ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

রুশ সরকারের সঙ্গে ওয়াইপিজির চুক্তি

সিরিয়ায় ঘাঁটি করছে রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২২ মার্চ ২০১৭

সিরিয়ায় ঘাঁটি করছে রাশিয়া

সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি করছে রাশিয়া। কুর্দি মিলিশিয়া গ্রুপ ওয়াইপিজি নিয়ন্ত্রিত দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি স্থাপন করা হবে। জঙ্গী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইরত ওয়াইপিজিকে সহায়তা করার জন্য মস্কো এটি করছে বলে মিলিশিয়া গ্রুপটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। খবর ডন ও এএফপির। সিরিয়ার ওয়াইপিজির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আফরিনের জান্দারিস এলাকায় সাঁজোয়া বহর ও সরঞ্জামাদি নিয়ে রুশ সামরিক সৈন্যরা পৌঁছাতে শুরু করেছে বলে গ্রুপটির মুখপাত্র রেদুর জেলিল জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, এ বিষয়ে রবিবার রুশ সরকারের সঙ্গে তাদের একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। সঙ্গত কারণে রাশিয়ার এ পদক্ষেপ সিরিয়ার প্রতিবেশী তুরস্ককে ক্ষুব্ধ করবে। তুরস্ক ওয়াইপিজিকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বর্ধিত অংশ বিবেচিত হয়ে থাকে। পিকেকে তুরস্কে একটি বিদ্রোহী গ্রুপ হিসেবে পরিচিত। জেলিল আরও জানিয়েছেন, রুশ সরকারের সঙ্গে তাদের এ ধরনের লিখিত সামরিক চুক্তি এটিই প্রথম। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি দিয়ে ওয়াইপিজি মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষিত করে তোলা এ চুক্তির লক্ষ্য। তবে ওয়াইপিজি মিলিশিয়ারা যেন শক্তিশালী হয়ে উঠতে না পারে সে জন্য তুর্কি বাহিনী প্রায়ই সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে অভিযান চালিয়ে থাকে। সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আফরিন পকেট ওয়াইপিজি নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরিয়ায় সক্রিয় জঙ্গী গ্রুপ ইসলামিক স্টেট বা আইএসের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের শরিকও ওয়াইপিজি। মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সামরিক সহায়তায় সম্প্রতি রাকাসহ সিরিয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটিগুলো আইএসের হাতছাড়া হয়েছে। এসব অভিযানে ওয়াইপিজি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীর ভূমিকা পালন করেছে। জেলিল জানিয়েছেন, সোমবার থেকেই সিরিয়ায় রুশ সামরিক চুক্তি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত সেখানে কত সংখ্যক রুশ সৈন্য এসে পৌঁছেছে সেটি তিনি জানাননি। তুর্কি সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত জান্দারিস এলাকায় ইতোপূর্বে সংঘাতকালে তুরস্ক থেকে গোলা এসে পড়েছে। গত বছরের শেষদিকে ওয়াইপিজির সৈন্য সংখ্যা ৬০ হাজার ছিল। এদের মধ্যে প্রচুর নারী সৈন্য রয়েছে। চলতি বছর তারা ১০টি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠন করেছে। প্রতিটি ব্যাটালিয়নে ৩০০ মতো সৈন্য রয়েছে। এদিকে দামেস্কে রবিবার সরকারী বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর সোমবার সংঘর্ষ থামার খবর পাওয়া গেছে। সিরিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করছে, তারা বিদ্রোহীদের হটিয়ে দিয়েছে। বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে যুদ্ধবিমান থেকে ৩০টিরও বেশি বিমান হামলা চলে। বিদ্রোহীদের এসব হামলা পুরোপুরি সফল না হলেও আসাদ সরকারের জন্য একে একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলছেন, ফাইলাক আররহমান ও ফাতেহ আশশাম নামে আরও দুটি জিহাদী গ্রুপ এতে অংশ নেয়। গাউতা নামে পরিচিত দামেস্কের পূর্বাঞ্চলীয় বিদ্রোহী ঘাঁটি লক্ষ্য করে সরকারী বিমানবাহিনীর গোলাবর্ষণে ১৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। সিরিয়ার রাজধানীর অল্প কয়েকটি এলাকা এখনও বিদ্রোহীদের দখলে আছে। এর মধ্যে জোবার রাজধানীর কেন্দ্রস্থলের সবচেয়ে নিকটবর্তী এলাকা। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত এই এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ দুপক্ষের মধ্যে ভাগ হয়ে আছে। এর একদিকে আছে বিদ্রোহী ও কট্টরপন্থী গোষ্ঠীগুলো এবং অন্যদিকে সরকারী বাহিনী। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করে চলছে। অবজারভেটরি জানিয়েছে, রাজধানীর বারজেহ, তিশারিন ও কাবুনে সরকারী বাহিনীর আক্রমণের চাপ কমাতেই জোবার এলাকা দিয়ে রাজধানীর কেন্দ্রস্থলমুখী আক্রমণের উদ্যোগ নেয় বিদ্রোহীরা। গত বুধবার দামেস্কের কেন্দ্রস্থলে মূল আদালতের চত্বরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হন। এরপর রাজধানীর পশ্চিমাংশের রাববেহ এলাকায় আরেকটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২০ জনেরও বেশি আহত হন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া গণঅভ্যুত্থানের ষষ্ঠবার্ষিকীতে এসব হামলা চালানো হয়।
×