ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র ঠিকমতো চলতে দিলে জঙ্গীবাদ থাকবে না ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৭:৫৬, ২৭ মার্চ ২০১৭

গণতন্ত্র ঠিকমতো চলতে দিলে জঙ্গীবাদ থাকবে না ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান স্বাধীনতা দিবসে রবিবার সকালে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী শেরেবাংলানগরে জিয়ার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। আর বিকেলে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করে দলটি। র‌্যালিটি নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড়, কাকরাইল মোড় ও শান্তিনগর হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালি শুরুর আগে বিএনপি মহাসচিব উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, গণতন্ত্রহীনতার কারণেই দেশে জঙ্গীবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রকে ঠিকমতো চলতে দিলে জঙ্গীবাদ থাকবে না। মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গীবাদ। সমগ্র দেশের মানুষ আজ এই জঙ্গীবাদ নিয়ে ভীত-সন্ত্রস্ত। সুতরাং এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। জঙ্গী দমনে সরকারকে এখনই সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। দেশে সৃষ্টি করতে হবে এমন এক অবস্থা, যেখানে সব দলের অংশ গ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব হয়। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করতে সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। ফখরুল বলেন, সরকার যদি জঙ্গীবাদকে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে, তাহলে জঙ্গীবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। এমনিতেই জঙ্গীবাদ নির্মূল হয়ে যাবে। তাই আমরা সরকারকে অনুরোধ করব জঙ্গী দমনের সঠিক পদক্ষেপ নিন। তিনি বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, গণতন্ত্রহীনতার কারণেই সেই স্বপ্ন আজ ম্লান হয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের জেগে উঠতে হবে, সংগ্রাম করতে হবে, লড়াই করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এ সময় বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জঙ্গীবাদ আজ বড় একটা ইস্যু। এই জঙ্গীবাদ রুখতে হলে গণতন্ত্রকে সঠিক পথে হাঁটতে দিতে হবে। গণতন্ত্রহীন সমাজে নানা অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। মির্জা আব্বাস বলেন, সরকার আজ জঙ্গী জঙ্গী করছেন। জঙ্গী নিয়ে আপনাদের পেরেশানির শেষ নেই। আমাদের মিছিল মিটিং করতে দিন। সভা সমাবেশের ওপর থেকে অলিখিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন, জঙ্গীবাদ এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিকেল তিনটায় দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয় র‌্যালি। বর্ণাঢ্য এ র‌্যালিতে অংশ নিয়ে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও ধানের শীষের ছবি সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা বাদ্যের তালে তালে বিভিন্ন সেøাগান নিয়ে এগিয়ে যায়। কেউ কেউ ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে ব্যান্ড পার্টিসহ ঘোড়ার গাড়ি, টম টম, খোলা ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে চড়ে নেচে-গেয়ে র‌্যালিতে অংশ নেয়। র‌্যালির সামনে ও পেছনে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ। এর আগে র‌্যালিতে অংশ নিতে দুপুর থেকেই দলে দলে বিএনপি নেতাকর্মীরা দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে জড়ো হয়। এদিকে বিএনপির র‌্যালির কারণে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর, কাকারাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক ও রাজারবাগ এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। র‌্যালিতে অংশ নেয়া অন্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল আউয়াল মিন্টু, নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভী, সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। সকাল সাড়ে নয়টায় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখান থেকে রাজধানীতে ফিরে বেলা এগারোটায় তারা শেরেবাংলানগরে জিয়ার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম, ২৫ মার্চ স্বীকৃত গণহত্যা দিবস। আমরা প্রতিবছর গণহত্যা দিবস পালন করে আসছি। আওয়ামী লীগ কী এতদিন পর উপলব্ধি করল যে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস?
×