ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঘোষিত বাজেট উন্নয়ন সহায়ক ॥ চিটাগাং চেম্বার

প্রকাশিত: ০৬:০৭, ২ জুন ২০১৭

ঘোষিত বাজেট উন্নয়ন সহায়ক ॥ চিটাগাং চেম্বার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটকে শিল্পবান্ধব এবং উন্নয়ন সহায়ক বাজেট হিসেবে আখ্যায়িত করেছে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। বিশেষ করে সড়ক এবং রেল যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব প্রদানকে স্বাগত জানিয়েছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের এ শীর্ষ সংগঠন। বাজেট ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে করিডোর ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ এবং দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুনধুম রেললাইন সম্প্রসারণকে স্বাগত জানিয়েছেন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বন্দর নগরীর যানজট নিরসন, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও বৃহত্তর চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকা- আরও গতিশীল হবে। তিনি বলেন,ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি এবং অবচয়ন বিবেচনাপূর্বক এ সীমা আরও বৃদ্ধি করা উচিত। একইভাবে মহিলা এবং ৬৫ উর্ধ করদাতাদের ক্ষেত্রেও করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়ানো উচিত। চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের বারংবার দাবির পরও ১৫ শতাংশ ভ্যাট হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আমরা আবারও এ হার পুনর্বিবেচনা করে ১০ থেকে ১২ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভ্যাট অব্যাহতির সীমা ৩০ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে ৩৬ লাখ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে টার্নওভার করের সীমা ৮০ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে ১ কোটি ৫০ লাখ নির্ধারণ করা হলেও সেক্ষেত্রে করের হার ৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৪ শতাংশ করা হয়েছে। টার্নওভারের সুবিধা যাতে ব্যবসায়ীরা পায় সে লক্ষ্যে করহার আগের মতো ৩ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করছি। চিটাগাং চেম্বার সভাপতি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনী পণ্য চাল, ডাল, চিনি, মাছ, মাংস, শাক-সবজি, দুধ, লবণ ইত্যাদিসহ প্রায় ৫৪৯টি পণ্যের উপর ভ্যাট অব্যাহিত বহাল রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে ৯৩ ধরনের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, গণপরিবহন সেবা, জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উপর ভ্যাট অব্যাহতি, কৃষি, গবাদি পশু, মৎস্য চাষসহ সংশ্লিষ্ট ৪০৪টি ক্ষেত্রে এবং দাতব্য, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক সেবার ক্ষেত্রে ভ্যাট অব্যাহতি ইতিবাচক। তবে আবগারি শুল্ক ৫শ’ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮শ’ টাকা করায় সাধারণ মানুষ ব্যাংকে আমানত রাখার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হতে পারে। তাই আগের মত ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক ৫শ’ টাকা বহাল রাখার আবেদন জানাচ্ছি। পামওয়েল ও সয়াবিন উৎপাদন এবং এলপিজি সিলিন্ডারের ভ্যাট অব্যাহতি ৩০ জুন ২০১৯ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি প্রশংসার দাবিদার। তিনি বলেন, ভ্যাট আহরণের সুবিধার্থে ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার ব্যবহারের জন্য বলা হলেও এক্ষেত্রে এখনও যথাযথ অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। অন্যদিকে ভ্যাট কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা প্রণোদনা ও পুরস্কার নীতিমালার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেক সময় করদাতাদের উপর হয়রানির মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে যা প্রত্যক্ষ করের ে ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে। কৃষি খাতে প্রধান উপকরণ সার, বীজ, কীটনাশক ইত্যাদি আমদানিতে শুল্কহার শূন্য করা হয়েছে এবং চাল আমদানিতে সর্বোচ্চ শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে যাতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পায়। মৎস্য পোল্ট্রি ও ডেইরি খাতে খাদ্য সামগ্রী ও উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ও কর অব্যাহতি বহাল রাখার পাশাপাশি কতিপয় পণ্যে প্রণোদনা প্রস্তাব করা হয়েছে। কৃষি খাতে ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি স্থানীয়ভাবে তৈরির লক্ষ্যে উপকরণ আমদানিতে ১ শতাংশ আমদানি শুল্কসহ সুবিধা সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। চামড়া শিল্পে বাসবার ট্রাংকিং সিস্টেম এবং ইলেক্ট্রনিক প্যানেলকে মূলধনী যন্ত্রপাতির রেয়াতি সুবিধা দেয়া হয়েছে। একই ধরনের সুবিধা সব ধরনের শিল্পের ক্ষেত্রে দেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।
×