ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

তিন পুরুষ শিক্ষকের বিপরীতে একজন নারী শিক্ষক ;###;১৬ বিভাগ ও ৫ ইনস্টিটিউটের দায়িত্বে নারী

নারীর ক্ষমতায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিপ্লব

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৭ জুন ২০১৭

নারীর ক্ষমতায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিপ্লব

সোহেল তানভীর ॥ নারীর ক্ষমতায়নে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে চলছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে ছুঁয়েছে নতুন মাইলফলক। প্রতিষ্ঠালগ্নে ৬০ শিক্ষক নিয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হলেও তখন ছিল না কোন নারী শিক্ষক বা শিক্ষার্থী। এমনকি এক দশক আগেও এই বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নারীর নিয়োগ উল্লেখ করার মতো ছিল না। কিন্তু ২০০৯ সাল থেকে নারী শিক্ষক নিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬ বছরের ইতিহাসে উপ-উপাচার্যের পদে প্রথমবারের মতো দায়িত্ব পালন করছেন একজন নারী। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি তিনজন পুরুষ শিক্ষকের বিপরীতে রয়েছেন একজন নারী শিক্ষক। ১৬ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের চেয়ারপার্সন এবং ৫ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করছেন নারী। অর্থনীতি, আইন ও সাংবাদিকতার মতো গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগে পুরুষ ও নারী শিক্ষকের সংখ্যা কাছাকাছি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঐতিহাসিকভাবে দেশের সমাজ-সংস্কৃতির যে কোন পরিবর্তনেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নীরব বিপ্লব চলছে। এর প্রতিফলন এক সময় দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও পড়বে বলে মনে করছেন তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ২ হাজার ১২ শিক্ষক রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর মধ্যে নারী শিক্ষকের সংখ্যা ৬৩০ জন। আট বছর ধরে শিক্ষকের সংখ্যার ক্ষেত্রে পুরুষ-নারীর ভারসাম্যহীনতা কমছে। গত ২০০৯-২০১৭ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয় ৬২১ শিক্ষক। এর মধ্যে ১৯৫ নারী। অর্থাৎ এ সময়ে প্রতি ৩ দশমিক ১৮ পুরুষ শিক্ষকের বিপরীতে নিয়োগ পেয়েছেন একজন নারী শিক্ষক। পুরুষের বিপরীতে নারী শিক্ষক নিয়োগের এই অনুপাত আগের যে কোন একই সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। বিষয়টি প্রশংসনীয় উল্লেখ করে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জনকণ্ঠকে বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবেশ বিবেচনায় শিক্ষকতা নারীদের উপযুক্ত জায়গা। তবুও এক্ষেত্রে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নারীর উল্লেখযোগ্য পদায়ন এতদিন হয়নি। তবে পরিস্থিতি বদলেছে। বাধা-বিপত্তি এখনও অনেক রয়েছে। এসব পেরিয়ে নারীর এগিয়ে আসছে, যা সত্যি প্রশংসনীয়। এই শিক্ষাবিদের মতে, শিক্ষকতায় নারীর অগ্রগতিও অন্য পেশা থেকে অনেক বেশি। তবে প্রশাসনিক খাতে নারীর ক্ষমতায়ন এখনও সন্তোষজনক নয়। বিশ^বিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদ উপ-উপাচার্য (শিক্ষা)’র দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ। তিনি বলেন, নারী যেভাবে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছেন, আশা করি, অদূর ভবিষ্যতে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বেও একজন নারীকে দেখতে পারব। ফলাফল থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে নারী এগিয়ে যাচ্ছে। নারীবান্ধব বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে গোটা দেশেই নারী এগিয়ে যাচ্ছে। আশা করি, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিফলন ঘটবে গোটা দেশেই। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সময় বদলেছে। এতদিন বলা হতো, মেয়েদের এগিয়ে আসতে হবে। এখন বলা হচ্ছে- ছেলেদেরও এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে ফলের দিক থেকে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এখন অনেক বেশি এগিয়ে। তবে দেশের উন্নয়নের জন্য ছেলেমেয়ে উভয়কে সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ১৬ বিভাগ ও ৫ ইনস্টিটিউটের দায়িত্বে নারী বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ের ১৬ বিভাগের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করছেন নারী শিক্ষকরা। বিভাগগুলোÑ অর্থনীতি, ইংরেজী, ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, বাংলা, সঙ্গীত, নৃত্যকলা, রসায়ন, অণুজীব বিজ্ঞান, মৎস্যবিজ্ঞান, এডুকেশন এ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি, ভূগোল ও পরিবেশ, আবহাওয়া বিজ্ঞান, রোবটিকস এ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং শিল্পকলার ইতিহাস। বিশ্বদ্যালয়ে বর্তমানে ইনস্টিটিউট রয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে ৫টি ইনস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন নারী। এগুলো হচ্ছে- শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর), পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট (আইএলএম) এবং ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ। কিছুদিন আগেও এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীর ভূমিকা ছিল না। এসব বিভাগ ও ইনস্টিটিউট পরিচালিত হচ্ছে নারীদের সুষ্ঠু নেতৃত্বে। তাদের নেতৃত্ব প্রশংসিত হচ্ছে শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টদের মুখে। এ প্রসঙ্গে আইইআর পরিচালক অধ্যাপক হোসনে আরা বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে। এই সম্মান আমার প্রাপ্য। তাই এটিকে সরাসরি নারীর ক্ষমতায়ন বলব না। তবে যোগ্যতা, সম্মান ও দায়িত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এটাও এক ধরনের ক্ষমতায়ন। কারণ যোগ্যতা ও সক্ষমতা আছে বলেই নারী শিক্ষকরা এ ধরনের পদে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন। ৪৬ বছরে দেশের নারীরা যে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছেন, এটি তারই প্রতিচ্ছবি। একই বিষয়ে ইংরেজী বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. রুবিনা খান জনকণ্ঠকে বলেন, নারীরা এখন পিছিয়ে নেই কোন ক্ষেত্রেই। পুরুষের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়- এ বিশ্বাস নারীদের মধ্যে ঢুকেছে। সবক্ষেত্রে তারা এখন পুরুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে, ঝুঁকি নিচ্ছে। বর্তমানে নারীরা যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। ফলে দক্ষতার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করছে। নারী-পুরুষ সংখ্যায় সমতা বিশ^বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগসমূহেও শিক্ষক হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। বিবিএ, আইবিএ, অর্থনীতি, আইন, দর্শন, সাংবাদিকতার মতো বিভাগে নারী শিক্ষকের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। অর্থনীতি বিভাগে ৩৯ শিক্ষকের মধ্যে ১৬ জনই নারী, আইন বিভাগে ৪৭ জনের ১৬ জনই নারী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ২৯ শিক্ষকের মধ্যে নারী ১৪ জন। বিশ^বিদ্যালয়ের টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগে সম্প্রতি ৩ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়, যাদের সবাই নারী। জানতে চাইলে বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া জনকণ্ঠকে বলেন, সবাই মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নিয়োগ পেয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগে বিবেচ্য হলো মেধা ও যোগ্যতা। যারা নিয়োগ পেয়েছেন মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই পেয়েছেন। মেয়েরা পড়াশোনা ভাল করছে এবং ভাল ফল করছে। শিক্ষক নিয়োগে সেটার প্রতিফলন থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এদিকে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে সম্প্রতি ৫ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪ জনই নারী। বিভাগটির নারী শিক্ষকরা হাতেকলমে সাংবাদিকতা শিক্ষা দিচ্ছেন। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিভাগের চেয়ারপার্সন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগে নারীদের প্রতিনিধিত্ব যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নারী শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ দেয়া হয় ৪ শিক্ষক। এর মধ্যে নারী শিক্ষক ছিলেন ৩ জন। নারী হিসেবে শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন রকম বৈষম্যের শিকার হননি বলে জানালেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভাষক তাহমিনা হক দিনা। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার তিনদিন আগে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে আমি পুত্র সন্তানের মা হই। আমি হাসপাতাল থেকে এসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। আমার পরীক্ষার সিরিয়াল একটু পেছনে থাকলেও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়োগ কমিটি আমার পরীক্ষা আগে নিয়ে নেয়। এক্ষেত্রে নিয়োগপ্রার্থী অন্য পুরুষ ও নারীও আমাকে সহযোগিতা করেন। শুধু শিক্ষকতাই নয়, বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, বিভাগীয় চেয়ারপার্সন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, হল প্রাধ্যক্ষসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন নারী শিক্ষকরা। বর্তমানে শিক্ষক রাজনীতিতেও নারীরা অনেক এগিয়ে। বিশ^বিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দলের আহ্বায়ক নাজমা শাহীনের নেতৃত্বে গত ২২ মে সিনেটে ৩৫ শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে নীল দল ৩৩টি আসনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, নারীদের পিছিয়ে থাকার দিন শেষ। তারা অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। সময় বদলে মেধায় স্বাক্ষর রাখছেন বলে বিশ^বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ নারীরা দখল করে নিচ্ছেন। শিক্ষক নিয়োগে অন্য কিছু নয়, মেধাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে শর্ত একটাই, মেধায় স্বাক্ষর রাখা। পাশাপাশি উপস্থাপনায় পারদর্শিতা ও দক্ষতা আছে এমন প্রার্থীদের বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়। একাডেমিক ফল ও সাক্ষাতকারে পারদর্শিতা- এই দুটি বিষয়কে যথাযথ মূল্যায়ন করে যারা যোগ্য কেবল তারাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছে। নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিষ্ঠালগ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার প্রচলন ছিল না। লীলা নাগ নামে এক শিক্ষার্থীর জেদ ছিল তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়বেন। মেয়েরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে না এই মর্মে লীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর (তৎকালীন বাংলা প্রদেশের গবর্নর) ও ভাইস চ্যান্সেলরের সঙ্গে দেখা করে নিজের কেস প্লীড করেন। তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর স্যার পি জে হার্টজ লীলার মেধা ও আকাক্সক্ষা বিবেচনা করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার বিশেষ অনুমতি প্রদান করেন। এভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহশিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়। এরপরের তিন শিক্ষাবর্ষে আর কোন ছাত্রী ভর্তি হয়নি। ১৯২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন ফজিলাতুন্নেসা। এরপর ১৯২৭-২৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ছাত্রীরা আসতে শুরু করেন। বর্তমানে একদিকে বিশ^বিদ্যালয়ে যেমন নারী শিক্ষক নিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯২১ সালের ১ জুলাই আটশ সাতচল্লিশ শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র দুই নারী শিক্ষার্থী দিয়ে সহশিক্ষার যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশিই নারী। বর্তমানে বিশ^বিদ্যালয়ে প্রতিটি বিভাগে উল্লেখযোগ্য হারে নারী শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পাচ্ছে। জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রায় প্রতিটি বিভাগে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থী সমান। একই অনুষদের কোন কোন বিভাগে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা পুরুষ শিক্ষার্থীর চেয়ে বেশি। তাছাড়া বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ফলাফলে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। ভাল ফলস্বরূপ বিশ^বিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষা বৃত্তি দেয়া হয় তার প্রায় সিংহভাগই পাচ্ছে নারী শিক্ষার্থীরা। গত ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ তম সমাবর্তনে ৮০ জনকে স্বর্ণপদক দেয়া হয়। এর মধ্যে ৪২টিতে নারীরা স্বর্ণপদক পান। এমফিল ও পিএইচডির মতো উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনেও নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে এমফিল ও পিএইচডি পান ৩৪৭ জন। এর মধ্যে নারী ছিলেন ১৮১ জন। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে এমফিল ও পিএইচডি পান ৪৬৭ জন। এর মধ্যে নারী ছিলেন ২১২ জন। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এমফিল ও পিএইচডি ্র পান ৪৩৯ জন। এ সময়ে নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২২৪ জন। গত ৩১ মে ৪৬ জনকে এমফিল ডিগ্রী ও ৪৭ জনকে পিএইচডি দেয়া হয়। এর মধ্যে ২৭ এমফিল ও ২১ পিএইচডি ডিগ্রীধারী নারী।
×