ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

রবীন্দ্রনাথের মাঝে বেঁচে আছি ॥ ওয়াহিদা রহমান

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২৮ মে ২০১৭

রবীন্দ্রনাথের মাঝে বেঁচে আছি ॥ ওয়াহিদা রহমান

রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী ওয়াহিদা রহমান। সঙ্গীত সাধনাই যার জীবনের ব্রত। নিরলস চেষ্টা ও অদম্য ইচ্ছাকে আকড়ে ধরে সঙ্গীত সাধনা করে চলেছেন নিরন্তর। রবীন্দ্রসঙ্গীতের অমিয় ধারায় নিজেকে শিক্ত করার পাশাপাশি টিভি ও বেতারে উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ করছেন দীর্ঘদিন। সম্প্রতি লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশ হয়েছে শিল্পীর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের একক এ্যালবাম ‘সকরুণ বেণু’। প্রকাশিত এ্যালবাম ও সঙ্গীত নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। প্রকাশিত নতুন এ্যালবাম সম্পর্কে বলুন। ওয়াহিদা রহমান : ‘সকরুণ বেণু’ আমার তৃতীয় একক এ্যালবাম। এতে রবীন্দ্রনাথের প্রেম, প্রকৃতি, পূজাসহ অন্যান্য পর্যায় মিলিয়ে মোট ৯টি গান রয়েছে। গানগুলো হচ্ছে- সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায়, যখন এসেছিলে অন্ধকারে, এসো এসো আমার ঘরে, আজ জ্যোৎস্না রাতে, পুব হাওয়াতে দেয় দোলা, যে ছিল আমার স্বপনচারিণী, চোখের আলোয় দেখেছিলেম, দিয়ে গেনু বসন্তের ও শুধু যাওয়া আসা। এ্যালবামের সঙ্গীতায়োজন করেছেন দূর্বাদল চট্টোপাধ্যায়। এ্যালবামটির কাজ যখন শুরু করি, তখন আমার মা খুবই অসুস্থ ছিলেন। পরবর্তীতে মা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এর প্রতিটি গানের সঙ্গে আমার মায়ের স্মৃতি জাড়িয়ে আছে। সে জন্য এ্যালবামটি আমার মাকে উৎসর্গ করেছি। আপনার পূর্বের এ্যালবাম সম্পর্কে বলুন। ওয়াহিদা রহমান : আমার প্রথম এ্যালবাম ‘অসীম আকাশ’ প্রকাশ হয় ২০১৪ সালে। এর সঙ্গীতায়োজন করেছিলেন শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাদী মহম্মদ। এরপর বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন আমার এ্যালবাম বের করা হয়ে ওঠেনি। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে আমার দ্বিতীয় এ্যালবাম ‘দুজনে কহিব মনের কথা’ প্রকাশ হয়। রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট কেন হলেন? ওয়াহিদা রহমান : আমার খুব ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল। সব ধরনেরই গান করতাম স্কুলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। প্রথম দিকে বাবার উৎসাহ না থাকলেও পরবর্তীতে আমার আগ্রহ দেখে তিনিই বেশি উৎসাহ দিতেন। মূলত সঙ্গীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার ও কাদেরি কিবরিয়ার গান শুনেই ধীরে ধীরে রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এই গানের মধ্যেই আছি। যাদের কাছে সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন ওয়াহিদা রহমান : আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময়ে প্রথম গানে তালিম নিয়েছি শিল্পী সুভনা দাশ ও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে। পরে মোহাম্মদপুরের সুরভী সঙ্গীত নিকেতনে পাঁচ বছরের সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করি। সেখানে শিল্পী ড. অরূপ রতন চৌধুরী ও কচি স্যারের কাছে গান শেখার সুযোগ পেয়েছি। পরে ১৯৯৮ সাল থেকে শিল্পী সাদী মহম্মদ স্যারের কাছে এখনও গান শিখছি। আমাদের দেশে রবীন্দ্রসঙ্গীতের বর্তমান প্রেক্ষাপট কেমন? ওয়াহিদা রহমান : অনেক ভাল। সবাই আগ্রহ নিয়ে গান শিখছে। অনেক প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে, যেটা আগে তেমন ছিল না। অনেকেই খুব ট্যালেন্ট এবং তারা মূল ধারার গানই করছে। তবে খুব কম সংখ্যক আছে যারা এই ধারা থেকে সরে যাচ্ছে। তাছাড়া বেশিভাগ শিল্পীরা খুব ভাল গান করছে এবং তারা অনেক শিক্ষিত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথের প্রয়োজন কতটা সময়োপযোগী? ওয়াহিদা রহমান : সব অবস্থায়ই রবীন্দ্রনাথের প্রয়োজন রয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্ম, দুরাবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথকে আরও সুগম করে তোলে। তার গান আমাদের শান্তি দিতে পারে। শুধু গান নয়, তার কবিতা ও বিভিন্ন লেখা সব সময়ই আমাদের পথ চলার সঙ্গী। রবীন্দ্রসঙ্গীতের পাশাপাশি অন্য কোন কাজ সম্পর্কে কিছু বলুন। ওয়াহিদা রহমান : পেশাগত জীবনে আমি একটি আধা সরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে আছি। এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারের আমি তালিকাভুক্ত উপস্থাপিকা। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে পরিকল্পনার কথা বলুন। ওয়াহিদা রহমান : নতুন তেমন কোন পরিকল্পনা নয়। রবীন্দ্রনাথের গানের মধ্যে বেঁচে আছি। আমি প্রাত্যহিক জীবনে সব কিছুই যেন রবীন্দ্রনাথের গানে খুঁজে পাই। তার গান যেন আমারই মনে কথা। শুদ্ধভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা করে যেতে চাই। আগামীতে নতুন আর একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতের এ্যালবামের পরিকল্পনা করছি। -গৌতম পাণ্ডে
×