ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শ্রাবণসন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথের গানে মুগ্ধ শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ১১ আগস্ট ২০১৭

শ্রাবণসন্ধ্যায় রবীন্দ্রনাথের গানে মুগ্ধ শ্রোতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালীর যাপিত জীবনে সর্বক্ষণই বিরাজমান রবীন্দ্রনাথ। তার সৃষ্টির নির্যাসে প্রতিনিয়তই তাড়িত হয় মনন। সঙ্কটে বা হতাশায় আজো প্রেরণার উৎস তার গান বা কবিতা। আনন্দ বা উচ্ছ্বাসেও সঙ্গী হয় তার কালজয়ী সৃষ্টিসম্ভার। এভাবেই সারা বছর জীবনের বাঁকে বাঁকে বয়ে যায় কবিগুরুর শিল্প-সাহিত্যের স্রোতধারা। নিত্যদিনের চর্চিত সেই রবীন্দ্রনাথই সুরের আশ্রয়ে হাজির হলেন- বৃহস্পতিবার। শ্রাবণসন্ধ্যায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের মোহাবিষ্ট সুর-বাণীতে কেটে গেলে শ্রোতার আনন্দময় সময়। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো ‘চলরে টেনে আলোয় অন্ধকারে’ শীর্ষক সঙ্গীতসন্ধ্যা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৬তম প্রয়াণবার্ষিকী উপলক্ষে এ সঙ্গীত আসরের আয়োজন করে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংসদ। জাতীয় সঙ্গীতের সুরে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনেকগুলো কণ্ঠ এক সুরে গেয়ে যায় ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’। সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া দ্বিতীয় গানের শিরোনাম ছিল ‘উড়ায়ে ধ্বজা অগ্রভেদী রথে’। বৃন্দ পরিবেশনার পর আসে একক গানের পালা। রবীন্দ্রনাথের নানা আঙ্গিকের গান শোনান ৩০ জন শিল্পী। বৈচিত্র্যময় কণ্ঠের খেলায় শ্র্রোতার অন্তরে ছড়িয়ে দেন প্রশান্তির পরশ। ফাহিম হোসেন চৌধুরী গেয়ে শোনান ‘ভালো যদি বাসো, সখী/কী দিব গো আর’। মজিবুল কাইউমের কণ্ঠে গীত হয় ‘অনেক কথা বলেছিলেম’। মেজবাহুল আযম মনজু পরিবেশন করেন ‘শুধু যাওয়া আসা’। স্বপন দত্ত গেয়ে শোনান ‘সহন গহন রাতে’। ফারহাত হোসেন পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘গাও বীণা বীণা’। রোকাইয়া হাসিনা পরিবেশন করেন ‘এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়’। হাসি বিশ্বাস গেয়ে শোনান ‘ভরাবাদর মাহভাদর শূন্য মন্দিরে মোর’। বর্ণালী বিশ্বাসের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় ‘তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে’। নুসরাত বিনতে নূর গেয়ে শোনান ‘আজি বিজন ঘরে’। রীতা মজুমদার শুনিয়েছেন ‘আবার শ্রাবণ হয়ে এলে’ শিরোনামের গান। এছাড়া একক কণ্ঠে গান শুনিয়েছেন নাহার জামিল, শরফুল আলম, সৈয়দ মোহাম্মদ মুসা, মাহবুবুর রহমান মঞ্জু, এটিএম জাহাঙ্গীর, সরওয়ার হোসেন বাবু, আরিফুর রহমান তিমুন, সাদেক ইকবাল, মিলন দেব, নাঈমা আলী, ইফ্্ফাত আরা দেওয়ান, বাঁশরী দত্ত, ঝর্ণা রহমান, সুস্মিতা আহমেদ বর্ণা, বুলবুল মহলানবীশ, বদরুন্নেসা ডালিয়া, সুপর্না হাসান মিতু, বায়তুন নাহার পপি, আদৃতা আনোয়ার ও নাসরীন রোজী। আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাবলীল সঞ্চালনায় সঙ্গীতানুষ্ঠানটি আরও আকর্ষণীয় হয়ে ধরা দেয় রবীন্দ্র অনুরাগী শ্রোতাদের কাছে। ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো বাংলাদেশকে জানো’ স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বৃহস্পতিবার থেকে ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো বাংলাদেশকে জানো’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী জাতীয় শোক দিবস পালনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এ বছরের ২৬ মার্চ থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো বাংলাদেশকে জানো’ শীর্ষক বইপড়া প্রতিযোগিতা। শিশু একাডেমি প্রকাশিত জনপ্রিয় লেখক কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বইটি পড়ে সারাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার ক্ষুদে পাঠক ‘বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ে রচনা লিখে পাঠায় এবং তাদের মধ্য থেকে ৭১ জনকে বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। সকালে ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো বাংলাদেশকে জানো’ বিষয়ে নির্বাচিত ক্ষুদে পাঠকদের কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সেরা ১১ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়। বিকেলে বিজয়ী ৭১ জনকে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এর আগে একাডেমির মূল ফটকে শিশু একাডেমির নতুন বই বিক্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। তখন শিশুদের সঙ্গে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল আড্ডায় মেতে উঠেন। অসংখ্য শিশুকে তার লেখা ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ বইটিতে অটোগ্রাফ দেন। ৭১ জন ক্ষুদে লেখক এবং কুইজ বিজয়ী সেরা ১১ জনের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেনÑ বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম এনডিসি। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেনÑ বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিচালক আনজীর লিটন এবং সভাপতিত্ব করেন একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ছোটদের উদ্দেশে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে, বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুব ভালবাসতেন। তিনি সব সময় বললেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে শিশুরাই।’ সুলতানের জš§দিনে ‘আদম সুরত’ বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৪তম জš§বার্ষিকী ছিল বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হয় একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটারে প্রদর্শিত হয় এস এম সুলতানের জীবনীভিত্তিক তারেক মাসুদ নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আদমসুরত’। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা দুপুরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। তথ্যচিত্র প্রদর্শনের পর ছিল মুক্ত আলোচনা পর্ব। এস এম সুলতান ও তথ্যচিত্রটির নানা দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন চারুকলার শিক্ষকবৃন্দ। চারুকলার শিক্ষক শিল্পী সঞ্জয় চক্রবর্তী, নাসিমুল কবির ডিউকসহ আলোচনায় অংশ নেন অনেকেই। হ্যামলেট নাটকের চতুর্থ মঞ্চায়ন উইলিয়াম শেক্সপিয়র স্মরণে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অন্যতম আয়োজন সৈয়দ শামসুল হক অনূদিত ‘হ্যামলেট’ প্রযোজনা মঞ্চায়ন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাটকটির চতুর্থতম প্রদর্শনী হয়। প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন মঞ্চসারথী আতাউর রহমান। নাট্য কাহিনীর সূচনা হয় ডেকমার্কের রাজা হ্যামলেটের মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে, যিনি ছিলেন তরুণ যুবরাজ হ্যামলেটের জনক। রাজার মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লডিয়াস, যুবরাজ হ্যামলেটের পিতৃব্য সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং তার অগ্রজের স্ত্রী ও যুবরাজ হ্যামলেটের জননী গারট্রুডের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। জনককে হারানোর ব্যাখ্যা, জননীর সঙ্গে পিতৃব্যের পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হওয়া এবং সর্বোপরি পিতৃব্যের সিংহাসনে আসীন হওয়া, যুবরাজ হ্যামলেটের জীবনে মর্মমূলে নাড়া দেয়; যুবরাজ প্রায় শোকে-দুঃখে পাগল প্রায় হয়ে পড়েন। তিনি কিছুতেই এ দুর্বিষহ অন্যায় ঘটনা প্রবাহ মেনে নিতে পারেন না। হ্যামলেটের পিতার প্রেতাত্মা জীবনের এ দুঃসহ লগ্নে তার সামনে আবির্ভূত হয়ে তাকে জানিয়ে দেন যে, যদিও প্রচারিত হয়েছে তিনি সর্প দংশনে নিহত হয়েছেন। আসল সত্য হলো তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ক্লডিয়াস কানে বিষ ঢেলে তাকে হত্যা করেছে। ঘটনা প্রবাহে আরও কিছু গ্রন্থি যুক্ত হয়। এভাবেই বহুমুখী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেনÑ মাস্্উদ সুমন, শামীম সাগর, মেরিনা মিতু, আমিনুর রহমান মুকুল, শফিকুল ইসলাম, সোহেল রানা, কান্তা জামান, শরীফ সিরাজ, আহসান হাবীব বিপু, আজগর রাব্বী, আতাউর রহমান, আহসান হাবীব বিপু, প্রমুখ।
×