ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাপক প্রস্তুতি ফ্যাশন হাউসে

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৭

ব্যাপক প্রস্তুতি ফ্যাশন হাউসে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলা নববর্ষ ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে রাজধানীর ফ্যাশন হাউসগুলো। অত্যাধুনিক শপিংমল থেকে ফুটপাথ সবই সেজেছে বৈশাখী লাল-সাদা রংয়ে। ডিজাইন ও মানেও এনেছে বৈচিত্র্যতা। বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে বৈশাখের জন্য বেশি বিনিয়োগ করেছেন এবার। কেরানীগঞ্জে জমে উঠেছে পোশাক বেচাকেনা। অনলাইনেও ক্রেতা সমাগম পাঁচগুণ বেড়ে গেছে, যার অর্ধেকের বেশি গ্রামাঞ্চলের। পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে কেরানীগঞ্জে জমে উঠেছে পোশাক বেচাকেনা। ব্যবসায়ীরা জানান, তৈরি পোশাক বাজারজাতকরণের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ। রকমারি নক্সার পোশাক কিনতে মার্কেটগুলোতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। এদিকে বুড়িগঙ্গা পাড় হওয়ার সময় ইজারাদাররা পাইকারদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করায় পোশাকের দাম বেড়ে যাচ্ছে। এতে ক্রেতা সংখ্যা কিছুটা কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। বাঙালী জীবনের সবটুকু রং নিয়ে রঙিন এক ক্যানভাস পহেলা বৈশাখ। গেল এক দশকে যা উদযাপনের ব্যাপ্তি বেড়েছে বহুগুণে। এখন আর বৈশাখ শুধু হালখাতা খুলে পুরনো হিসাব মেলানোরই উপলক্ষ নয়; সময় বিবর্তনে যা পেয়েছে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবচেয়ে বড় উৎসবেরই রং। বৈশাখ ঘিরে তাই ব্যবসা-বাণিজ্যটাও বাড়ছে প্রতিবছরই। শেষ মুহূর্তে তাই নতুন সাজে ফ্যাশন হাউসগুলো। পাওয়া যাচ্ছে সব বয়সী মানুষের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদার পোশাক। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে তা দেখছেন পছন্দ হলে কিনেও ফেলছেন। সেই কেনাকাটায় ছোটদের আগ্রহও কম নয়। প্রতিবছরই বৈশাখ সামনে রেখে ব্যস্ততা বাড়ে বিক্রেতাদের। এবারও ছবিটা অন্যরকম নয়। তারা জানালেন, বিনিয়োগও হয়েছে গেল বছরের চেয়ে বেশি। সামনের দিনগুলোতে বিক্রি আরও বাড়বে এমন প্রত্যাশা বিক্রেতাদের। পহেলা বৈশাখে প্রাণের উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় বাঙালী জাতি। উৎসবের রং গায়ে মাখতে লাল-সাদা পোশাকের খোঁজে ফ্যাশন হাউসগুলোতে বাড়ছে ক্রেতার আনাগোনা। আবার অনেকেই কেনাকাটা সারছেন ঘরে বসেই। অনলাইন শপগুলো বলছে, অন্য সময়ের তুলনায় ক্রেতা সমাগম পাঁচগুণ বেড়ে যায় উৎসবের আগে, যার অর্ধেকের বেশি গ্রামাঞ্চলের। উৎসবের রং যখন মনে, তখন তার খানিকটা তো ফুটে উঠবেই দেহের আচ্ছাদনে। তাই বৈশাখী কেনাকাটায় ক্রেতার চাহিদা মাথায় রেখে প্রস্তুত ফ্যাশন হাউসগুলো। যেখানে সবারই চোখ কিছুটা ভিন্নতার খোঁজে। তবে ব্যস্ত সময়ের হাত ধরে বদলে যাচ্ছে খোঁজাখুঁজির ধরন। তার সাক্ষী হাতের মুঠোয় আসা স্মার্ট ফোন, তথ্য-প্রযুক্তি। অনেকেই ইচ্ছে মতো সময়ে তাদের কেনাকাটা সারছেন অনলাইনে, যেখানে দোকান খোলা থাকে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টা। অনলাইন কেনাকাটায় প্রতিবছরই প্রায় ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে ক্রেতা। এ পরিসংখ্যান ই-কমার্স ব্যবসার জন্য সুখকর। তবে ভোক্তার আস্থা অর্জনে চাহিদা মোতাবেক পণ্য সরবরাহের বিকল্প নেই বলে মনে করেন অনলাইন শপ কর্তৃপক্ষ। দারাজ ডটকমের সিএফও সৈয়দ মোস্তাহিদুল হক বলেন, ‘পণ্যের যে ধরনের বর্ণনা দেখবেন সেই ধরনের পণ্যই তারা পাবেন। এই বিশ্বাসটা তৈরি করাটাই প্রথম চ্যালেঞ্জ। আপনি এটি ধরে দেখবেন যদি বর্ণনার সঙ্গে না মেলে তাহলে সেটি ফেরত দিয়ে দিতে পারবেন।’ দারাজ ডটকমের পাবলিক রিলেশন্স ম্যানেজার সায়ন্তনী ত্বিষা বলেন, ‘পঞ্চাশ শতাংশেরও বেশি অর্ডার আসে গ্রামাঞ্চল থেকে। মানুষের হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন। তারা অনলাইনেই পণ্যগুলো দেখতে পারছেন, তাদের চাহিদা আছে কিন্তু তারা কিনতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে ই-কমার্স বড় একটা অবদান রাখছে।’ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঢাকার বাইরে পণ্য সরবরাহে কুরিয়ার সার্ভিসের মতো তৃতীয় পক্ষকে আরও উদ্যোগী হওয়ার কথা বলছেন তারা। ঘনবসতির বাংলাদেশে গ্রামীণ পর্যায়ে অবকাঠামো উন্নয়ন আর ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ানো হলে আরও দ্রুত বাড়বে ই-কমার্স ব্যবসার পরিসর, এমনটাই দাবি উদ্যোক্তাদের।
×