ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বি’বাড়িয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবক নিহত

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১১ আগস্ট ২০১৭

বি’বাড়িয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবক নিহত

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মেজবাহ উদ্দিন মামুন (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, মামুন চিহ্নিত ডাকাত। তবে পরিবারের দাবি, তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার রাত ২টায় উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের তন্তর এলাকায় তার বাড়ির পাশেই কথিত এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত মামুন উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের মৃত শফিউদ্দিন মিয়ার ছেলে। পুলিশ জানায়, বুধবার দুপুর তিনটায় জেলার নবীনগর উপজেলা থেকে মামুনকে গ্রেফতার করে সরাইল থানায় নিয়ে আসা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি দা ও দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে, রাতে সরাইল উপজেলার দেওড়া গ্রামে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যায় পুলিশ। পথিমথ্যে তন্তর এলাকায় মামুনের ২০/২৫ জন সহযোগী অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ৩০/৪০ রাউন্ড গুলি চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ১৬ রাউন্ড পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে মামুনের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশের এসআই অহিদুর রহমান, কন্সটেবল শাহাদাত, নিজাম, ও আজিজ আহত হয়। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনার পরপরই মামুনের সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, দুই রাউন্ড গুলি, ৮ রাউন্ড গুলির খোসা ও একটি রামদা এবং একটি বল্লম ও স্ক্রু ডাইভার উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসলাম শিকদার জানান, গত মঙ্গলবার মামুনকে নবীনগর থেকে আটক করা হয়। ওই রাতেই তাকে সরাইল থানা পুলিশের নিকট দিয়ে দেয়া হয়। এদিকে নিহতের স্ত্রী তানিয়া বেগম লাশ ঘরের সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার স্বামী মামুন চট্টগ্রামে জুতার দোকানে কাজ করত। তার এক বন্ধুর সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে ২ দিন পূর্বে জেলার নবীনগরে বেড়াতে আসে। সেখানে অপরিচিত হওয়ায় পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পুলিশ আমার সঙ্গে কথা বলে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। পরে জানতে পারি নবীনগর থানা পুলিশ সরাইল থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। আমার ভাসুর দাগন চৌধুরী বুধবার বিকেলে তাকে থানায় দেখে আসে। বৃহস্পতিবার ভোরে দেওড়া গ্রামের লোকজন জানায়, রাতে আমার স্বামীকে ওই গ্রামে এনে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে থানা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে জেলা সদর হাসপাতালে খোঁজ নিতে বলে। এখানে এসে আমার স্বামীর লাশ দেখতে পাই। একটি ছিনতাইয়ের সন্দেহমূলক মামলায় সে জামিনে রয়েছে। সে নিরপরাধ। তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমার স্বামীর হত্যার বিচার না হলে আমি ২ সন্তানসহ আত্মহত্যা করব। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপক কুমার সাহা সাংবাদিকদের জানান, নিহত মামুন চিহ্নিত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে সরাইল থানায় দুটি ডাকাতিসহ চারটি মামলা রয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রূপক কুমার সাহা জানান, তার সময়ে সরাইলে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ৪ জন নিহত হয়েছে।
×