ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন ॥ স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩ জুলাই ২০১৭

নেত্রকোনায় শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন ॥ স্বামী-স্ত্রী গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ২ জুলাই ॥ স্বর্ণামণি (৮) নামে এক শিশু গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে রবিবার গৃহকর্তা ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলোÑ জেলা শহরের কুড়পার এলাকার টিটু মিয়া ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার। এদিকে নির্যাতিতা স্বর্ণামণিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ও শিশুটির পারিবারিক সূত্র জানায়, স্বর্ণামণি সাত মাস ধরে কুড়পার এলাকার টিটু মিয়ার বাসায় কাজ করে আসছিল। কাজে সামান্য ত্রুটি হলেই তাকে বেধড়ক মারপিট করা হতো। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বাসায় ১৮ হাজার টাকা না পেয়ে গৃহকর্তা টিটু, তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার ও ছেলে নয়েল মিয়া শিশুটিকে হাত-পা বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরদিন শনিবার সকালে জ্ঞান ফিরলে তার পরিবারকে খবর দেয়া হয়। পরে পরিবারের লোকজন এসে শিশুটিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাংবাদিকরা হাসপাতালে গেলে শিশুটি ঘটনার বর্ণনা দেয়। এ সময় শিশুটি জানায়, টাকা চুরির মিথ্যা অপবাদে স্বামী-স্ত্রী ও ছেলে তার মুখ চেপে ধরে লাঠি, কোমরের বেল্ট, বাঁশের ঝাড়ু এবং দায়ের আছাড় দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। মার খেতে খেতে একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত। তবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি জানান, রবিবার দুপুরে শিশুটির দাদি মালেকা বেগম বাদী হয়ে টিটু মিয়া, স্ত্রী নাসরিন আক্তার ও তাদের ছেলে নয়েল মিয়াকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ওই দিনই দুপুর আড়াইটার দিকে গৃহকর্তা টিটু মিয়া ও তার স্ত্রী নাসরিন আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। শিশুটির বড় বোন ফাতেমা সাংবাদিকদের জানান, তাদের বাড়ি পৌর এলাকার বলাইনগুয়া গ্রামে। পাঁচ বছর আগে তাদের মা ফুলেছা বেগম মারা যান। চার বছর আগে বাবা রফিকুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে বিছানাশায়ী হন। এ অবস্থায় পারিবারিক অভাবের কারণে তারা স্বর্ণামণিকে অন্যের বাড়িতে কাজে পাঠান। শিশুটির ওপর অমানুষিক নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
×