ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্যাট আইন স্থগিত করায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৩ জুলাই ২০১৭

ভ্যাট আইন স্থগিত করায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জনগণের অনুভূতি ও মনোভাবকে প্রাধান্য দিয়ে ভ্যাট আইন স্থগিত এবং আবগারি শুল্ক পুনর্বিন্যাস করে সংসদে বাজেট পাস করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। একই সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোটের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও মিথ্যাচার ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করে আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে পুনর্বার ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা। রবিবার ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাজেট নিয়ে জনগণের অনুভূতি ও মনোভাবকে বুঝেছেন বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবগারি শুল্ক স্থগিত ও ভ্যাট আইন বাতিল করেছেন। এ জন্য ১৪ দলের পক্ষ থেকে আমরা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আবগারি শুল্ক স্থগিত ও ভ্যাট আইন বাতিল হওয়ায় বিএনপির মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। ‘ভ্যাট আইন বাতিল ও আবগারি শুল্ক স্থগিত করে আগামীতেও ক্ষমতায় আসার ইঙ্গিত’ বিএনপির এই বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, যা জনগণের জন্য কল্যাণকর তাই করে বর্তমান সরকার। আগামী নির্বাচনে কে ক্ষমতায় আসবে, সেটা বুঝবে জনগণ। বাজেটে ভ্যাট আইন স্থগিতসহ জনকল্যাণকর অনেক পদক্ষেপ নেয়ার কারণে যদি জনগণ আমাদের ভোট দেয় তাহলে আমাদের করার কী আছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অহেতুক মাঠ গরম করার জন্য কথা বলে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু এসব কোন কথাই কাজে আসবে না। সঠিক সময়েই নির্বাচন হবে। অযথা মাঠ গরম করা বক্তব্য ও সন্ত্রাসীমূলক কাজ করে লাভ নেই। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী সঠিক সময়েই হবে এবং চৌদ্দদল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে জনগণের ভোটের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনী ক্ষমতায় আসবে। হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় হামলার বছর পূর্তি উপলক্ষে নাসিম বলেন, এই ঘটনা মানুষের মনে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে। সরকার ও প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এদের যাত্রাপথ অনেকটা দুর্বল হয়েছে কিন্তু নিঃশেষ হয়ে যায়নি। এদেরকে চিরতরে নির্মূল করতে হলে পরিবার ও সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তা না করে শুধু সরকার ও প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। এই ক্ষত চিহ্নকে রুখতে হলে সবাইকে এগিয়ে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ১৪ দলের হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আকতার এমপির সভাপতিত্বে বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, এ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস এমপি, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, কামরুল আহসান, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভা-ারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম, ডাঃ অসিত বরণ রায় ও বাসদের রেজাউর রশিদ খান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সদ্য প্রয়াত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক মামা, সঙ্গীতশিল্পী সুধীন দাশের প্রয়াণে শোক জানানো হয়। এছাড়াও আন্তর্জাতিক জার্নালে বিশ্বের ১৮ নারীর তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম আসায় তাকে চৌদ্দ দলের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সরকার যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দুর্গত মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে। সাহসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অহেতুক মাঠ গরম করার জন্য খালেদা জিয়া আবারও মাঠে নেমেছে। তিনি একের পর এক মিথ্যাচার করেই যাচ্ছেন। যেকোন বিষয়েই নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসেন। নেতিবাচক কথা বলাই যেন তার স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। খালেদা জিয়াকে উদ্দেশে করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত সময়ে সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এখানে অন্য কোন কিছু ঘটার সম্ভাবনা নেই। ১৪ দলের সরকার সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক পথেই আছে। সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করবে। জনগণের আবারও গণতান্ত্রিক শক্তিকেই শক্তিশালী করবে। এ ব্যাপারে কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। আর কোন চক্রান্তের রাজনীতি এদেশে করে লাভ হবে না। আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচনে তাদেরকে পরাজিত করেছি। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনের মাঠেও ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাদেরকে পরাজিত করবে। আমরা তাদের চক্রান্তের ব্যাপারে সতর্ক আছি এবং থাকব। সরকার বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অহেতুক খালেদা জিয়া বিচার বিভাগকে দোষারোপ করছেন। তিনি নিজেই আইন-আদালত মানেন না, আদলতে হাজিরা দিতে একের পর এক সময় নেন। তার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বিলম্বিত হয়েছিল। কারাগারে জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার বিলম্বিত হয়েছিল। তাই খালেদা জিয়ার মুখে বিচার বিভাগ নিয়ে এসব কথা মানায় না। বরং খালেদা জিয়ার আমলেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নস্যাত করা হয়েছিল। বরং অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি স্বাধীন হলো আমাদের বিচার বিভাগ। সেজন্য প্রধান বিচারপতি পর্যন্ত প্রকাশ্যে অনেক কথা বলেন, অনেক উপদেশ দেন, তা দেশবাসী দেখছে।
×