ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ এপ্রিল ২০১৭

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

মোরসালিন মিজান ॥ সুন্দর একটি উৎসবের অপেক্ষা। আর মাত্র কদিন পর পহেলা বৈশাখ। প্রতিবারের মতো এবারও বিপুল আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ করে নেবে বাঙালী। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলির শহর ঢাকায় তো সাজ সাজ রব। পহেলা বৈশাখের বর্ণিল বর্ণাঢ্য রূপটি ক্রমশ সামনে আসছে। ছায়ানট ব্যস্ত। ব্যস্ত চারুকলা। শিল্পকলা একাডেমিতেও থাকছে নানা আয়োজন। বৃহস্পতিবার একাডেমিতে গিয়ে দেখা গেল চলছে বিশেষ কর্মশালা। বর্ষবরণের উৎসব অনুষ্ঠান সামনে রেখে তৈরি করা হচ্ছে মুখোশ ও ঘুড়ি। গত ১ এপ্রিল জাতীয় চিত্রশালার ভাস্কর্য গ্যালারিতে কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। সপ্তাহব্যাপী কর্মশালায় দেশের বৃহত্তর ২১টি জেলা থেকে ২১ প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিয়েছেন। একই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন নাট্যদল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ৩২ কর্মী। সব মিলিয়ে ৫৩ জন। সবাই মনের আনন্দে কাজ করছিলেন। ঘুড়ি ও মুখোশ নির্মাণ কর্মশালার প্রশিক্ষক শিল্পী ইমরান হোসেন পিপলু ও জোয়ারদার মাহমুদ পল্টু। সহকারী প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছিলেন মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন নিলয়, মোঃ শাহাবুদ্দীন শেখ ও জয়দেব বিশ্বাস। কর্মশালায় তৈরি রঙিন মুখোশ সাজিয়ে রাখা হয়েছিল একটি লম্বা টেবিলের ওপর। বিভিন্ন আকার-আকৃতির মুখোশ। কাগজ কেটে বানানো মুখোশ রং দিয়ে সুন্দর এঁকে নেয়া হয়েছে। এইমাত্র শেখা। এখই বানানো। অথচ বোঝার উপায় নেই! একই গ্যালারিতে চলছে ঘুড়ি তৈরির কাজ। আয়োজকরা জানান, আজ শুক্রবার শেষ হবে কর্মশালা। বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও চলছে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। মার্কেট শপিংমলে সব বয়সী মানুষের ভিড়। সবারই চাই নতুন পোশাক। দেশীয় পোশাকে ষোলোআনা বাঙালী সাজার প্রস্তুতি চলছে। বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে গিয়ে দেখা গেল, বিদেশী ব্র্যা-ের শোরুমগুলো শূন্য পড়ে আছে। ওগুলো নিয়ে কারও তেমন আগ্রহ নেই। একই সময় দেশীয় ঐতিহ্যের পোশাক কিনতে হুড়োহুড়ি অবস্থা। দেশী দশ চত্বরে উপচেপড়া ভিড়। সবকটি শোরুমে বৈশাখের পোশাক। পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রিপিস, ফতুয়া, কুর্তি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বিক্রি এত যে, ক্রেতাদের কয়েকজন জানালেন, পছন্দের অনেক ডিজাইন তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। বিক্রেতারা জানালেন, এক্সক্লুসিভ পোশাক একটু আগেভাগেই বিক্রি হয়ে যায়। এ জন্য একটু আগেভাগে কিনে ফেলারই পরামর্শ দেন তারা। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) আন্তর্জাতিক সম্মেলন। গত শনিবার পাঁচ দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বের ১৩২টি দেশ এতে অংশ নেয়। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘রিড্রেসিং ইনইকুয়ালিটিজ : ডেলিভারিং অন ডিগনিটি এ্যান্ড ওয়েল বিং অপর অল’। বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নোবেল বিজয়ী, শিশু মানবাধিকার কর্মী কৈশাল সত্যার্থী। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এই প্রতিপাদ্যের ওপর আলোচনা করেন। এর বাইরে আইপিইউর বিভিন্ন কমিটিতে বেশ কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ হচ্ছে সিটিং সার্ভিস। গেটলক স্পেশাল সার্ভিস ইত্যাদি নাম দিয়ে আর বেশি ভাড়া আদায় করা যাবে না। বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টানাতে হবে সকল বাসে। সেই সঙ্গে রুট পারমিটের শর্ত অনুযায়ী বাস পরিচালনার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবহন সমিতির নেতারা। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রোড পারমিটে সিটিং সার্ভিস বলে কোন শব্দ নেই। দেখা গেছে, অফিস আওয়ারে হাজার হাজার যাত্রী রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে। অথচ গাড়ি ‘সিটিং’ বলে তাদের না নিয়ে চলে যাচ্ছে। যাত্রীরা যেতে পারছেন না। সিটিংয়ের নামে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার সময় পুরো পথের ভাড়া নেয়া হচ্ছে। আবার রাস্তা থেকে যাত্রীও তোলা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই অনিয়ম বন্ধ হওয়া জরুরী বলেও মন্তব্য করেন পরিবহন নেতা। পরিবহন মালিক প্রতিনিধিদের সভায় যাত্রীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়, প্রতিটি গাড়িতে ভাড়ার তালিকা টাঙানো এবং গাড়ির ছাদ থেকে ক্যারিয়ার, সাইড এ্যাঙ্গেল ও অতিরিক্ত সিট খুলে ফেলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা চেষ্টা করছি পরিবহন সেক্টরকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসতে। এজন্য সব চেষ্টাই করা হচ্ছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবহন চালানো যাবে না। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত পরিবহন ভাড়া মেনে চলতে মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কেউ যাত্রীদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের পুকুরে ডুবে মারা গেছে আরও এক শিক্ষার্থী। বায়েজিদ বোস্তামি নামের এই শিক্ষার্থী বুধবার বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলে হলে ফেরার সময় পুকুরে নামে। সাঁতার কাটার এক পর্যায়ে পুকুরের মাঝখানে গিয়ে সে তলিয়ে যায়। পরে ফায়ার সাভিসের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গতবছর ১৩ আগস্ট মোহাম্মদ আলী নামের এক স্কুলছাত্র এই পুকুরে গোসল করতে নেমে মারা যায়। এর আগে একই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ ভেসে ওঠে পুকুরটিতে। ২০১৫ সালের ১৩ মে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হায়দারী মেহফুজ উল্লাহ রাহী মারা যায়।
×