, তাই জনদুর্ভোগকে তারা কখনই আমলে নেয় না। অতিসম্প্রতি হাওড়ে বন্যা ও পাহাড় ধসে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি হওয়ার পরও পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় আশ্রয়হীন, ক্ষুধার্ত মানুষকে সহায়তা দিতে সরকার তাৎক্ষণিক প্রস্তুতি গ্রহণে কোন ধরনের মনোযোগ দেয়নি। যার কারণে বর্তমান বন্যার তা-বে উপদ্রুত মানুষ এক চরম সঙ্কটের মধ্যে নিপতিত হয়েছে।