ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যা

দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে হত্যাকাণ্ড প্রমাণ হওয়ায় মামলায় নতুন মোড়

প্রকাশিত: ০৬:০২, ১ আগস্ট ২০১৭

দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে হত্যাকাণ্ড প্রমাণ হওয়ায় মামলায় নতুন মোড়

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনাটি খুন হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় আলোচিত এ ঘটনার মামলা এখন নতুন দিকে মোড় নিচ্ছে। মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি এখন মনোনিবেশ করেছে দিয়াজের খুনীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে। প্রথম দফা ময়নাতদন্তের আত্মহত্যার রিপোর্ট আসায় যে ঘটনাটি চাপা পড়েছিল, তা এখন হত্যা মামলায় রূপ নিচ্ছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় দফা পোস্ট মর্টেমের প্রতিবেদন চট্টগ্রামে এসে পৌঁছালে শুরু হবে নতুন আঙ্গিকে তদন্ত। কেননা, এটি এখন আর অপমৃত্যুর মামলা থাকছে না। হত্যা মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ হবে। সঙ্গত কারণেই এখন তদন্তের বিষয়, কারা দিয়াজ ইরফানের হত্যাকারী। তদন্তের মাধ্যমে শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত মরদেহ গত বছরের ২০ নবেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ২ নম্বর গেট এলাকায় বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটির পা ছিল বিছানার ওপর এবং তা এমনই হালকাভাবে গলার সঙ্গে বাঁধা ছিল যে, ঘটনাটি আত্মহত্যা কিনা প্রথমেই সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। তবে লাশ উদ্ধারের পর ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ধরনের একটি টেন্ডার জটিলতার জের ধরে প্রতিপক্ষ দিয়াজকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের দাবিও ছিল, ঘটনাটি হত্যাকা-। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেন। ২৪ নবেম্বর দায়ের করা এ মামলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নেতা টিপু এবং সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন চৌধুরীসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়। ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যাকা-ের ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন অনুসারী হিসেবে পরিচিত। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রথম দফা ময়নাতদন্তের পর ২৩ নবেম্বর চিকিৎসকরা যে রিপোর্ট প্রদান করেছিলেন তাতে ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এরপর ঘটনাটি চাপা পড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের পর দ্বিতীয় দফা তদন্তের রিপোর্টে ‘হত্যাকা-’ আসায় সিআইডিকে নতুনভাবে দেখতে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পুরো বিবরণ পাওয়া না গেলেও ঘটনাটিকে শ্বাসরোধজনিত মৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির। মামলার নতুন গতিপথ প্রসঙ্গে তদন্ত সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছিল তাদেরই সন্দেহের মধ্যে রেখে তদন্তের কার্যক্রম এগিয়ে যাবে। ওই মামলার আসামিরাই হত্যা মামলার আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন।
×