ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে ॥ ত্রাণমন্ত্রী মায়া

বন্যাদুর্গত ৬ লাখ লোকের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার খাদ্য মজুদ আছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৩ জুলাই ২০১৭

বন্যাদুর্গত ৬ লাখ লোকের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার খাদ্য মজুদ আছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভারি বষণ ও উজানের ঢলে আগামী কয়েক দিনে দেশের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় সরকারী হিসেবে বন্যা প্লাবিত ১৩ জেলায় ৪৫ উপজেলায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে দুর্যোগ পরিস্থিতিতে ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর মতো পর্যাপ্ত খাদ্য সরকারের কাছে মজুদ রয়েছে বলে এ সময় জানানো হয়। কয়েক দিনে অবিরাম ভারি বর্ষণ এবং উজানের পানিতে দেশের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে দেশের যমুনা, তিস্তা, সুরমা, কুশিয়ারা, ধলেশ্বরী, ধরলা, ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে দেশের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সিলেট, মৌলভীবাজার, কক্সবাজার, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। উত্তরের পানি মধ্যাঞ্চলে নেমে এলে আরও নতুন জেলা প্লাবিত হতে পারে। তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রতি জেলার ক্ষয়ক্ষতি, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত মানুষের পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। ১১ জুলাই পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির ৯০ পর্যবেক্ষণ পয়েন্টের মধ্যে বারোটির পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, ৫৫ পয়েন্টে পানি বেড়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, উজানের দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও ভুটানে এবার বন্যা হয়েছে। ভাটির দেশ হিসেবে উজানের প্রভাব আমাদের ওপর পড়বে। এর আলোকে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছি ও মানুষের জন্য সহনশীল অবস্থায় রাখতে সক্ষম হয়েছি। মায়া বলেন, গত ৩ থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বন্যাকবলিত ১৩ জেলায় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চার হাজার মেট্রিক টন চাল, এক কোটি নয় লাখ ৫০ হাজার টাকা নগদ বরাদ্দ এবং নয় ধরনের খাবারের সমন্বয়ে সাড়ে ১৮ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় যারা খোলা আকাশের নিচে, উঁচু বাঁধে বা রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন তাদের অতি দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসেবা দেয়া হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, জনস্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানাব তারা যেন বন্যাপ্লাবিত এলাকার টিউবওয়েলগুলো উঁচু করে দিয়ে এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। বৃহস্পতিবার থেকে উত্তরাঞ্চলের বন্যা প্লাবিত প্রত্যেকটি এলাকা সফর করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনবেন এবং তাদের সমস্যা সমাধান করবেন বলেও জানান মন্ত্রী। ত্রাণমন্ত্রী বলেন, বন্যা নিয়ে রাজনীতি না করে আমি দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে আহ্বান জানাব, আসুন আমরা বন্যা প্লাবিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের মানবিক কর্তব্য পালন করি। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মোঃ শাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
×