ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যানজটের শঙ্কা

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে অবৈধ পার্কিং

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৩ জুন ২০১৭

ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে অবৈধ পার্কিং

স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের চারলেনের দুইপাশে দুই লেন দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ড ও যানবাহনের পার্কিং। ফলে ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন মোড়ে সৃষ্টি হতে পারে যানজটের। এ সময় যানজটের কবলে পড়ে ঘরে ফেরা মানুষকে অন্তত ১৫টি স্পটে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা যাত্রী ও চালকদের। একই সঙ্গে মহাসড়কে নিষিদ্ধ থ্রিহুইলারের অবাধ যাতায়াত তৈরি করছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। তবে ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ (সওজ) ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের দাবি, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় এবার স্বস্তি নিয়ে মানুষ ঘরে ফিরতে পারবে। যানজট ও দুর্ঘটনাসহ যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবারই প্রথম ঢাকা ময়মনসিংহ চারলেনের মহাসড়ককে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) এর আওতায় এনেছে ময়মনসিংহ পুলিশ। পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম (বিপিএম, পিপিএম) জানান, তার কন্ট্রোলরুম থেকে এবার সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে ঢাকা ময়মনসিংহ চারলেনের মহাসড়ক পরিস্থিতি। ঢাকা ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়কের ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া মোড় থেকে মেডিক্যাল কলেজ গেট পর্যন্ত প্রায় অর্ধকিলোমিটার রাস্তাজুড়ে একপাশে গড়ে উঠেছে এ্যাম্বুলেন্স, মাহিন্দ্র, সিএনজির অনুমোদনহীন স্ট্যান্ড। শহরের ব্যস্ততম এই জায়গার আরেকপাশের রাস্তার ওপর গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভাসমান দোকানপাট। শহরের মাসকান্দা বাইপাস সড়ক ব্যবহার না করে দূরপাল্লার বেশিরভাগ বাস সার্ভিস এই মোড় অতিক্রমের কারণে প্রতিনিয়ত যানজট হচ্ছে। পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানও দিনের বেলায় এই মোড় হয়ে শহরের ভেতরে ঢোকার কারণে যানজট হচ্ছে। ঈদে যানবাহনের চাপ বাড়ার সঙ্গে এই মোড়ে যানজট তীব্র আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। শহরতলীর শিকারিকান্দা, চুরখাই বাইপাস মোড়, কাজির শিমলা, ত্রিশালের বৈলর, কানহর, ত্রিশাল উপজেলা সদর মোড়, বাগান, বগারবাজার, সাইনবোর্ড, ভালুকার ভরাডোবা, ভালুকা উপজেলা সদর, সিডস্টোর, হবিরবাড়ি, মাস্টার বাড়ি, জৈনা বাজার মোড়ে মোড়েও গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্ট্যান্ড। এসব স্পটের অনেক জায়গায় চারলেনের দুইপাশে দুই লেন দখল করে রাখা হয়েছে ভাড়ায় চালিত যানবাহনের সারি। ত্রিশাল ও ভালুকার শিল্প কারখানার সামনে রাস্তার ওপর পার্কিং করে রাখা হয়েছে শ্রমিক কর্মচারীদের পরিবহন বাস। এছাড়া কাভার্ড ভ্যান ও পণ্যবাহী ট্রাক রাখা হয়েছে রাস্তার ওপর। ত্রিশালের বৈলর থেকে কানহর ও উপজেলা সদর হয়ে সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার ওপর রাখা হয়েছে শিল্প কারখানার পরিবহন বাস। ভালুকা উপজেলা সদরের ব্যস্ততম গফরগাঁও মোড়ের অন্তত ২০০ মিটার রাস্তা দখল করে পার্কিং করে রাখা হয়েছে ভাড়ায় চালিত প্রাইভেট কার ও সিএনজি। ভালুকার সিডস্টোর ও জৈনা বাজারের ব্যস্ততম রাস্তার ওপর গড়ে উঠেছে ছোট বড় যানবাহনের অবৈধ স্ট্যান্ড। ঢাকা ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়কের ওপর এভাবে মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্ট্যান্ড ও রাস্তার ওপর যানবাহন পার্কিংয়ের কারণে প্রতিদিনই জট লেগে যাচ্ছে। ব্যস্ততম মোড়ে ও রাস্তার ওপর দূরপাল্লার বাসগুলোর যাত্রী ওঠানামা করানোর কারণে এই জট তীব্র হচ্ছে। একবার জট লেগে গেলে সহজে খুলছে না। এ সময় দূরপাল্লার যাত্রীদের অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ঈদের আগে চারলেনের মহাসড়কের ওপর থেকে অবৈধ স্ট্যান্ড ও যানবাহনের পার্কিং উচ্ছেদসহ নিষিদ্ধ করা থ্রিহুইলারের চলাচল বন্ধ করা না গেলে যানজট পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা এই রুটের যাত্রী ও চালকদের। ঢাকা ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়কে নিয়মিত চলাচলকারী এনা পরিবহন সার্ভিসের চালকদের দাবি, চারলেন মহাসড়কের কোথাও ভাঙ্গাচোরা কিংবা গর্ত নেই। পরিচ্ছন্ন চমৎকার মহাসড়ক। তবে মোড়ে মোড়ে অবৈধ স্ট্যান্ড আর যানবাহনের পার্কিং উচ্ছেদসহ থ্রিহুইলার বন্ধ করা না গেলে ঈদে ঘরমুখো মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সাখাওয়াত হোসেন জানান, ঈদের ছুটিতে এবার বাড়ি ফিরতে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ চারলেনের মহাসড়কের ময়মনসিংহ অংশের কোথাও কোন ভাঙ্গাচোরা ও গর্ত কিংবা যানজট নেই। ফলে স্বস্তি নিয়েই ফিরতে পারছে ময়মনসিংহ অঞ্চলের যাত্রীরা। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান জানান, ঈদের সাত দিন আগে ও পরে চারলেন মহাসড়কের ওপর থেকে সব ধরনের অবৈধ স্ট্যান্ড ও যানবাহন পার্কিং সরিয়ে নেয়াসহ থ্রিহুইলার চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় যানচলাচল স্বাভাবিক থাকবে। ফলে এই মহাসড়কে যাত্রী ও চালকদের কোন ধরনের ভোগান্তিতে পড়ার আশঙ্কা নেই এবার।
×