ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পিছিয়ে থাকার দিন শেষ

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ৯ মে ২০১৭

পিছিয়ে থাকার দিন শেষ

পিছিয়ে থাকার সময় অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাইতো আমাদের তরুণ তরুণীরা আজ সাফল্যের পতাকা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। নাম উজ্জ্বল করছে আমাদের দেশের। আর এই এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে রয়েছে অনেক শ্রমের গল্প। ঠিক তেমনি একজন আমাদের আরজানা ইতি। ছোট বেলায় সবার স্বপ্ন থাকে আমি ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হব, কিন্তু আমাদের আরজানা ইতি স্বপ্ন ছিল মানুষের মতো মানুষ হবে সে। এমন মানুষ হতে চাই যে মানুষকে দরকার হয়। বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে। এসএসসি করেছেন গাজীপুরের সালনা নাছির উদ্দিন মেমোরিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে। এইচএসসি গাজীপুর গবর্নমেন্ট মহিলা কলেজ থেকে। শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি থেকে বিবিএ করেছেন। গদবাঁধা পড়া লেখার পাশাপাশি নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার ইচ্ছা এবং কঠিনকে জয় করার তাগিদে আয়ত্ত করেন চীনা ভাষা। আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় বাজেটের স্বপ্নের পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ করছেন অনেক চীনা নাগরিক তাদের সহায়তার জন্য কাজ করেছেন চীনা কোম্পানিতে চায়না-বাংলা দোভাষী হিসেবে। মেয়ে মানুষ তাই বেশি পড়া লেখা করা যাবে না। তাই পদে পদে বাধা বিপত্তি উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের সঙ্গে শুরু হয়ে গেল টিকে থাকার লড়াইও শুরু হয়ে গেল ইতির। পার্ট টাইম জব আর টিউশনের মাধ্যমে নিজের পড়ালেখাটা চালিয়ে গেলেন। স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে ইতিকে হাঁটতে হয়েছে মাইলের পর মাইল। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে চায়নাতে উচ্চ শিক্ষার উদ্দেশ্যে এমবিএ এবং টিচার্স ট্রেইনিং প্রোগ্রামসহ দুই ক্যাটাগরিতে স্কলারশীপের আবেদন করেন ইতি। দুটোতেই সুযোগ পেয়ে যান। একই বছরে অর্জন করেন দুটো স্কলারশীপ। অংশ নেন প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট টিচার্স ট্রেইনিং প্রোগ্রামে এবং সুযোগ পান চীনের প্রথম সারিতে থাকা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বিখ্যাত বেইজিং ল্যাংগুয়েজ এ্যান্ড কালচার ইউনিভার্সিটিতে। বর্তমানে চ্যাটিজ কালচারাল অর্গানাইজেশন নামের একটি চাইনিজ সংস্থায় বাংলাদেশের একজন কালচারাল এম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন আমাদের ইতি। চ্যাটিজ কালচারাল অর্গানাইজেশন হলো একটি উইন্ডো যেই উইন্ডোর মাধ্যমে সমগ্র চীন জানতে পারবে আমাদের দেশকে। এটি একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন যে সংগঠনের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতির আদান প্রদান করা হয় এবং একে অপরকে জানতে সহায়তা করা হয় বিশ্বের মাঝে তুলে ধরা হয় যার যার নিজের দেশকে। চ্যাটিজ এ বর্তমানে বাংলাদেশসহ নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, জাপান, বলিভিয়া, কোরিয়া, পর্তুগাল, তুর্কি, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ২৫টি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। যার ফলে প্রতিটি দেশ তার সাহিত্য কৃষ্টি ঐতিহ্য অন্য দেশের সামনে তুলে ধরতে পারছে।
×