ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

৫৬১৬ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প ॥ চট্টগ্রামবাসীর স্বস্তি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১১ আগস্ট ২০১৭

৫৬১৬ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প ॥ চট্টগ্রামবাসীর স্বস্তি

মোয়াজ্জেমুল হক/হাসান নাসির, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকা-ে সরকার যে আন্তরিক তা আবারও লক্ষণীয় হলো ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্প অনুমোদনের মধ্য দিয়ে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ নগরীর উন্নয়ন কর্মকা-ে সেবামূলক সংস্থাগুলোর জন্য প্রতিবছর বড়, মাঝারি ও ছোট অঙ্কের অর্থের বরাদ্দ হয়ে থাকে। কিন্তু এর বিপরীতে কার্যকর সুফল মিলছে না কেন এ নিয়ে সর্বত্র জিজ্ঞাসার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞ সূত্রমতে, এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয়ার পর দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা দিয়েছিলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজ হাতে গ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে এ ঘোষণার বাস্তবায়নও দেখা গেছে বিভিন্ন সেবামূলক সংস্থাকে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে। কিন্তু এরপরও দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামের স্বাভাবিক পরিস্থিতি দিন দিন অবনতিশীল। এবারের বর্ষা মৌসুমে যেভাবে পুরো চট্টগ্রাম মহানগরী অথৈ পানির নিচে তলিয়ে যায়, তা সকলের কাছে অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয় ছিল। এ ঘটনা প্রচার মাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ অন্যান্য সেবামূলক সংস্থাগুলো একে অপরের কাঁধে দোষ চাপিয়ে পার পাওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে। আবার একথাও সত্য যে, প্রতিটি সেবা সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়নে কমিশনবাজি থেকে পুকুর চুরি, সাগর চুরির ঘটনার এন্তার অভিযোগ রয়েছে। এখানে বিশেষভাবে আরও উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও ওয়াসার দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে এসেছিলেন। ওইদিন চট্টগ্রাম ওয়াসার নবপ্রতিষ্ঠিত ‘শেখ হাসিনা পানি শোধণাগার’ এর উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে। নৌবাহিনী থেকে বোট ক্লাবে যাওয়ার পথে সড়কের অবর্ণনীয় দুর্দশা নিজ চোখে প্রত্যক্ষ করার পর তিনি ওই অনুষ্ঠানে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করে বলে গেছেন, দেশে কোন ধরনের কমিশন বাণিজ্য মেনে নেয়া হবে না। আমি টাকা দেব আর উন্নয়নের কাজ হবে না-এটা হতে পারে না।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি একনেকে সভাপতিত্ব করি, আমি জানি কোথায় কি যাচ্ছে। আর বলেছিলেন, আমি কমিশন খাই না, কমিশন খেতে আসিনি। কাউকে কমিশন খেতে দেব না।’ চট্টগ্রামের অস্বাভাবিক অবনতিশীল পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়েছে, মূলত কমিশন বাণিজ্যের কারণে দেশের এ বৃহত্তম নগরীর দুর্দশার এ পরিণতি। যা থেকে সেবামূলক সংস্থাগুলো কখনও দায় এড়াতে পারে না। অথচ সংস্থাগুলোর কর্ণধাররা একে অপরের কাঁধে দোষ চাপিয়ে বরাবরই দায় এড়াতে তৎপর। সূত্র জানায়, কখনও শত, কখনও লাখ, কখনও হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন পেতে দেখা যায়। কিন্তু এর বিপরীতে উন্নয়নের চেহারা কেন বিবর্ণ হয়ে থাকে তা-ই বড় ধরনের প্রশ্নবোধক হয়ে আছে। যে পরিমাণ অর্থ চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রতিবছর সরকার বরাদ্দ দিচ্ছে এর কত শতাংশ মূল কাজে ব্যয় হচ্ছে, আর কত শতাংশ কমিশন বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা লুটেপুটে খাচ্ছে, তা এখন দেখার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বছরজুড়ে দেখা যায়, চট্টগ্রামের বিভিন্ন সেবা সংস্থাগুলো বিভিন্ন প্রকল্প পেশ করে এর বিপরীতে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ নিচ্ছে। কিন্তু এর সুফল মিলছে না কেন? সর্বশেষ গত বুধবার চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সময়ের যে চিত্র মহাদুর্যোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে তা হচ্ছে জলজটে পুরোনগরী তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা। এ ঘটনা থেকে উত্তরণের দায়িত্বে রয়েছে মূলত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। চসিক বারবার বলে থাকে প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ নেই। অপরদিকে, কর্ণফুলী নদীর নাব্য রক্ষার দায়িত্ব চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক)। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প নিয়ে ১৬৫ কোটি টাকা সম্পূর্ণ লোপাট হয়ে গেছে। এরপর দিন গড়িয়েছে বহু। সর্বশেষ এ নদীর সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিংয়ের জন্য অর্থের অনুমোদন দেয়া হলো চউককে। এরপর গত বুধবার শুধু জলজট নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন একনেক সভায়। চউক সূত্র জানিয়েছে, খাল উদ্ধারে ক্ষতিপূরণ, ৩৬ খালে ৪৮ গার্ডার ব্রিজ ও ৬ কালভার্ট নির্মাণ ও ৩ জলাধার প্রতিষ্ঠা এবং ৪২ সিল্টট্র্যাপ প্রতিষ্ঠা, ৫ খালের মুখে ট্রাইডাল রেগুলেটর প্রতিষ্ঠা এবং খালগুলোর উভয়পাশে ১৫ ফুট চওড়া সড়ক নির্মাণে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করা হবে। এ মেগাপ্রকল্প অনুমোদনের বিষয়টি চট্টগ্রামবাসীর মনে আশার সঞ্চার করেছে সত্য, কিন্তু এর বাস্তবায়ন কাজে কমিশনবাজি থেকে সাগর চুরির প্রক্রিয়াটি রোধ করা যাবে কিনা তা নিয়ে উৎকণ্ঠার কমতি নেই। যে সব সেবামূলক সংস্থাকে প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্প বাস্তবায়নে যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চউক, চসিক, চট্টগ্রাম ওয়াসা ও পাউবো। প্রধানমন্ত্রী মহানগরীর ৩৬ খাল নিয়মিতভাবে খননের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, এত বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ের পর চট্টগ্রামের চেহারায় আমূল পরিবর্তন আসার কথা। কিন্তু আদৌ আসবে কীÑ এ প্রশ্ন জনমনে কেবলই ঘুরপাক খাচ্ছে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করার দায়িত্বটি কার, এ নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে পার করেছে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ। প্রতিটি সিটি নির্বাচনেই বেশ জোরালো প্রতিশ্রুতি থাকে জলাবদ্ধতা নিরসনের। কিন্তু দুর্ভোগ পরিস্থিতি চলে যাচ্ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজটি কোন সংস্থা করবে তা নিয়ে কাড়াকাড়িও ছিল। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটি পেয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। আর এর মাধ্যমে কার্যত দায়মুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। তবে চসিক মেয়র এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। নাগরিকরা বলছেন, কাজটি কোন সংস্থা করল তা আমজনতার কাছে মুখ্য বিষয় নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিরাট একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অনুমোদন দিয়েছেন, এটিই সবচেয়ে বড় পাওয়া। দীর্ঘদিন পরে চট্টগ্রাম নগরীর সত্যিকারের উন্নয়ন ঘটবে। এটি বড় ধরনের একটি আশার আলো। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করে নগরবাসীকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়া হোক, এটি প্রধান চাওয়া। এর মাধ্যমে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর বাঁচার চেষ্টা রহিত হয়েছে। একটি সংস্থা দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় সকল অনিশ্চয়তা দূর হয়েছে বলেও মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদগণ। চউক সূত্রে জানা যায়, যে পরিকল্পনাটি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে তা অত্যন্ত যুগোপযোগী এবং সুদূরপ্রসারী। চট্টগ্রাম নগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে বিচ্ছিন্ন কিংবা খ-িত কোন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করে সুফল পাওয়ার যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ ছিল না। চউকের পেশ করা পরিকল্পনা যৌক্তিক মনে হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে। তবে এর আগেই নগরবাসী ধীরে ধীরে সুফল পেতে শুরু করবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজটি কোন সংস্থা করবে তা নিয়ে গত এক বছর ধরে এক ধরনের রশি টানাটানি চলছিল। চউকের পক্ষ থেকে পেশ করা হয় ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার পরিকল্পনা। চসিকের পক্ষ থেকেও প্রায় একই ধরনের পরিকল্পনা পেশ করা হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড দিয়েছিল ২ হাজার ৬শ’ কোটি টাকার আরেকটি পরিকল্পনা। এছাড়া চট্টগ্রাম ওয়াসারও কিছু পরিকল্পনা ছিল। বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে পৃথকভাবে পরিকল্পনা দাখিল করায় ব্যাপক সমালোচনা উঠে নগর পরিকল্পনাবিদদের কাছ থেকে। তাদের প্রশ্ন ছিল, আলাদাভাবে পরিকল্পনা না দিয়ে সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা নয় কেন? এ নিয়ে আদালতে একটি রিটও দায়ের হয়। রিটের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ওপর রুলও জারি হয়। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, চসিক মেয়র, চউক চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং চসিকের প্রধান নির্বাহীকে দুপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু এ অবস্থার মধ্যেই একনেকে অনুমোদিত হয়ে যায় চউকের প্রকল্প। চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, একনেক সভায় অনুমোদন হয়ে যাওয়ায় কাজ শুরু করতে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। প্রয়োজনীয় পরিকল্পনাসহ প্রাথমিক কাজগুলো এগিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি জানান, কাজটি অনেক ব্যাপক, যার মাধ্যমে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার একটি স্থায়ী সমাধান আসবে। মাঠপর্যায়ে কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, যেহেতু জলাবদ্ধতার সমস্যাটি প্রকট আকারে দেখা দিয়েছে তাই দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু এবং শেষ করার উদ্যোগ রয়েছে। আগামী বছরের বর্ষার পূর্বেই কিছু কাজ দৃশ্যমান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এতে করে কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। কাজ পুরোপুরি সমাপ্ত করা হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই। প্রসঙ্গত, চউকের পরিকল্পনার বিষয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা কমিশনে লিখিতভাবে আপত্তি জানানো হয়েছিল। এতে বলা হয় সরকারের গেজেট অনুযায়ী নগরীর যাবতীয় নালা-নর্দমা নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, সংরক্ষণ এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। চসিকের যুক্তি হলো, এ কাজগুলো শুধু করলেই হবে না, পরবর্তীতে রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করবে কে? যদি কোন প্রকল্পর অধীনে বাস্তবায়িত হয় তাহলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজটিও প্রকল্পের অধীনে চলে যায়। যেহেতু সিটি কর্পোরেশনই এ কাজগুলো করে, সেহেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজটিও সিটি কর্পোরেশনের এখতিয়ারে থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক সভায় চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে চউকের দাখিল করা প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়ে যাওয়ায় চসিকের প্রকল্পটি বাদ পড়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকার চউকের ওপরই আস্থা রেখেছেন এমনই ধারণা করা হচ্ছে। তবে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, যেভাবে প্রয়োজন সেভাবেই সাড়া দেব। চউক, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য এতে বলা হয়েছে। চউক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম দুই সংস্থার রেষারেষির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, এখানে রশি টানাটানি কিংবা কাড়াকাড়ি বা ধাক্কাধাক্কির কোন ব্যাপার নয়। রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে যে যার এখতিয়ার থেকে পরিকল্পনা পেশ করেছে। একনেকে যে পরিকল্পনাটি অনুমোদিত হয়েছে তা চউক কিংবা চসিকের বলতে চাই না। এটি চট্টগ্রামবাসীর প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নগরবাসীসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে আশা করি। এদিকে, চসিকের পরিকল্পনা বাদ রেখে চউকের পরিকল্পনা অনুমোদিত হওয়ায় চট্টগ্রামে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এটি শুধু এ দুই সংস্থার মধ্যেই নয়, বরং আওয়ামী লীগেও বেশ আলোচনার বিষয়বস্তু। কেননা, নগর আওয়ামী লীগে বিভক্তি রয়েছে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন অনুসারীদের মধ্যে। কাজটি আসলে কোন সংস্থার এখতিয়ারে পড়ে তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। তবে জলাবদ্ধতায় ভুক্তভোগী নাগরিকদের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি এসেছে এ কারণেই যে, শেষ পর্যন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক হয়েছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে সংস্থাগুলোর মধ্যকার টানা-হ্যাঁচড়ারও অবসান হয়েছে।
×