ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বাইতুর রউফ মসজিদে শহিদুল আলমের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৯ মে ২০১৭

বাইতুর রউফ মসজিদে শহিদুল আলমের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে সারা বছরই বিভিন্ন গ্যালারিতে চলে আলোকচিত্র প্রদর্শনী। তবে প্রদর্শনালয়ে প্রদর্শনী হলেও কখনও কোন মসজিদের দেয়ালে দেখা যায়নি আলোকচিত্র কিংবা চিত্রকর্ম। সংস্কৃতি ভুবনে নতুনের বারতা দেয়া তেমনই এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সূচনা হলোÑ সোমবার। উত্তরার ফায়দাবাদ এলাকার বাইতুর রউফ মসজিদের দেয়ালজুড়ে দেখা মিলেছে দেশের বিখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের ক্যামেরাবন্দি ছবি। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি মসজিদের নামাজী কিংবা মুসল্লিরাও আগ্রহভরে দেখছে সেসব আলোকচিত্র। আর ‘অন্যকে আলিঙ্গন’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে আগা খান স্থাপত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত মসজিদটি যেন হয়ে ওঠে আরও বেশি নান্দনিক। প্রদর্শনীটির আয়োজন করেছে দৃক পিকচার লাইব্রেরি। ইসলাম ধর্ম যে আতঙ্ক নয় বরং উদারতা ও হৃদ্যতার প্রতীক সেই বার্তাটি সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই স্থপতি মেরিনা তাবাসসুমের নক্সায় নির্মিত মসজিদটিতে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার সকালে দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। এরপর সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উন্মুক্ত ছিল এ প্রদর্শনী। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে এ প্রদর্শনী বিশ্বের বিভিন্ন গ্যালারিতেও প্রদর্শিত হবে। প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম, দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রদর্শনীর আলোকচিত্রী শহিদুল আলম এবং বাইতুর রউফ মসজিদের ইমাম দ্বীন ইসলাম বক্তব্য রাখেন। দিনের নানা সময়ে প্রদর্শনীতে হাজির হয়েছিলেন বাংলাদেশে আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের আবাসিক কূটনীতিক প্রতিনিধি মুনির এম মুরালি, মাসিক অনন্যা ম্যাগাজিনের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, নারী অধিকার নেত্রী শিরীন হকসহ দেশী-বিদেশী অতিথিবৃন্দ। দ্বীন ইসলাম তার বক্তব্যে এ প্রদর্শনীর আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। শহিদুল আলম তার বক্তব্যে ইসলাম ধর্মকে একটি স্বাধীন ধর্ম হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং সমকালীন সময়ে এ ধর্মকে ভুল বোঝা হচ্ছে বলেও আশঙ্কা করেন। মোহাম্মদ ইব্রাহিম এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে বলেন, ইসলাম সবসময় সৌন্দর্যের পক্ষে এবং আর্ট একটি সৌন্দর্য। ইসলাম ধর্মের ইতিহাসেও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উল্লেখ আছে বলে তিনি বলেন। শহিদুল আলম বলেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এবং আজকের দিনের মসজিদ প্রাঙ্গণগুলোতে এ উদারতা এবং মানুষের কাছে পৌঁছানোর এমন মানুষ এবং মানসিকতার বড় অভাব বলে আমার মনে হয়। আমার এ প্রদর্শনী নারী-পুরুষ, অমুসলিম, তথা আবালবৃদ্ধবনিতা সকলের জন্য উন্মুক্ত। এ শর্তেই আমি এ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রদর্শনী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। উদীচীর আয়োজনে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদ্্যাপন গানে, আবৃত্তি ও শ্রদ্ধায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করল বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। সোমবার তোপখানা রোডের উদীচী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উদীচীর শিল্পীদের পরিবেশনায় ‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানটির সঙ্গে বিশ্বকবির প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ শীশ, সহ-সভাপতি অধ্যাপক এ এন রাশেদাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এরপর কাজী মোহাম্মদ শীশের সভাপতিত্বে শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেনÑ উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান। সাংস্কৃতিক আয়োজনে উদীচী কল্যাণপুর শাখা পরিবেশন করে ‘হে নূতন দেখা দিক আরবার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ’ এবং ‘নাই নাই ভয় হবে হবে জয়’ শীর্ষক দুটি গান। এরপর শিখা সেনগুপ্তা পরিবেশন করেন ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতার আবৃত্তি। মায়েশা সুলতানা ঊর্বি পরিবেশন করেন একক গান ‘খর বায়ু বয় বেগে চারদিক ছায় মেঘে’। সুমিত পাল পাঠ করেন একটি ছোটগল্প। আবৃত্তি করেন সুব্রত ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুরাইয়া পারভীন, শামীম আল মামুন। দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করে উদীচী মিরপুর এবং ধানম-ি শাখার শিল্পীরা। এছাড়াও সঙ্গীত পরিবেশন করেন ভারতের রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী বীণা ভট্টাচার্য্য এবং আবৃত্তি পরিবেশন করেন ভারতের বাচিক শিল্পী অরবিন্দ ঘোষ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উদীচী ঢাকা মহানগর সংসদের সম্পাদকম-লীর সদস্য বেনজীর আহমেদ লিয়া। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্না, বিদ্রোহ, বিক্ষোভসহ যত ধরনের অনুভূতি থাকতে পারে তার সবগুলো ক্ষেত্রেই অসাধারণ নৈপুণ্যে অবাধে বিচরণ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতে যে কয়েকজন মানুষকে মহীরুহ হিসেবে বর্ণনা করা যায় তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম হিসেবে গণ্য হবেন। অসীম প্রতিভার অধিকারী এ মহামানব বাংলা সাহিত্যকে সম্পূর্ণ নতুন একটি মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্বের দাবিদার।
×