ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

সাঁড়াশি অভিযানে জঙ্গীবাদ নির্মূল হওয়ার পথে

স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি ॥ হলি আর্টিজানে হামলার এক বছর

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১ জুলাই ২০১৭

স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র সফল হয়নি ॥ হলি আর্টিজানে হামলার এক বছর

শংকর কুমার দে/গাফফার খান চৌধুরী ॥ দুনিয়া কাঁপানো ঢাকার কূটনৈতিকপাড়া গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে হামলার আরও অজানা তথ্য জানতে পাঁচ জঙ্গীর খোঁজ চলছে। তাদের গ্রেফতার করতে পারলে হামলা সম্পর্কে আরও বিশদ জানা যাবে। পলাতকদের ধরতে গ্রেফতার থাকা চার জঙ্গীকে প্রয়োজন অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। গুলশান হামলার মধ্যদিয়ে দেশে আইএসের মতো জঙ্গীবাদ ঘাঁটি গেড়েছে বলে প্রমাণ করার গভীর ষড়যন্ত্র করেছিল স্বাধীনতা বিরোধীরা। কিন্তু তাদের সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। স্বাধীনতা বিরোধীরা দেশে আইএসের অস্তিত্ব থাকার প্রোপাগা-া চালিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। ঘটনার পর থেকে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের মুখে জঙ্গীবাদ আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। মামলাটির তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পর্যালোচনায় এমন চিত্রই ওঠে এসেছে। নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিনটিকে স্মরণ করছে হতাহতদের পরিবার ও বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সংগঠন। হামলার এক বছর ॥ গত বছরের আজকের দিনে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় গুলশান লেক লাগোয়া হলি আর্টিজান রেস্তরাঁ ও বেকারিতে জঙ্গীদের প্রথম হামলায় বনানী মডেল থানার ওসি সালাহ উদ্দিন আহমেদ খান ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিম নিহত হন। এরপর জঙ্গীরা রেস্তরাঁর সবাইকে ভারি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। তখন পবিত্র মাহে রমজানের রোজা চলছিল। জিম্মির পর জঙ্গীরা ইটালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন, ১ জন ভারতীয় ও ৩ বাংলাদেশীকে গুলি ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং সাইফুল ইসলাম চৌকিদার নিহত হন। এরমধ্যে সাইফুল ছাড়া বাকি পাঁচজন জঙ্গী হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে তদন্তকারীরা জানান। কমান্ডোরা জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন তিন বিদেশীসহ ১৩ জিম্মিকে। সব মিলিয়ে আগে ও পরে হলি আর্টিজান থেকে জিম্মি দশা থেকে ৩৩ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হামলার দায় স্বীকার করে আইএসের নামে বিবৃতি প্রকাশ ও চাপে বাংলাদেশ ঘটনার পর পরই ইরাক-সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গী গোষ্ঠী আইএসের নামে দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রকাশিত হয়। এরপর সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটেছে বলে নানাভাবে প্রোপাগা-া চালানো হয়। বিশ্ববাসী রীতিমত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বিশ্ব মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনায় আসে ঘটনাটি। বিষয়টিকে পুঁজি করে নানাভাবে স্বাধীনতা বিরোধীরা অপতৎপরতায় নেমে পড়ে। তারা দেশে জঙ্গীবাদের ভয়াবহ উত্থান ঘটেছে বলে প্রচার চালাতে থাকে। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলকে বাংলাদেশের ওপর জঙ্গীবাদ ইস্যুতে চাপ সৃষ্টি করার সুযোগ করে দেয়ার চেষ্টা করে। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো বাংলাদেশে আইএস রয়েছে বলে দাবি করে আসছিল। কিন্তু সরকার বারবারই দাবি করছিল, দেশে কোন আইএস নেই। দেশীয় জঙ্গীরাই এ হামলার জন্য দায়ী। শেষ পর্যন্ত তদন্তে বেরিয়ে আসে বিগত বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলের ২০০৫ সালে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে আলোচনায় আসা নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবিরই নতুন একটি অংশ যেটি নব্য জেএমবি হিসেবে পরিচিত তারাই হামলাটি চালিয়েছে। দিন যত যেতে থাকে, তদন্তে তা আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত আইএসের অভিশাপ থেকে মুক্তি পায়। সেইসঙ্গে নস্যাত হয়ে যায় স্বাধীনতা বিরোধীদের গভীর ষড়যন্ত্র। পাঁচ জঙ্গীর সন্ধান চলছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নজিরবিহীন জঙ্গী হামলাটির তদন্ত চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, নির্ভুল অভিযোগপত্র দেয়ার চেষ্টার কারণে চার্জশীট দাখিল করতে দেরি হচ্ছে। তবে কবেনাগাদ অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে পারবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর। কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের বক্তব্য এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে পাঁচ জঙ্গী। এরা হচ্ছেন, সোহেল মাহফুজ, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র‌্যাশ ও বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এদের গ্রেফতার করতে পারলে হামলা সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে। তাদের ধরতে গ্রেফতার থাকা চার জঙ্গীকে প্রয়োজন অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে। এদের মধ্যে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী ও রাকিবুল হাসান রিগান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। পলাতকদের মধ্যে দুই-তিনজনকে ধরতে পারলেই অজানা অনেক কিছু সামনে চলে আসবে। হামলায় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিল তাদের কেউ বেঁচে নেই। হামলা সংঘটিত করতে আটজন তামিম আহমেদ চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মোতালেব ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ বিভিন্ন সময় পুলিশের অভিযান মারা যান। আর সেই রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হালি আর্টিজানে আটকে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিমও কারাগারে রয়েছেন। হলি আর্টিজানের ছাদে দুই হামলাকারীর সঙ্গে ব্যবসায়ীপুত্র তাহমিদ হাসিব খানের অস্ত্র হাতের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তিনি গ্রেফতারও হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তদন্তে তার জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। আদালতের নির্দেশে তিনি এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। গত বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল মনিরুল ইসলাম জানান, ঢাকায় বড় ধরনের হামলা করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ঝড় তুলতে এবং বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান হয়েছে সেটি প্রমাণ করতেই গুলশান হামলা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক ঢাকা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা তিন জনকে তারা বাছাই করে। সে মোতাবেক শহরের তিন তরুণ নিবরাজ, মোবাশ্বের ও রোহান এবং গ্রামের ছেলে খায়রুল ও শফিকুল এই পাঁচ জনকে দিয়ে সুইসাইডাল স্কোয়াডটি তৈরি করে। এরপর গাইবান্ধার চরে তাদের ২৮ দিন বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। জঙ্গীদের ওই প্রশিক্ষণে নব্য জেএমবির জঙ্গী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জাহিদুল ইসলাম মূল ভূমিকা পালন করে। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার রূপনগরে পুলিশী অভিযানে মেজর জাহিদ নিহত হন। ট্রেনিং শেষে তাদের পাঠানো হয় ঢাকায়। তাদের থাকার জায়গা করে দেয়া হয় কাছাকাছি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে। জঙ্গীদের ঢাকায় আনা হয়েছিল গুলশান-বারিধারায় হামলা চালানোর উদ্দেশে। পরে তারা হলি আর্টিজান হামলার জন্য টার্গেট করে। এর মূল কারণ রেস্তরাঁটিতে প্রচুর বিদেশীর যাতায়াত। হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর হামলাকারীরা যাদের হত্যা করেছে, তাদের মোবাইল দিয়েই ছবি তুলেছিল। ছবিগুলো তারা তামিম চৌধুরী ও নুরুল ইসলাম মারজানের কাছে পাঠিয়েছিল। তারা তখন ঢাকার শেওড়াপাড়ার একটি বাসায় ছিল। তামিম ও মারজান পরে কাকে, কোথায় সেসব ছবি পাঠিয়েছে সেটা আর জানা যায়নি। অভিযোগপত্র জমার তারিখ আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই ফরিদ মিয়া জানিয়েছেন, হলি আর্টিজান মামলার অভিযোগপত্র জমার তারিখ এর আগে সাতবার পিছিয়েছে। এ মামলার পরবর্তী তারিখ রয়েছে আগামী ১৬ জুলাই। হামলার খরচ নয় লাখ টাকা মনিরুল ইসলাম জানান, হিসেব করে দেখা গেছে, হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রগোলাবারুদ, অপারেশনাল সামগ্রী, টিশার্ট, কেডস কিনতে তাদের নয় লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছিল। এসব টাকা তারা নিজেরাই যোগাড় করেছিল। কারণ হামলাকারীরা সবাই স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান ছিল। গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুর অভিযনে নিহত জঙ্গী নেতা তানভীর কাদেরী গুলশান হামলায় অংশগ্রহণকারী পাঁচজনের জন্য বাড়ি ভাড়া করে দিয়েছিলেন। তানভীর কাদেরী ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে চাকরি করতেন। তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা একটি মাল্টিন্যাশনাল এনজিওতে চাকরি করতেন। তারা বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে সব টাকা সংগঠনের ফান্ডে দিয়েছিলেন। অস্ত্র ও বিস্ফোরক আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং যশোর থেকে মামলার এজাহারের বিবরণ অনুযায়ী, গুলশান হামলায় পাঁচটি পিস্তল, তিনটি একে-২২ রাইফেল ব্যবহার করেছিল জঙ্গীরা। ঘটনাস্থলে নয়টি গ্রেনেডের সেফটি পিন মিলেছিল। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ছোরা, একটি চাপাতি, একটি সাদা রঙের রুমাল এবং বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের প্রায় তিনশ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র ও বিস্ফোরকগুলো জঙ্গীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও যশোর দিয়ে এনেছিল। এগুলো তৈরি হয়েছিল ভারতের মালদায়। বড় মিজানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে গুলশান হামলার জন্য অস্ত্র সরবরাহের তথ্য বেরিয়ে আসে। লাশ না পাওয়ার দুঃখ পাচক সাইফুলের পরিবারে তিন শিশু সন্তান সামিয়া (১০), ইমলি (৮) ও নয় মাস বয়সী হাচানকে নিয়ে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছেন সাইফুলের স্ত্রী সোনিয়া আকতার। তারা পাঁচ জঙ্গীর সঙ্গে নিহত পাচক সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের লাশটি ফেরত চেয়েছিলেন। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। তাই অনেক চেষ্টার পরও লাশ না পাওয়ার কষ্ট এখনও ভুলতে পারছেন না তারা। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামের মৃত আবুল হাসেম চৌকিদারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন সাইফুল। তাই আজও সাইফুলের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পুলিশ কর্মকর্তা রবিউলের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা চান স্ত্রী মানিকগঞ্জে নিজের এলাকায় প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য একটি বিদ্যালয় গড়ে তুলেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিম। পাশাপাশি একটি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার স্বপ্নও ছিল তার। স্বামীর সেই স্বপ্ন পূরণে সবার সহায়তা চাইছেন স্ত্রী উম্মে সালমা। রবিউল নিহত হওয়ার সময় অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন সালমা। এক মাস পর পৃথিবীতে আসে কামরুন্নাহার রায়েনা। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রামেই কাটছে তাদের জীবন। এখনও আতঙ্ক কাটেনি গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গী হামলার এক বছর পরও কূটনীতিক পাড়া হিসেবে পরিচিত ঢাকার অভিজাত এলাকাটিতে আতঙ্কের রেশ কাটেনি। আতঙ্কের সঙ্গে নিরাপত্তার কড়াকড়িতে ভাড়াটিয়া সঙ্কটে ভুগছেন ওই এলাকার বহু বাড়ির মালিক। নতুন ভাড়াটিয়ার অভাবে ভাড়াও অর্ধেক নেমে এসেছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আগের মতো আর আতঙ্ক নেই। বিদেশীরা নির্বিঘেœ তাদের কর্মকা- চালাচ্ছেন। কোন অসুবিধা হচ্ছে না। গুলশানজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুলশান ও চ্যান্সারী বিভাগের উপকমিশনার এসএম মোস্তাক আহমেদ খান ও মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। তারা বলছেন, দূতাবাসসহ অন্যান্য বিদেশী অফিসের সঙ্গে তাদের নিয়মিত বৈঠক হয়ে থাকে। আর্টিজান এখন যেমন হামলার পর নতুন ঠিকানায় কাজ চালাচ্ছে হলি আর্টিজান বেকারি। আর রেস্তরাঁ তুলে দিয়ে এখন নিজেই থাকার জন্য বাড়িটি গোছগাছ করছেন এর মালিক সামিরা আহম্মদ ও তার স্বামী সাদাত মেহেদী। যদিও পাশের লেক ভিও ক্লিনিকটিকে আগেরই মতোই কর্মকা- চালাতে দেখা গেছে। তবে সেখানে বিদেশীদের যাতায়াত আগের মতো নেই বলে জানালেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা। তারা বলছেন, হামলার পর থেকে বিদেশীরা আর আগের মতো আসেন না। আগে বিদেশীরা ক্লিনিকে আসার পাশাপাশি রেস্তরাঁটিতে খাওয়া দাওয়া করতেন। এখন সেসব পাল্টে গেছে। কালেভদ্রে দু’ একজন বিদেশী আসেন। তাও আবার যাদের চেহারা বাঙালীর মতো তারা। তবে ক্লিনিক আর হলি আর্টিজানের মাঝ বরাবর ১২ ফুট স্টিলের দেয়াল দিয়ে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। যে কারণে চাইলেই আর আগের মতো সব কিছু দেখা যায় না।
×