ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তবে সামরিক অভিযানও বিবেচনাধীন ॥ সাক্ষাতকারে ট্রাম্প

শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই ॥ কোরীয় সঙ্কট

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই ॥ কোরীয় সঙ্কট

নিজ কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাতকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের চলমান সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চান তিনি। এজন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর নতুন করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছেন তিনি। তবে সামরিক অভিযানের বিষয়টিও তার বিবেচনায় রয়েছে বলে জানান ট্রাম্প। এক সংবাদ সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাতকারে ট্রাম্প আরও বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাতের মাধ্যমেও আমরা সমস্যার ইতি টানতে পারি। যদিও আমরা কূটনৈতিকভাবেই সমস্যার সমাধান করতে আগ্রহী। কিন্তু সেটা খুবই কঠিন। উত্তর কোরিয়া তার জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা বলেও মনে করেন ট্রাম্প। এদিকে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সতর্ক করে বলেন, সেখানে বর্তমানে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তাতে কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে রাশিয়ার এক কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠকে ওয়াং এ কথা বলেন বলে এক বিবৃতিতে জানায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশ্বের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী মিত্র দেশ চীন। কিন্তু গত কয়েক মাসে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চীনের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তর কোরিয়াকে নিয়ন্ত্রণে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের চেষ্টার প্রশংসা করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি নিরন্তর চেষ্টা করছেন বলেই আমার বিশ্বাস। তিনি নিশ্চিতভাবেই অশান্তি ও মৃত্যু দেখতে চান না। তিনি একজন ভাল মানুষ।’ চীন তাদের প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়াকে আর কখনও পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা না করার আহ্বান জানিয়েছে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। না হলে একতরফা নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়েও চীন সতর্ক করেছে বলে জানান তিনি। তবে কী ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে সে বিষয়ে টিলারসন কিছু বলেননি। যদিও চীন ফেব্রুয়ারিতেই উত্তর কোরিয়া থেকে কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রফতানিপণ্য কয়লা। উত্তর কোরিয়া উস্কানিমূলক আচরণ অব্যাহত রাখলে তাদের তেলের চালানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে বলে এ মাসে চীনা গণমাধ্যমগুলোতে খবর প্রকাশ পায়। দীর্ঘদিন ধরেই উত্তর কোরিয়ার পরমাণু প্রকল্প নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে চীন। যদিও উত্তর কোরিয়া বারবারই যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করার হুমকি দিয়ে আসছে। ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার যে কোন হামলা প্রতিরোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। শক্তি প্রদর্শনের জন্য তিনি কোরীয় উপদ্বীপে একটি নৌ-স্ট্রাইক গ্রুপ পাঠিয়েছেন। ওই গ্রুপে একটি বিমানবাহী রণতরীও রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২০ সালের পর যে কোন সময় যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জন করে ফেলতে পারে উত্তর কোরিয়া। কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়ে এমন যে কোন আচরণ থেকে সব পক্ষকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। যে ট্রাম্প এক সময় বিভিন্ন কারণে চীনের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করতেন, সেই ট্রাম্প ফ্লোরিডার গলফ ক্লাব বীচে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর একেবারে বদলে গেলেন। তিনি এখন প্রেসিডেন্ট শিকে ‘অত্যন্ত ভাল মানুষ যিনি তার দেশকে ভালবাসেন’ বলে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। উত্তর কোরিয়া সঙ্কট নিয়েও ট্রাম্প চীনের সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়ে বেশ আস্থাশীল। চীনা প্রেসিডেন্ট উত্তর কোরিয়া প্রশ্নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম এই মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করে ট্রাম্প বলেন, নিশ্চয়ই তিনি এ অঞ্চলে হানাহানি ও রক্তপাত হোক তা দেখতে চাইবেন না। -ইয়াহু নিউজ
×