ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে বাল্যবিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২ জুলাই ২০১৭

বরিশালে বাল্যবিয়ে ঠেকানো যাচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ কোনক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছেনা বাল্যবিয়ে। একের পর এক বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন রয়েছে নিরব দর্শকের ভূমিকায়। এরই মধ্যে গত তিনদিনে তিন ছাত্রীর বিয়ের খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে একটি ঠেঁকাতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থগ্রহণ ও দুইটিতে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র মতে, আগৈলঝাড়া উপজেলার পশ্চিম সুজনকাঠি গ্রামের সৌদী প্রবাসী মজিবর মোল্লার মাদ্রাসা পড়ুয়া কন্যা নুসরাত আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার ছয়গ্রাম এলাকার আকতার সেরনিয়াবাতের পুত্র নাফিউল ইসলামের (২৩) শুক্রবার বিয়ের পূর্ব নির্ধারিত দিন ধার্য করা হয়। মেয়ের বাবার অনুপস্থিতিতে মায়ের ইচ্ছায় এই বাল্যবিয়ে দেয়া হচ্ছিল। খবর পেয়ে থানার এসআই মিজানুর রহমান শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ের অপরাধে বিভিন্ন আইন কানুন ও কারাদ-ের ভয় দেখিয়ে মেয়ের মায়ের কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ না করে ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। বিষয়টি মহূর্তের মধ্যে এলাকায় ছড়িয়ে পরলে পুলিশের কর্তব্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। পরে ওইদিনই বিয়ে সম্পন্ন হয়। টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে এসআই মিজানুর রহমান জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে নোটারি পাবলিকের হলফনামা দেখে তিনি ফিরে আসেন। বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে নোটারি পাবলিকের কোন মূল্য নেই এ আইন সম্পর্কে জানতে চাইলে এসআই মিজানুর রহমান বলেন, এ আইন সম্পর্কে আমার জানা নেই। অপরদিকে একইদিন গৌরনদীর কা-পাশা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছাত্রী সরিকল গ্রামের ফেরদাউস সরদারের কন্যা চাঁদনী আক্তারকে (১৩) বিয়ে দেয়া হয় দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের আব্দুল মান্নান হাওলাদারের পুত্র মঞ্জুরুল ইসলামের (২৮) সঙ্গে। জানা গেছে, স্কুল ছাত্রী চাঁদনীর অমতে তার পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির সহায়তায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ইউপি কার্যালয় থেকে বয়স বৃদ্ধির ভুয়া জন্মসনদ বের করেন। ওই জন্মসনদ দিয়ে শুক্রবার রাতে বাউফলে কর্মরত সরকারী কর্মচারী মঞ্জুরুলের সঙ্গে জোরপূর্বক চাঁদনীর বিয়ের রেজিস্ট্রি কাবিন সম্পন্ন করা হয়। এরপূর্বে বুধবার রাতে আগৈলঝাড়ার পূর্ব আস্কর গ্রামের কৃষ্ণকান্ত হালদারের কন্যা দশম শ্রেণীর ছাত্রী নিপু হালদারের (১৫) সঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রদীপ কুমারের সহযোগিতায় একই উপজেলার বড়মগড়া গ্রামের নিবারন বালার পুত্র বিমল বালার (২৩) বাল্যবিয়ে দেয়া হয়। খবর পেয়ে থানার এক এসআই ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে আসার পরেও রহস্যজনক কারণে ওই রাতেই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
×