ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নতুনদের কাজের ক্ষেত্রে প্রেরণা জরুরী ॥ হাসান রেজাউল

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৬ এপ্রিল ২০১৭

নতুনদের কাজের ক্ষেত্রে প্রেরণা জরুরী ॥ হাসান রেজাউল

হাসান রেজাউল। এই সময়ের তরুণ মঞ্চকর্মী। নাট্যাভিনেতা ও নাট্য নির্দেশক। টিভি নাটকেও মাঝে মাঝে অভিনয় করেন। সম্প্রতি এনটিভিতে প্রচার হলো তার নির্দেশিত প্রথম নাটক ‘চুমকি’। অতি সম্প্রতি তার নির্দেশনায় ‘জলপুত্র’ নামে একটি নাটক মঞ্চে এনেছে বেঙ্গল থিয়েটার। নাটকটিও দর্শক নন্দিত হয়েছে। তরুণ এই সাংস্কৃতিক কর্মীর সাম্প্রতিক কর্মকা- নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। সংস্কৃতি অঙ্গনে কাজের শুরু ও প্রেরণা কার কাছে থেকে? হাসান রেজাউল : মঞ্চে ১৬ বছর হলো। ২০০১ সালে নরসিংদীতে নাট্যশীলনের হয়ে কাজ শুরু করি। সেখানে নাজমুল আলম সোহাগ ও রনি ভাইয়ের কাছে নাটক বিষয়ে অভিজ্ঞনা নেই। মূল প্রেরণা আমার বাবা-মা আর নাট্যনির্দেশক জাহিদ রিপন ভাই। এছাড়া ২০১২ সালে নিমকো থেকে ক্যামেরা ও লাইট ডিজাইন এবং ২০১৩ সালে টিভি নাটক নির্মাণে প্রশিক্ষণ নেই। নির্মাতা আবু রায়হান জুয়েলের প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে প্রায় ৩ বছর কাজ করি। মঞ্চ ও টিভি মিলে কতগুলো নাটকে কাজ করেছেন? হাসান রেজাউল : মঞ্চে প্রায় ১৫-১৬টি নাটকে কাজ করেছি। তার মধ্যে স্বপ্নদলের ‘ত্রিংশ শতাব্দী’, ‘হরগজ’, মূকানাট্য ‘জাদুর প্রদীপ’, ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘পদ্মগোখরা’ ও এবং বেঙ্গল থিয়েটারে ‘জলপুত্র’ নাটকের নির্দেশনার পাশাপাশি অভিনয়ও করেছি। তবে ৪-৫টি টিভি নাটকে কাজ করেছি। নাটক-বিজ্ঞাপন ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের প্রতি আমার ঝোঁক বেশি। প্রায় ২০টির মতো টিভি নাটক, ৮-১০টি বিজ্ঞাপন ও এনটিভিতে ৩টি রান্নার অনুষ্ঠান এবং ৩টা প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের প্রধান সহকারী হিসেবে কাজ করেছি। বর্তমানে মঞ্চনাটক ও টিভি নাটকের অবস্থান কোন পর্যায়ে? হাসান রেজাউল : খারাপ না। আগে দুই মাধ্যমেই অনেক ভাল কাজ হয়েছে বা এখনও হচ্ছে। কিছু মানুষ নাটক না দেখেই বিরূপ মন্তব্য করে, এটা উচিত নয়। ভাল-মন্দ যাই হোক নতুন কাজ তথা নতুনদের কাজের ক্ষেত্রে প্রেরণা জরুরী। মেধা তৈরি হয় দেখে এবং অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে। মঞ্চনাটক এবং টিভি নাটকে দর্শক সঙ্কট বিষয়ে আপনার ভাবনা কী? হাসান রেজাউল : এক কথায় বলতে গেলে পেশাদারিত্বের অভাব। আমার মতে, আচারণে কর্পোরেট হলে শিল্প হবে না। ব্যবসা নয়, শিল্পকে লালন করতে হয় যাপিত জীবনের মধ্যে। অভিনয় শিল্পীদের পর্যাপ্ত মহড়া করতে হবে। মৌলিক পা-ুলিপি তৈরি করতে হবে। ভাল প্রযোজনার দর্শক আছে। সব কিছু ব্যক্তিকেন্দ্রিক হচ্ছে। সামষ্টিকভাবে ভাবনার জগত প্রসারিত করতে হবে। কারণ ব্যক্তিকে দেখার জন্য দর্শক আসে না, দর্শক আসে দলগত ভাল পারফরমেন্স দেখতে। প্রযোজনাগুলো ঠিক সে বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্মিত হওয়া উচিত। আর জানজটের শহরে আরও বেশি বেশি মঞ্চ নির্মাণ জরুরী। নাট্য আন্দোলন বা নাট্যচর্চা রাজধানী কেন্দ্রিকতার বাইরে নিতে হবে। জীবনের প্রথম টেলিভিশন নাটক প্রচারের পর কেমন সাড়া পেলেন? হাসান রেজাউল : খুবই ভাল সাড়া পেয়েছি। নাটকের শূটিং করতে গিয়ে সবাই অনেক পরিশ্রম করেছেন। সকাল থেকে ট্রেনে শূটিং করতে করতে গফরগাঁও পর্যন্ত গিয়েছি। তারপর এইদিনেই আবার ভবানীপুর বনে প্রচন্ড শীতের রাতে ১ টা পর্যন্ত শূটিং করেছি। সবার অক্লান্ত শ্রমেই সেলিম স্যারের ‘চুমকি’ নাটকটি দর্শকদের সামনে আনতে পেরেছি। নাটক দেখে অনেকে ফোনে, ফেইসবুকে ম্যাসেজ, কমেন্ট দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে। যা আমার জন্য প্রথম হিসেবে অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছ। সবার কাছে কৃতজ্ঞ। সামনের কাজ গুলি আরও ভাল করতে চাই। মঞ্চে নতুন নাটকে কোন খবর? হাসান রেজাউল : আপাতত আমাদের দলে অর্থাৎ বেঙ্গল থিয়েটারে একেবারে নতুন সদস্যদের নিয়ে এনামুল হক শাহিনের রচনায় একটি পথনাটক ‘পাঠশালা’-এর কাজ করছি। খুব শীঘ্রই আরও একটি নতুন মঞ্চনাটকের কাজ শুরু করবো। পা-ুলিপি তৈরির কাজ চলছে । আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? হাসান রেজাউল : মঞ্চনাটক ‘জলপুত্র’ এবং টিভি নাটক ‘চুমকি’ নির্মাণ করেছি। সামনে দুই ঈদে কিছু কাজ করব আর মঞ্চের জন্য এ বছর আরওএকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক আনব। তবে নাট্যনির্দেশক বা নির্মাতা হিসেবেই থাকতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতা চাই। -সাজু আহমেদ
×